ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

এম. এইচ.উল্লাহ

চাই নজরদারি

প্রকাশিত: ১১:৩৬, ১৮ এপ্রিল ২০১৯

চাই নজরদারি

অন্যায় আর অপরাধকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়ার জন্য সমাজে আজ অশুভ শক্তি রন্ধ্রে-রন্ধ্রে ঢুকে পড়েছে। তাইতো এখন প্রায় প্রতিদিনই নির্মম আর নিষ্ঠুর ঘটনা ঘটেই চলেছে। পৈশাচিক কা-ের জের হিসেবে ফেনীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বার্ণ ইউনিটে মারা গেছে। এটা যে কত বর্বর পৈশাচিক ঘটনা তা দেখলেই গা শিউরে ওঠে। এছাড়াও ডেমরার আট বছরের প্রথম শ্রেণীর ছাত্র মুনিরকে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবিতে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে এক পাষ- তার দুই সহযোগীকে নিয়ে। এ ধরনের বর্বর আর নিষ্ঠুর হত্যাকা- সর্বকালের সব সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এর শেষ কোথায় তা ভাবতেও গা শিউরে উঠছে। ফেনীর একটি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজদ্দৌলা আর ডেমরার একটি মসজিদের ইমাম হাসানুজ্জামানের মতো নরাধম যতদিন সমাজে বেঁচে থাকবে ততদিন এ ধরনের নিষ্ঠুর কাজকর্ম চলতেই থাকবে। সামান্য কয়েকটা টাকার লোভে একজন মসজিদের ইমাম কি করে এ জঘন্য কাজটি করল তা ভাবতেই শরীর শিউরে ওঠে। এ দুটো লোক শুধু নিজেরাই এই অপকর্ম করেনি বরং সহযোগী যোগাড় করে তাদেরকে দিয়ে অপকর্ম ঘটিয়েছে। এখন এমনিতেই ভয়াবহ যানজট, আনাড়ি গাড়ি চালকের হাতে প্রতিদিনই অনেক মানুষ মরছে, তার উপর অগ্নিসন্ত্রাস আর তার চাইতেও ভয়াবহ এ ধরনের ছাত্রছাত্রী হত্যা কত জঘন্য কাজ এটি কি ভেবে দেখার সময় এখনো আমাদের হয়নি? একজন শিক্ষকের হেফাজতে একটি ছাত্র কিংবা ছাত্রী যদি নিরাপদে না থাকে তবে বাবা-মায়ের অবর্তমানে কার কাছে সে নিরাপদে থাকবে। এটা যে মধ্যযুগের বর্বরতাকেও ছাড়িয়ে গেছে। এখন সব ধরনের উন্নয়ন কর্মকা-ে দেশের নারী সমাজ পুরুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, অথচ নারীর সেই কর্মস্থলেও নিরাপত্তা নেই। রাস্তাঘাটে, বাস ট্যাক্সিতে নারীর যাতায়াতও নিরাপদ নয়- অথচ একজন কর্মজীবী নারীর ঘরেও বসে থাকার উপায় নেই কারণ কাজ না করলে অর্থাভাবে সে বেঁচে থাকতে পারবে না। সমাজে আজ নৈতিক অবক্ষয় চরম আকার ধারণ করেছে- মানুষ পশুর চাইতেও অধম হিসেবে নিজের পরিচয় দিচ্ছে। একটি অসহায় মেয়েকে নির্র্মমভাবে হত্যা করা হলো অথচ সময়মতো প্রতিবাদ হলো না, এখন মানব বন্ধন হচ্ছে। যদি এ অন্যায়ের প্রতিবাদ সঙ্গে সঙ্গে হতো, তাহলে আজকে আর তাদেরকে এ ধরনের মানববন্ধন করতে হতো না। প্রশাসন চোখ-কান খোলা রাখলে অনায়াসে বিষয়টি এতখানি গড়াতো না। এ জঘন্য অপরাধের শাস্তি দৃষ্টান্তমূলক হওয়া উচিত। সমাজ ঘুণে ধরার আগে কিংবা নৈতিক অবক্ষয় ক্যান্সারের মতো ছড়িয়ে পড়ার আগে প্রশাসন থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের ওপর যথাযথ নজর রাখলে, তাদের অপকর্মের সাজা প্রদান করলে, অসৎ ও দুর্নীতি পরায়ন এ ধরনের লোকদের চাকরিতে নিয়োগ না দিলে তারা আর এ ধরনের অপকর্ম করার সুযোগ পাবে না। তাই এখন থেকে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক ও কর্মচারীদের কাজকর্মের যথাযথ জবাবদিহিতা নিশ্চিত করলে এ ধরনের অপরাধ কমবে বলে আশা করা যায়। কলাবাগান, ঢাকা থেকে
×