ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ক্রিকেটার আবেশ খানের জীবন কেটেছে মারাত্মক লড়াই করে

প্রকাশিত: ০২:১৩, ৫ এপ্রিল ২০১৯

ক্রিকেটার আবেশ খানের জীবন কেটেছে মারাত্মক লড়াই করে

অনলাইন ডেস্ক ॥ আইপিএলের মরসুম জমজমাট। কোনও দল ভাল খেলছে, কোনও দল একেবারেই নয়। কেউ সফল কেউ বা ব্যর্থ। মারাত্মক পরিশ্রম করে দলে জায়গা করে নিচ্ছেন তরুণরা। এঁদের মধ্যে অনেকের জীবন কেটেছে মারাত্মক লড়াই করে। তেমনই এক জনের আবেশ খান। আবেশ খেলছেন দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে। মধ্যপ্রদেশের এই পেসার বল হাতে নিলেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন। কিন্তু ২৩ বছরের তরুণের পথটা একেবারেই মসৃণ ছিল না। ভারতীয় দলের নেট বোলার হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়েছিলেন আবেশ। এশিয়া কাপ শুরু হওয়ার আগে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতেও ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের নেটে বল করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাঁকে। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, মহেন্দ্র সিংহ ধোনিদের বিরুদ্ধে বল করে অভিজ্ঞতা বাড়িয়ে ‘নেট বোলার’-এর তকমা সরিয়ে জায়গা করে নিয়েছেন আইপিএলে। সৌরভের দলের অন্যতম ভরসা তিনি। ২০১৮ সালে আইপিএলে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের হয়ে সাত ম্যাচে পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন আবেশ। আবেশের কাছে আয়ের একমাত্র উৎস ক্রিকেট। ১৪ বছর বয়স থেকে চরম দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করছেন তিনি। আবেশের বাবার একটা ছোট পানের দোকান ছিল ইনদওরে। সেখান থেকে যা উপার্জন হত তা দিয়েই চলত সংসার। রাস্তা চওড়া করার জন্য মহম্মদ আশিক খানের সেই পানের দোকানটি ভেঙে দেয় স্থানীয় প্রশাসন। দিন প্রতি খুব বেশি হলে ৫০০ টাকা আয় হত তাঁদের। কিন্তু বন্ধ হয়ে যায় সেই পথ। তার পর থেকেই শুরু তাঁর লড়াই। ক্রিকেটের পাশাপাশি পড়াশোনা চালানোর চেষ্টা করলেও পরে তার আর উপায় ছিল না। আয়ের উৎস হিসেবে ক্রিকেটকেই বেছে নিতে হয় ফাস্ট বোলার আবেশকে। ইনদওরে ভারতের প্রাক্তন ব্যাটসম্যান অময় খুরেশিয়ার অ্যাকাডেমি থেকে অনূর্ধ্ব ১৬-র দলে সুযোগ পান আবেশ। ১৭ দিনের ক্যাম্প থেকে ১৭০০ টাকা পেয়ে ১৫ বছর বয়সেই সংসারে সাহায্য করা শুরু করেছিলেন আবেশ। রাজ্য দল, অনূর্ধ্ব-১৯ ভারতীয় দলের হয়েও দুর্দান্ত পারফরম্যান্স ছিল তাঁর। ২০১৮-১৯ মরসুমে রঞ্জিতে ৭ ম্যাচে ৩৫ উইকেট নেন তিনি। এখনও গাড়ি নেই তাঁর। বাড়িতে স্কুটার রয়েছে। সেটা নিয়েই রাস্তায় বেরোন। বন্ধুরা বলে গাড়ি কিনতে। নিয়মিত ম্যাচ থাকার কারণে বাড়িতে বেশি থাকা হয় না। তাই আর গাড়ি কেনা হয়নি, জানান আবেশ। প্রথমে একটি পুরনো সাইকেল কিনেছিলেন, সেটায় চেপেই ২০ কিমি পথ পাড়ি দিতেন অনুশীলনের জন্য। তরুণ পেসারের কথায়, “আবেগ দিয়েই ক্রিকেট খেলি। বাবার দোকান উঠে যাওয়ার পরে আমাদের আয়ের রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। দু’বছর প্রচণ্ড কষ্ট করতে হয়েছে। তার পরে অনূর্ধ্ব-১৯ ভারতীয় দলে সুযোগ পাই। রাজ্যের হয়েও খেলি। আইপিএলে খেলার পরেই জীবন পাল্টাতে শুরু করে।” এ বারে তাঁকে ৭৫ লক্ষ টাকা দিয়ে কিনেছে দিল্লি। বাবা, মা, ঠাকুমার সঙ্গেই থাকেন ২২ বছরের এই পেসার। সংসারের একমাত্র রোজগেরে সদস্যও তিনিই। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×