ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নাজিব আহমেদ ভূঁইয়া

নৃশংসতার শেষ কবে?

প্রকাশিত: ১১:৩৮, ১৮ এপ্রিল ২০১৯

নৃশংসতার শেষ কবে?

বাঘের গর্ভে সব সময় বাঘই জন্মায়, সাপ জন্ম দেয় সাপের। মানুষ একমাত্র প্রাণী যে মানুষের জন্ম দেয়, আবার দানবের জন্মও দেয়। দানবের কর্মকাণ্ড দেখে লজ্জায় মাথা নিচু করে আছি, কারণ এই দানবেরা বৃহৎ মানবগোষ্ঠীর অংশ, এরা ভিনগ্রহ থেকে আসেনি। কথাটি আমার নয়, প্রয়াত কথাশিল্পী হুমায়ূূন আহমেদের। নুসরাত জাহান রাফির মৃত্যুর মাধ্যমে কথাটি আবারও প্রমাণিত হলো। যে কোন নিপীড়নের ঘটনাই অত্যন্ত মর্মান্তিক। এবং সেই সব ঘটনা আমাদের সবাইকে একপ্রকার শিক্ষা দিয়ে যায়। নুসরাতের মৃত্যুও আমাদের একটি বেশ বড় একটি শিক্ষা দিয়ে গেছে। এক টিভি অনুষ্ঠানে একজন অভিনেতা বলেছিলেন, পোশাক কখনও ধর্ষণের কারণ নয়, হতে পারে না, ধর্ষকের মানসিকতাই ধর্ষণের কারণ। এর পরপরই তাকে একটি বিরূপ সমালোচনার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। তাছাড়া সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে নারীবাদী যে কোন পোস্টে বা ধর্ষণ বা নিপীড়নের কোন সংবাদে মানুষের মন্তব্যগুলো পড়লে বোঝা যায় আমাদের দেশের তথাকথিত ধার্মিক পুরুষের ধ্যানধারণা। বেশিরভাগ মন্তব্যে মেয়েদেরকেই দোষ দেয়া হয় এবং সেইক্ষেত্রে মেয়েদের পোশাককে অনেকাংশে দায়ী করা হয়। নুসরাত জাহান রাফি মাদ্রসার ছাত্রী ছিল। ইসলামিক পর্দাপ্রথা সে যথেষ্ট ভাল করেই পালন করত। কিন্তু সেই পর্দা দানবের থাবা থেকে বাঁচাতে পারেনি তাকে। তাই বলছি, নুসরাত জাহান রাফির ঘটনাটি থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। তাই বলে বলছি না যে মেয়েদের পর্দার প্রয়োজন নেই। কিন্তু পর্দায় আছে বলেই মেয়েটি ভাল আছে আর পর্দাহীন মেয়ে নিপীড়নের শিকার, এই ধারণাটি আমাদের বাদ দিতে হবে পুরোপুরি।আমি মনে করি সমাজে যেই জিনিসটা প্রয়োজন সেটা হলো ভারসাম্য। নারী এবং পুরুষের মধ্যে যদি একটি চমৎকার ভারসাম্য থাকে, তবে ধর্ষণ বা যৌন নিপীড়ন এমনিতেই দূর হবে। ইসলামের শিক্ষাকে একটু গভীরভাবে দেখলেই ব্যাপারটি বোঝা যায়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, আমাদের সমাজে সেই ভারসাম্যটি নেই।নুসরাত জাহান রাফি, তুমি ভাল থেকো। পারলে ক্ষমা করে দিও। আশা করি, তোমার পরবর্তী প্রজন্মকে এমন বিভীষিকার মধ্য দিয়ে যেতে হবে না। মগবাজার, ঢাকা থেকে
×