ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শাকিল আহমেদ

তপ্ত দিনে টি-শার্ট

প্রকাশিত: ১৩:৩৮, ১৯ এপ্রিল ২০১৯

তপ্ত দিনে টি-শার্ট

চারিদিক ধুধুময়, অনুভূত হচ্ছে গ্রীষ্মকালীন রুদ্রময়তা, প্রকৃতির পালাবদলে চারদিকে বইছে গ্রীষ্মের তপ্ত হাওয়া। ষড় ঋতুর এ দেশ বৈচিত্র্যময়, গ্রীষ্মকালীন বিচিত্রতা কিংবা দাবদাহ নিয়ে রচিত হয়েছে বহু গান, কবিতা। প্রচ- গরমে প্রাণ যেন ওষ্ঠাগত। মধ্য গগনে সূর্যের প্রখরতা যেন থামিয়ে দিতে চায় পথ চলা। তার পরেও জীবন তো থেমে থাকে না। আপন গতিতে চলতে থাকে যত প্রতিকূলতাই আসুক না কেন। তবে এই গরমে বাড়তি কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত, বিশেষ করে খাবার-দাবার ও পোশাক-পরিচ্ছদে। এই গরমে প্রচুর পানি পান করা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের খাবারের প্রতি নানা রকম পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। ঠিক তেমনি কিছু পরামর্শ রয়েছে পোশাকের বেলায়ও। এ সময়টায় সুতি কাপড়কেই প্রাধান্য দেয়া হয়ে থাকে, যা উষ্ণ আবহাওয়ায় বেশ স্বচ্ছন্দে পরিধান করা যায়। এমন আবহাওয়ায় খাপ খাইয়ে নেয়ার মতো একটি পোশাক হচ্ছে টি-শার্ট। কটন বেজ এ টি-শার্টগুলো এই গরমে বেশ আরামদায়ক। ঠিক কবে থেকে টি-শার্টের প্রচলন তা সুনির্দিষ্ট করা না গেলেও উনিশ শতকে এর ব্যাপক আবির্ভাব লক্ষণীয়। কলারবিহীন শর্ট হাতার গেঞ্জিকে টি-শার্ট বলে আখ্যায়িত করা হয়। মূলত শিল্প বিপ্লবের পর থেকে ধীরে ধীরে এর প্রচলন শুরু হয়। ফ্যাক্টরিতে যে সকল শ্রমিক কাজ করত তাদের কাজকে গতিশীল করার লক্ষ্যে সহজ পরিধেয় এই টি-শার্ট পরতে দেয়া হতো। কারণ টি-শার্ট পরতে যেমন আরাম তেমনি এটা ঘাম শুষে নেয়। যার ফলে ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে টি-শার্ট। কালের পরিক্রমায় টি-শার্টের প্রচলন বৃদ্ধি ঘটতে থাকে। প্রয়োজনের গ-ি পেরিয়ে টি-শার্ট বর্তমানে রূপ নিয়েছে ফ্যাশনে। ফ্যাশনসচেতন মানুষের কাছে টি-শার্ট যেন অপরিহার্য একটি পোশাক। আর এ গরমে তো কথাই নেই। নিত্যদিনের অনুষঙ্গ হিসেবে টি-শার্ট এখন সকলের কাছে গণ্য। টিশার্ট মূলত ক্যাজুয়াল ড্রেস হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তরুণ প্রজন্মের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি পোশাক। বন্ধুদের আড্ডা, ক্যাম্পাস, কিংবা রিলাক্স মুডের জন্য টি-শার্ট যেন অপরিহার্য। তার মধ্যে ফ্যাশনের ছোঁয়া এর দীপ্তিময়তা ছড়িয়েছে বহুগুণে, যে কারণে শুধুমাত্র টি-শার্টকেন্দ্রিক গড়ে উঠেছে অনেক ফ্যাশন হাউজ। শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেট যেন টি-শার্ট রাজ্য। এখানে প্রায় প্রতিটি শো-রুমেই টি-শার্টের বিশাল ভা-ার খুঁজে পাওয়া যাবে। টিশার্টের চাহিদার পাশাপাশি এর বিক্রিও ভাল। এ সম্পর্কে টি-শার্ট ডিজাইনার রাতুল হাসান জানান, বর্তমান তরুণ প্রজন্মের কাছে টি-শার্ট একটি অপরিহার্য উপাদান। টি-শার্ট জিন্স, গ্যাবার্ডিন বা নরমাল প্যান্ট যে কোনটির সাথে সহজেই মানিয়ে যায়। তাছাড়া পরেও বেশ আরাম। গরমে এর চাহিদা বেড়ে যায় অনেক গুণ। চাহিদার সাথে সঙ্গতি রেখে আমরা চেষ্টা করছি আরও ফ্যাশনেবল করে তুলতে। যাতে তরুণ প্রজন্মকে আরও বেশি আকৃষ্ট করে। এছাড়া দিবসভিত্তিক থিমগুলোও টি-শার্টের মাধমে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করি। যেমন স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, রবীন্দ্র, নজরুল জয়ন্তী, বৈশাখ, বসন্ত একুশে ফেব্রুয়ারি ইত্যাদি। অন্যান্য ডিজাইনের চেয়ে থিমভিত্তিক ডিজাইনগুলো ক্রেতাদের বেশি আকর্ষণ করে। সে কারণে আমরাও এর প্রতি যতœশীল হই। তবে শুধুমাত্র তরুণ প্রজন্ম নয়, সব বয়সীদের কথা মাথায় রেখেই টি-শার্ট ডিজাইন করে থাকি। টি-শার্টের এই ব্যাপকতার দিকটা লক্ষ্য রেখে বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজ গ্রীষ্মকাল জুড়ে আয়োজন করছে টি-শার্ট উৎসব। ফ্যাশন হাউজ প্লাস পয়েন্ট আজিজ সুপার মার্কেটের বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজ টি-শার্ট উৎসবের আয়োজন করেছে। ডিজাইন ভেরিয়েশন ছাড়াও নানা রকম আকর্ষণীয় অফার রয়েছে এই টি-শার্ট উৎসবে। একেকটি টি-শার্টের মূল্য পড়বে ১৬০ টাকা থেকে ৪৬০ টাকা পর্যন্ত। প্রচ- এ গরমে পথ চলার প্রশান্তি হিসেবে টি-শার্টের যেন কোন বিকল্প নেই। ফ্যাশনসচেতন মানুষের কাছে ক্যাজুয়াল ড্রেস মানেই যেন টি-শার্ট। ডিজাইন এবং রঙের ভেরিয়েশন টি-শার্টকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করে তুলছে। যে কারণে দিন দিন বেড়েই চলছে এর চাহিদা। মডেল : সেলিম ও প্রতিভা শাওন ছবি : সেজাদ খান, পোশাক : ফালাক
×