ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

স্বাধীনতা দিবসে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করলেন সিইসি

প্রকাশিত: ১১:০৯, ২৭ মার্চ ২০১৯

স্বাধীনতা দিবসে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করলেন সিইসি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে এক অনুষ্ঠানে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য কমিশনাররা। সিইসি নুরুল হুদা তার স্মৃতিচারণে বলেন, বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে লাখ লাখ জনতার মাঝে তিনিও ছিলেন। মনেপ্রাণে স্বাধীনতা চেয়েছিলেন। এ জন্য সেদিন মশারি টানানোর লাঠি নিয়েই ভাষণ শুনতে গিয়েছিলেন। অনুষ্ঠানে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, আমাদের সৌভাগ্য, সিইসি একজন সম্মুখযোদ্ধা। নির্বাচন কমিশনার রফিকুল স্যার তরুণ যোদ্ধা, মাহবুব তালুকদার স্যার একজন অন্যতম সংগঠক। এ রকম একটি কমিশন আমরা পেয়েছি, এ জন্য আমরা গর্বিত। মঙ্গলবার মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে আয়োজন করা হয় আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা, ইসি মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও ইসি সচিব মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ নিয়ে আলোচনা করেন। এ সময় তারা সেই সময়ে নিজেদের যুদ্ধে অংশ নেয়াসহ স্মৃতিচারণমূলক গল্প শুনান। প্রধান নির্বাচন কমিশনার স্মৃতিচারণ করে বলেন, আজ বলব তাদের কথা, যাদের বয়স একাত্তর সালে ১৮ থেকে ২২ ছিল। তারা স্বাধীনতাকে কিভাবে দেখেছিলেন? স্বাধীনতা অর্জনে কিভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন? কিভাবে তাদের মধ্যে সংগ্রামী চেতনার উন্মেষ ঘটেছিল?’ একাত্তরে যারা যুবক ছিল তারা প্রত্যেকেই নিজের অবস্থান থেকে স্বাধীনতা অর্জনের পথে কোন না কোনভূমিকা রেখেছেন। তিনি বলেন, একাত্তরের ৩ মার্চ অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করা হয়। ওইদিন ছিল ঢাকা স্টেডিয়ামে ক্রিকেট খেলা। ইয়াহিয়ার ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত দেশ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। আমার ওইদিন মাস্টার্সের ব্যবহারিক পরীক্ষা (ঢাবি) ছিল। আমরাও পরীক্ষা রেখে রাস্তায় নেমে আসি। ৭ মার্চের ভাষণে রেসকোর্স ময়দানে কেউ মশারি টানানোর লাঠি, কেউ বাঁশ নিয়ে ছুটে যায়। আমি মশারি টানানোর লাঠি খুলে নিয়ে গিয়েছিলাম। ভেবে ভাল লাগে যে, সেখানে যে লাখ লাখ মানুষ ছিল, তার মধ্যে আমিও ছিলাম। রাতে আমার এক স্যারের সঙ্গে দেখা করে বললাম, বঙ্গবন্ধুতো দিক-নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছেন, এখন কি করব? স্যার বললেন, ঢাকা শহর কারও জন্য নিরাপদ নয়, তুমি বরং গ্রামে চলে যাও। আমি ফরিদপুরের এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে গ্রামের দিকে রওনা হই। পৌঁছে দেখি সব তরুণ, জুবা, কৃষক-শ্রমিক-জনতা, সবার মধ্যেই যুদ্ধে যাওয়ার প্রস্তুতি। শুধু মনোবল সঙ্গী করে বাঁশের লাঠিকে রাইফেল আকারে ধরে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেয়া শুরু করি। অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন ইসি মাহবুব তালুকদার। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি কেঁদে ফেলেন। বলেন, পরম সৌভাগ্য যে, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সরকারীভাবে কাজ করার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। অনেক স্মৃতি। ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ওই দিনই তিনি আমায় ডেকে বলেন, মাহবুব তুমি আমার সঙ্গে থাকবা। আমাকে রাষ্ট্রপতির সহকারী প্রেস সচিবের দায়িত্ব দেয়া হয়। দায়িত্ব পড়ে বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীর ডিকটেশন নেয়ার।
×