স্টাফ রিপোর্টার ॥ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা দ্রুত হারে কমতে শুরু করেছে। গত ১১ বছরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৮৪ হাজার থেকে হ্রাস পেয়ে ২০১৮ সালে ১০ হাজারে নেমেছে। আর এই রোগে মৃত্যুর সংখ্যা ২০০৭ সালের ২২৮ জন থেকে হ্রাস পেয়ে ২০১৮ সালে ৭ জনে দাঁড়িয়েছে। নিয়ন্ত্রণ নয়, চিরতরে ম্যালেরিয়া নির্মূল কর্মসূচীতে নেমেছে বাংলাদেশ। আগামী ২০৩১ সালের মধ্যে ম্যালেরিয়া নির্মূলকরণে ম্যালেরিয়াজনিত স্থানীয় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার কর্মপরিকল্পনা চলছে। তবে এখনও দেশের প্রায় এক কোটি ৮০ লাখ মানুষ ম্যালেরিয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এ ক্ষেত্রে পার্শ্ববর্তী দেশসমূহেও ম্যালেরিয়া নির্মূলে সফলতা আসতে হবে। ২০১৮ সালে ১০ হাজার ৫২৩ জন ম্যালেরিয়া রোগী শনাক্ত করে চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে এবং সাত জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবসকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডাঃ শহীদ মিলন ভবনে আয়োজিত মিডিয়া ওরিয়েন্টশনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। আগামী ২৫ এপ্রিল পালিত হবে বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস। আর দিবসটি উপলক্ষে জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচী, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বেসরকারী সংস্থা ব্র্যাক ও অন্যান্য সহযোগী সংস্থাসমূহ এই ওরিয়েন্টেশনের আয়োজন করে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগী নিয়ন্ত্রণ বিভাগের পরিচালক ও সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণের লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডাঃ সানিয়া তহমিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক এম এ ফয়েজ, ব্র্যাকের কমিউনিকেবল ডিজিজেস ও ওয়াশ কর্মসূচীর পরিচালক ড. মোঃ আকরামুল ইসলাম, অধ্যাপক বেনজীর আহমদ, ডাঃ এ মান্নান বাঙ্গালী, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ মায়া সাপাল, প্রমুখ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচীর ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডাঃ এম এম আক্তারুজ্জামান। আর সঞ্চালকের দায়িত্বে ছিলেন ডাঃ মোঃ মশিকুর রহমান বিটু।
ডাঃ এম এম আক্তারুজ্জামন তার মূল প্রবন্ধে বলেন, ম্যালেরিয়া বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান জনস্বাস্থ্য সমস্যা। দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ১৩টি জেলার ৭১টি উপজেলার ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব রয়েছে। প্রতি বছর দেশের ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর মধ্যে প্রায় শতকরা ৯৮ ভাগ সংঘটিত হয়ে থাকে এই ১৩টি জেলায়। জেলাগুলো হচ্ছে রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেট, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, শেরপুর ও কুড়িগ্রামে। ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে ম্যালেরিয়াপ্রবণ এলাকায় জনগোষ্ঠীর মাঝে এ পর্যন্ত এক কোটি ৬০ লাখ দীর্ঘস্থায়ী কীটনাশকযুক্ত মশারি বিতরণ করা হয়েছে। ২০০৮ সালের তুলনায় এ পর্যন্ত ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা শতকরা ৮৮ ভাগ এবং মৃত্যুর হার প্রায় ৯৫ ভাগ কমাতে সক্ষম হয়েছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: