ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভুল চিকিৎসায় পঙ্গু, ক্ষতিপূরণ দাবি ঢাবি শিক্ষার্থীর

প্রকাশিত: ১১:১০, ১৯ এপ্রিল ২০১৯

ভুল চিকিৎসায় পঙ্গু, ক্ষতিপূরণ দাবি ঢাবি শিক্ষার্থীর

বিশ^বিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় পঙ্গু হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে অপারেশনের আগে বন্ডে স্বাক্ষরকারী ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে যোগাযোগ করতে বলা হলেও অভিযোগকারী তা করেনি। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি এ অভিযোগ তুলে ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। এ সময় তিনি স্কয়ার হাসপাতালের অবহেলা ও অর্থ লালসার কারণে নিজের পঙ্গুত্ববরণের বিচার চেয়ে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন ও ডাকসুর সহযোগিতা কামনা করেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান শামীম বিশ^বিদ্যালয়ের উইমেন এ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজের বিভাগ থেকে সদ্য স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে মেহেদী হাসান শামীম স্কয়ার হাসপাতালের ডাক্তার কৃষ্ণা প্রভুর বিরুদ্ধে ব্যবসায়িক স্বার্থ হাসিলের জন্য চিকিৎসায় অবহেলা করার অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, ভুল চিকিৎসার কারণে দিন দিন আমার বাম হাত ও পায়ের অবস্থার অবনতি হচ্ছে। শামীম বলেন, জানুয়ারির ১৪ তারিখ স্কয়ারের ডাক্তার কৃষ্ণা প্রভুর কাছে গেলে তিনি আমার রক্তনালীতে ব্রেন টিউমার হয়েছে বলে জানান। এটি খুবই সামান্য সার্জারি বলে অন্য কোথাও যাওয়ার দরকার নেই বলে পরামর্শ দেন সেই ডাক্তার। অপারেশনের দুদিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাসায় যেতে পারব বলেও তিনি আমাকে আশ^াস দেন। অপারেশনের ঝুঁকি ও প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বারবার জানতে চাইলেও তিনি তা এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, জানুয়ারির ২৩ তারিখ অপারেশন হয়, দুদিন পর কেবিনে চলে আসি। সেদিন ওয়াশরুমে যেতে চাইলে ডাক্তার জানান যে আমার বাম পাশ আর কাজ করছে না। পরবর্তী চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের কাছে অপারেশনের সিডি ও ট্রিটমেন্ট প্রসিডিউর ফাইল প্রদানের অনুরোধ করলে সেই ডাক্তার আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। আমার সন্দেহ হয় স্কয়ার হাসপাতালের সেই ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার শিকার আমি। এদিকে গত ১৫ এপ্রিল ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করলে তিনি ভুল স্বীকার করে বলেন, অপারেশনে মস্তিষ্কেও কয়েকটি নার্ভ কাটা গেছে। তার অভিযোগগুলো হলো অপারেশনের সিডি দেয়ার আবেদন করলে উল্টো খারাপ ব্যবহার কার হয়, অপারেশনে বের করা টিউমারটি তাকে দেখানো হয়নি, অপারেশনের বিস্তারিত ডকুমেন্ট দেয়া হয়নি এবং অপারেশন পরবর্তী ঝুঁকি ও প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানানো হয়নি। স্কয়ার হাসপাতালের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইউসুফ সিদ্দিক বলেন, মেহেদী হাসানের অপারেশন টা হয়েছিল জানুয়ারির ২৩ তারিখ। এক সপ্তাহ থেকে রিলিজ নিয়ে চলে যান। এর মাঝখানে আমরা আর কিছু জানি না। হঠাৎ তিনি জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে এসে আমাদের কাছে চারটি অভিযোগ করেন। মূলত এ ধরনের অপারেশনগুলোর সিডি নেয়া হয় না। তাছাড়া তার অপারেশন সম্পর্কিত সব কাগজপত্র অপারেশনের পরপরই তাকে দেয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, অপারেশন পরবর্তী ঝুঁকি ও প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে কখনই রোগীকে জানানো হয় না। তার সঙ্গে আসা এটেন্ডেন্টকে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়েছে। প্রতিটি অপারেশনের আগেই রোগীর পরিচিত একজনকে ভল্টে স্বাক্ষর করতে হয়। অপারেশনের সময় মেহেদী হাসান শামীম সম্ভবত তার এক বন্ধুকে নিয়ে আসে। আমরা সেই বন্ধুকে নিয়ে আসার জন্য বলেছি। কিন্তু এক সপ্তাহ পরে স্বাক্ষরকারী সেই বন্ধুকে না এনে কোন এক ছাত্র সংগঠনের রাজনীতিতে জড়িত এক বন্ধুকে নিয়ে আসেন। বন্ডে স্বাক্ষরকারীকে নিয়ে আসলে ডাক্তারসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে নিয়ে মিটিং এ বসার কথা জানান ইউসুফ সিদ্দিক।
×