ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

কলাগাছ থেকে তৈরি ব্যাগ, দাম আকাশছোঁয়া

প্রকাশিত: ২৩:৫৮, ১০ এপ্রিল ২০১৯

কলাগাছ থেকে তৈরি ব্যাগ, দাম আকাশছোঁয়া

অনলাইন ডেস্ক ॥ সুইজারল্যান্ডের এক কোম্পানি ফিলিপাইনের এক জংলি কলার গাছ কাজে লাগিয়ে পরিবেশবান্ধব ব্যাগ উৎপাদন করছে৷ গোটা বিশ্বে এই ব্র্যান্ডের চাহিদা বাড়ছে৷ বুনো কলাগাছ থেকে তৈরি এই ব্যাগের দামও আকাশছোঁয়া। আসলে কলা নয়, আবাকা বানানা গাছের আঁশ দিয়ে তৈরি কাপড়, যার নাম বানানাটেক্স৷ কলা গাছের কাণ্ড থেকে এই আঁশ সংগ্রহ করা হয়। কুইস্টিয়ন ব্যাগ প্রস্তুতকারী কোম্পানি বানানাটেক্স সৃষ্টি করেছে৷ সুইজারল্যান্ডের এক পত্রিকা এই সাফল্যের জন্য তাদের একটি ডিজাইন পুরস্কারও দিয়েছে৷ সুইজারল্যান্ডের জুরিখ শহরে কুইস্টিয়ন কোম্পানির সদর দফতর৷ গত কয়েক বছরে কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতারা নানা রকম টেকসই উপাদান নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করেছেন৷ খবর ডয়চে ভেলের। কোম্পানির সহ প্রতিষ্ঠাতা ক্রিস্টিয়ান কেগি বলেন, ‘আমরা সুতা নিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম৷ অরগ্যানিক কটন ফ্যাব্রিক তৈরি করতে কয়েক বছর সময় কাটিয়েছিলাম৷ একই সময়ে আমরা লিনেন, হেম্প ও বাঁশ নিয়েও পরীক্ষানিরীক্ষা করেছি৷ এই প্রক্রিয়ায় কলার আঁশর বিষয়ে জানতে পেরেছিলাম৷ সঙ্গে সঙ্গে তার সম্ভাবনা বুঝে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম৷’ অ্যাবাকা ম্যানিলা হেম্প বলেও পরিচিত৷ ফিলিপাইনে এই কলাগাছ দেখা যায়৷ ঊনবিংশ শতাব্দী থেকে তা দিয়ে দড়ি ও মাছ ধরার জাল তৈরি করা হচ্ছে৷ জঙ্গলে এই বুনো কলার গাছ পাওয়া যায়৷ কোনো সেচ পদ্ধতি, সার বা কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না৷ তার আঁশ শুকানো হয় এবং পরে কাগজে পরিণত করা হয়৷ ক্রিস্টিয়ান কেগি বলেন, ‘কলাগাছের আঁশ পাকিয়ে সুতায় পরিণত করে তা বুনলে অত্যন্ত অসম সারফেসের কাপড় তৈরি হয়৷ কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন প্রক্রিয়া হিসেবে এই কাগজ তৈরি করলে তা সমান হয়ে যায়৷’ তাইওয়ানে বিশেষ এক বয়ন কেন্দ্রে সেই কাগজ থেকে কাপড় তৈরি হয়৷ সরু করে কাগজ কেটে সুতা তৈরি করে তা বোনা হয়৷ সেই কাপড় চীনে রপ্তানি করে তা দিয়ে ব্যাগ তৈরি হয়৷ সেখানকার কাজের পরিবেশ ইইউ মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ৷ ব্যাগের ডিজাইনও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে৷ সব খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে ভাবনাচিন্তা করা হয়েছে৷ তার স্টাইল বেশ হালকা মেজাজের ও বাস্তবধর্মী৷ গোটা বিশ্বে প্রায় ২০০টি দোকানে এই পণ্য বিক্রি হচ্ছে৷ কলার আঁশ দিয়ে তৈরি ব্যাগের দাম প্রায় ২২০ ইউরোর মতো৷ বর্তমানে মডেলের সংখ্যা সীমিত হলেও আরও ডিজাইন নিয়ে কাজ চলছে৷ কুইস্টিয়ন কোম্পানির আর এক সহ-প্রতিষ্ঠাতা ক্রিস্টিয়ান শ্যোনেগার বলেন, ‘এই প্রক্রিয়ার সময় আমরা বুঝতে পারি, যে অনেক কোম্পানি এই পণ্য পরখ করে দেখতে আগ্রহী৷ আসলে এমন চাহিদা দেখে আমরা কিছুটা অবাক হয়েছিলাম৷ বিভিন্ন শিল্পক্ষেত্রে টেকসই উপাদানের প্রয়োজনীয়তার মাত্রাও আমাদের ভাবিয়েছিল৷’ সুইজারল্যান্ডের এই ব্র্যান্ড পরিবেশ সচেতন প্রভাবশালী মানুষের জন্য শহুরে ব্যাগ তৈরি করে৷
×