ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

জিদানের দ্বিতীয় ইনিংসে রিয়ালের প্রথম হার

প্রকাশিত: ০৯:৪০, ৫ এপ্রিল ২০১৯

জিদানের দ্বিতীয় ইনিংসে রিয়ালের প্রথম হার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রিয় ক্লাবের দুঃসময়ে দ্বিতীয়বারের মতো ডাগআউটে ফিরে এসেছেন জিনেদিন জিদান। প্রত্যাবর্তন প্রত্যাশিত হলেও দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাস্তবতা বুঝতে পারছেন ফরাসী কিংবদন্তি। সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে দ্বিতীয়বার ফেরার পর প্রথম হারের স্বাদ পেয়েছেন ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপ জয়ী তারকা। বুধবার রাতে স্প্যানিশ লা লিগার এ্যাওয়ে ম্যাচে মেস্টালায় স্বাগতিক ভ্যালেন্সিয়ার কাছে ২-১ গোলে হেরেছে সফরকারী রিয়াল মাদ্রিদ। বাজে এই হারের পর দায়টুকু নিজের কাঁধেই নিয়েছেন জিদান। শুধু তাই নয়, খেলোয়াড়দের পাশেই আছেন তিনি। পরশু রাতের অন্যান্য ম্যাচে এ্যাথলেটিক বিলবাও ৩-২ গোলে লেভান্তেকে ও এইবার ২-১ গোলে হারিয়েছে রায়ো ভায়োকানোকে। হুয়েস্কা ও সেল্টা ভিগোর ম্যাচ ৩-৩ গোলে অমীমাংসিত থাকে। প্রায় ১০ মাস আগে সর্বশেষ জিদানের বিবেচনায় মূল একাদশে আসতে পারেননি গ্যারেথ বেল। কিন্তু লিভারপুলের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে বদলি খেলোয়াড় হিসেবে নেমে দলের শিরোপা জয়ে মূল ভূমিকা রেখেছিলেন ওয়েলস তারকা। এই ম্যাচেও বেলকে বদলি হিসেবে মাঠে নামান জিদান। কিন্তু তেমন কিছুই করতে পারেননি। অন্যদিকে ভ্যালেন্সিয়া যোগ্য দল হিসেবেই জয় তুলে নিয়েছে। গনসালো গুয়েডেস ও এ্যাজেকুয়েল গ্যারের দুই অর্ধের দুই গোল স্বাগতিকদের জয় নিশ্চিত করে। ইনজুরি টাইমে করিম বেনজেমার কাছ থেকে সান্ত¡নার এক গোল পায় রিয়াল। এই জয়ে মার্সেলিনোর দল শীর্ষ চারের তালিকা থেকে মাত্র এক পয়েন্ট দূরে থাকল। বর্তমানে ৩০ ম্যাচে ৪৬ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার পাঁচ নম্বরে ভ্যালেন্সিয়া। আগের ৫৭ পয়েন্ট নিয়ে তিনে রিয়াল মাদ্রিদ। ৭০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে বার্সিলোনা। এই সাফল্যে ভ্যালেন্সিয়ার সামনে দারুণ এক শেষের ক্ষণ অপেক্ষা করছে। লীগে শীর্ষ চারে থেকে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে খেলার যোগ্যতা অর্জনের হাতছানি ছাড়াও বার্সিলোনার বিপক্ষে কোপা ডেল’রে’র ফাইনাল ও ইউরোপা লীগে ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে শেষ ষোলোর ম্যাচের আগে তারা আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নিতে পেরেছে। জিদানের অধীনে প্রথম দুই ম্যাচে জয় এলেও এবার ঠিকই মুদ্রার উল্টো পিঠ দেখতে হয়েছে গ্যালাক্টিকোদের। মৌসুমে কোন শিরোপার সুযোগ এখন আর রিয়ালের নেই। পুরো মৌসুমজুড়েই দলটির পারফর্মেন্সে তেমন কোন অসধারণত্ব চোখে পড়েনি। আক্রমণভাগ, মধ্যমাঠ কিংবা রক্ষণভাগ কোন বিভাগেই খেলোয়াড়রা নিজেদের মেলে ধরতে পারছে না। জিদানের অধীনে বেল প্রথম দুটি ম্যাচে মূল একাদশে খেলেছেন। এর মাধ্যমে রিয়ালে বেলের ভবিষ্যত কিছুটা হলেও নিশ্চয়তার আভাস দিচ্ছিল। কিন্তু আবারও বেঞ্চে চলে যাওয়ায় পুরনো শঙ্কা নতুন করে জেগে উঠেছে। প্রথমার্ধে রিয়ালের তুলনায় ভ্যালেন্সিয়াই পুরো ম্যাচে আধিপত্য দেখিয়েছে। যদিও প্রথম গোল পেতে তাদের ৩৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হয়েছে। কার্লোস সোলারের সহায়তায় গুয়েডেস কার্লিং শটে রিয়াল গোলরক্ষক কেইলর নাভাসকে পরাস্ত করলে এগিয়ে যায় ভ্যালেন্সিয়া। ম্যাচের ৬৪ মিনিটে মার্কো এ্যাসেনসিও’র জায়গায় মাঠে নামেন বেল। পাশাপাশি ইস্কোর জন্য জায়গা ছেড়ে দেন টনি ক্রুস। মাঠে নেমেই বেল রিয়ালের হয়ে প্রায় সমতা এনেই দিয়েছিলেন। কিন্তু ডানি পারেজো অসাধারণ দক্ষতায় স্বাগতিকদের রক্ষা করেন। ম্যাচ শেষের সাত মিনিট আগে পারেজের ক্রস থেকে গ্যারের হেডে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ভ্যালেন্সিয়া। এরপর ভিএআর প্রযুক্তির সহায়তায় সার্জিও রামোসের পাওয়া পেনাল্টি বাতিল হয়ে যায়। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে (৯৩ মিনিট) রিয়ালের পক্ষে সান্ত¡নার একমাত্র গোলটি করেন করিম বেনজেমা। ম্যাচ শেষে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথম হারের জন্য খেলোয়াড়দের দুষতে রাজি নন রিয়াল মাদ্রিদ কোচ জিনেদিন জিদান। এক মৌসুমের পারফর্মেন্স দিয়ে মার্সেলোর মতো অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের বিচার করতেও চান না ফরাসী গ্রেট। জিদান বলেন, আমরা দারুণভাবে ম্যাচটা শুরু করেছিলাম। প্রতিপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছি। আমাদের শুধু প্রথমে গোলটা পাওয়া দরকার ছিল। কোন কিছুর জন্য আমি খেলোয়াড়দের দোষ দিতে পারি না। তারা সত্যি সর্বোচ্চ চেষ্টাই করেছে। আমরা খুব উঁচু মাপের একটা দলের বিপক্ষে খেলেছি। এটা একটা হার। আর হার সবসময় বেদনাদায়ক।
×