স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন আপাদমস্তক একজন বাঙালী। বঙ্গবন্ধুর বৈশিষ্ট্যের প্রধানতম দিক হচ্ছে, তার কথা-বার্তায়, চাল-চলনে, পোশাক-পরিচ্ছেদ এবং বাঙালীর কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য সবকিছুতেই বাঙালিয়ানা। তাই সকলে মিলে বাঙালিয়ানাকে আবার উজ্জীবিত করার আহ্বান জানিয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপি। মঙ্গলবার বিকেলে বাংলাদেশ রোইং ফেডারেশেনের ব্যবস্থাপনায় রাজধানীর হাতিরঝিল লেকে আয়োজিত মহান স্বাধীনতা দিবস নৌকা বাইচ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ আহ্বান জানান। মহান স্বাধীনতা দিবস নৌকা বাইচে ১১ পুরুষ দল ও ৪ মহিলা দল হাতিরঝিল লেকে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। উদ্বোধনকালে বাংলাদেশ রোইং ফেডারেশনের সভাপতি এ্যাডভোকেট মোল্লা মোঃ আবু কাওছার স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। গণপূর্তমন্ত্রী দেশবাসীকে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, আমরা চাই নির্ভেজাল বাঙালিত্ব। আমাদের হাজার বছরের যে ঐতিহ্য, সেই ঐতিহ্যের বাঙালী সংস্কৃতি, চাল-চলন, পোশাক-পরিচ্ছেদ, আচার-অনুষ্ঠান সবকিছুকে আমরা ধরে রাখতে চাই। মন্ত্রী বলেন, বাঙালীর যে নিজস্ব সংস্কৃতি তার অন্যতম হলো নৌকা বাইচ। গ্রামে, গঞ্জে, প্রত্যন্ত অঞ্চলে নৌকা বাইচ বাঙালীর অত্যন্ত প্রিয় একটি পর্ব। নৌকা বাইচ বাঙালীদের আলাদা আনন্দ দেয় এবং বাঙালীর স্বতন্ত্র পরিচয় বহন করে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে এই নৌকা বাইচ বিলুপ্ত হবার পথে। আমি আনন্দিত যে, বাংলাদেশ রোইং ফেডারেশন নৌকা বাইচের ধারাকে ধরে রেখেছে এবং আমাদের ছেলেমেয়েদের প্রশিক্ষণ দিয়ে দেশে ও দেশের বাইরে এই জাতীয় কর্মকা-ে পাঠাচ্ছে। এজন্য মন্ত্রী বাংলাদেশ রোইং ফেডারেশনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে সরকারের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানান।
মন্ত্রী আরও বলেন, আমরা চাই বাঙালীর নিজস্ব বৈশিষ্ট্য টিকে থাকুক। আমরা চাই পাশ্চাত্য সংস্কৃতি এসে আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে যেন ধ্বংস করে ফেলতে না পারে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা চান বাঙালীর বাঙালিত্ব টিকে থাকতে হবে। এরপর আমরা অন্য সংস্কৃতি যা কিছু ভাল সেটা অমরা গ্রহণ করব। কিন্তু আমাদের যাত্রাগান, ভাটিয়ালি, জারি গান, কবি গান, নৌকা বাইচ, হা-ডু-ডু, গোল্লাছুট-এ সংস্কৃতিগুলো রক্ষা করতে না পারলে আমাদের বাঙালিত্বই হারিয়ে যাবে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী মনে করেন এগুলোকে লালন-পালন করতে হবে, ধারণ করতে হবে। আমাদের সকলের বাঙালীয়ানাকে টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব রয়েছে।
বাংলাদেশ রোইং ফেডারেশনেকে সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সকল সহযোগিতা করা হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতাকে আমরা গ্রামে গঞ্জে ছড়িয়ে দিতে চাই। আমরা বাঙালিত্বকে টিকিয়ে রাখতে চাই’। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে রোইং ফেডেরেশন থেকে দাবিকৃত একটি সুন্দর স্পট হাতিরঝিলে করে দেয়া হবে। পরে মন্ত্রী বেলুন উড়িয়ে মহান স্বাধীনতা দিবস নৌকা বাইচ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।