ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

১২০০ বছর আগের প্রচীনর ধর্মের খোঁজ কি মিলল হ্রদের গভীরে

প্রকাশিত: ০২:১৪, ১২ এপ্রিল ২০১৯

১২০০ বছর আগের প্রচীনর ধর্মের খোঁজ কি মিলল হ্রদের গভীরে

অনলাইন ডেস্ক ॥ প্রাচীন একটি ধর্ম। যার কথা এর আগে কোনও দিন শোনা যায়নি। অধুনা বিলুপ্ত, ১২০০ বছর আগের সেই ধর্মের খোঁজ কি মিলল দক্ষিণ আমেরিকার টিটিকাকা হ্রদের গভীরে? ২০১৩ সালে প্রত্নতত্ত্ববিদরা এই হ্রদের গভীরে কিছু জিনিসের সন্ধান পেয়েছিলেন। ছয় বছর পর, সম্প্রতি বিশ্বের সবচেয়ে উচু লেকের তলদেশে পাওয়া সে সব সামগ্রী সামনে আসে। সোনা, বিভিন্ন ধাতু, দামি পাথরের এই সব জিনিস পরীক্ষা করেই বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন, একেবারে নতুন এক ধর্মের সন্ধান পেয়েছেন তাঁরা। টিটিকাকা হ্রদের দক্ষিণে পেরুতে সূর্যের দ্বীপ বা আইল্যান্ড অব দ্য সানের কাছেই মিলেছিল এগুলি। তিওয়ানাকু অর্থাৎ স্পেনীয় সাম্রাজ্য বিস্তারের আগের সময়ে দক্ষিণ আন্দিজের কাছাকাছি এলাকায় ছিল এই সাম্রাজ্য। ৫০০ থেকে ৯০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত স্থায়ী ছিল এটি। বিশেষ এক ধরনের ধর্ম ছিল এই তিওয়ানাকু সংস্কৃতিতে, ইতিহাসবিদদের ধারণা এমনটাই। ওই জায়গায় (খোয়া রিফ) দু’টি স্বর্ণমূর্তি মেলে। তিওয়ানাকুর দেবতা (রে ফেসড ডেইটি) এগুলি, বলা হচ্ছে এমনটাই। সোনা, ধাতু, মূল্যবান পাথর, মূল্যবান ধাতব পদার্থ সবই মিলেছিল এই জায়গা থেকে। তিনটি পশুর (ইয়ামার) মৃতদেহের অবশেষও মিলেছে। মিলেছে হাড়গোড়ও। মনে করা হচ্ছে, বলি দেওয়া হয়েছিল এই পশুদের। বেশ কিছু কাঁটাওয়ালা ওয়েস্টারও মিলেছে। একটি ধাতব মূর্তি মিলেছে যেটিকে পুমা-ইয়ামার মিশ্রণ বলা যেতে পারে। কিন্তু আন্দিজ পর্বতমালার উপর হ্রদের জলে তিওয়ানাকুর উপাসকরা এই মূল্যবান সামগ্রী লুকিয়ে রাখলেন কেন? ধর্মীয় ঐতিহ্য যে তিওয়ানাকুকে সমৃদ্ধ করেছিল, এই সব সামগ্রীই তার প্রমাণ, বলছেন গবেষকরা। নতুন ধর্মীয় রীতিতে স্থানীয় বাসিন্দারাই এই মূর্তিগুলি গড়েছিলেন, বলছেন ইতিহাসবিদরা। এই ধর্মীয় রীতিতে বলা হত, আচরণ ভাল হলে মানুষ অমর হতে পারে। খারাপ ব্যবহার হলে দেবতাই শাস্তি দেবেন। এমনকি এই ধর্মের প্রচারকও ছিলেন, এমনটাও বলা হয়েছে ইতিহাসবিদদের গবেষণায়। বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে তাঁদের বিশ্বাস প্রচার করতেন তিনি। রাজনীতি ও সামাজিক রীতিনীতিও এই নতুন ধর্মের সঙ্গে গভীর ভাবে জড়িত ছিল। কিন্তু ১০০০ খ্রিস্টাব্দে এই সাম্রাজ্য, এই তিওয়ানাকু সংস্কৃতি ধ্বংস হতে শুরু করে। স্পেনীয় সংস্কৃতি সেই জায়গা দখল করে, জানান ইসি সান ডিয়েগোর পল গোল্ডস্টেইন নামের এক প্রত্নতত্ত্ববিদ। দক্ষিণ আমেরিকার এই প্রাক-কলম্বিয়ার সংস্কৃতিসমৃদ্ধ শহরে প্রায় ১০০টির কাছাকাছি গ্রাম ছিল। অনেকেই এটিকে দেবতাদের শহর বলে উল্লেখ করেছেন বইয়ে। তবে এটি আদৌ পৃথক ধর্ম কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে ইতিহাসবিদদের। এটি অন্য কোনও ধর্মের শাখাও হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×