ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সোলেমানের সৌর সেচযন্ত্র ॥ কৃষিতে নতুন মাত্রা

প্রকাশিত: ০৯:৪০, ১৩ এপ্রিল ২০১৯

 সোলেমানের সৌর সেচযন্ত্র ॥ কৃষিতে নতুন মাত্রা

সূর্যের আলোকে কাজে লাগিয়ে কৃষিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছেন সোলেমান আলী নামে এক কৃষক। যিনি ইতোমধ্যে এলাকায় উদ্ভাবক ও বিজ্ঞানী কৃষক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। একদিকে যখন ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি কিংবা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত সরবরাহ নিয়ে শঙ্কা তখন সূর্যের আলোকে কাজে লাগিয়ে বোরো আবাদের পানির চাহিদা পূরণের এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন তিনি। সোলার বিদ্যুত দিয়ে তিনি সেচপাম্প, মৎস্য হ্যাচারি, ভ্রাম্যমাণ সোলার সেচ পাম্প দিয়ে পুকুরের পানিসহ বোরো ধানের সেচের কাজ চালিয়ে আসছেন। তার এই চিন্তাকে কাজে লাগানোর ফলে কমছে শ্রমিক ও কৃষি খরচ। বর্তমানে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন সোলেমান আলী। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের মোলানী গ্রামে তার বাড়ি। তিনি খুব কম খরচে কৃষকের সাধ্যমতো এবং সহজেই বহনযোগ্য সোলার প্যানেল দিয়ে বিদ্যুত উৎপাদন করে কৃষি যন্ত্র ব্যবহার করছেন। এর আগে সোলেমান আলী সোলার আইপিএস তৈরি করতেন। দেশে সৌর সেচযন্ত্র চালু হওয়ার পর তিনি এই প্রযুক্তি আরও সহজলভ্য করতে কাজ শুরু করেন। বাজারে সৌর সেচযন্ত্র সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে তখনই সোলার চার্জার গাড়িতে মানুষ পরিবহনের বিষয়টি চিন্তায় নিয়ে একের পর এক সৌর প্যানেল, কন্ট্রোলারসহ নানা যন্ত্রপাতি লাগিয়ে দ্রুতগতিতে পানি তুলতে পাম্পে যোগ করেন গিয়ারবক্স। আর এভাবেই তিনি নিজের উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে তৈরি করেন সৌর সেচ পাম্প। যা দিয়ে তিনি তার কৃষি জমিতে পানির চাহিদা পূরণ করে পুকুর ও অন্যান্য স্থানে কাজে লাগচ্ছেন। এলাকার মানুষদের তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সোলেমান আলী। সোলেমান আলী জানান, ১০টি সৌরকোষ একত্রে সংযুক্ত করে তৈরি করা হয়েছে সৌর প্যানেল। প্রতিটি সৌরকোষের ধারণ ক্ষমতা ২৫০ ওয়াট। ওই সৌর প্যানেলের ওপর সূর্যের আলো পড়তেই ভোল্টেজ তৈরি হয় এবং সংযুক্ত তারের মাধ্যমে এটি থেকে পাওয়া যায় বিদ্যুত। সেই বিদ্যুত দিয়ে চলে ৩ হর্স পাওয়ারের একটি পাম্প। এই সেচযন্ত্র দিয়ে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত জমিতে সেচ দেয়া যায়। সূর্যের তাপ যতই বাড়ে পানির গতি ততই বাড়ে। ২ হাজার ৫শ’ ওয়াটের সৌর প্যানেল দিয়ে মিনিটে ৭শ’ লিটার পানি ওঠে। তার হিসেবে এক ওয়াট সৌরকোষের দাম পড়ে ৪০ টাকা। সে হিসেবে ২ হাজার ৫শ’ ওয়াটের দাম পড়ে ১ লাখ টাকা। পানির পাম্প ও সোলারের অবকাঠামো তৈরিতে আরও ব্যয় ৩০ হাজার টাকা। একটি সৌর সেচযন্ত্র তৈরির খরচ পড়ে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। আর তার উদ্ভাবিত প্রতিটি পাম্প বিক্রি করছেন ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। তিনি আরও জানান, সরকারী সহযোগিতা পেলে সৌর সেচযন্ত্র কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিলে বিদ্যুত ও ডিজেলের ওপর কৃষককে নির্ভর করতে হবে না। এতে পরিবেশও ভাল থাকবে। তিনি তার সেচযন্ত্রটি বাজারজাত করতে ঋণের ব্যবস্থা করার দাবি জানান। -এস এম জসিম উ্িদ্দন, ঠাকুরগাঁও থেকে
×