ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কলাগাছের তন্তু দিয়ে ব্যাগ তৈরি

প্রকাশিত: ১৩:৪০, ১৯ এপ্রিল ২০১৯

কলাগাছের তন্তু দিয়ে ব্যাগ তৈরি

সুইজারল্যান্ডের এক কোম্পানি ফিলিপিন্সের এক জংলি কলার গাছ কাজে লাগিয়ে পরিবেশবান্ধব ব্যাগ উৎপাদন করছে। বিশ্বে এই ব্র্যান্ডের চাহিদা বাড়ছে। আসলে কলা নয়, আবাকা বানানা গাছের তন্তু দিয়ে তৈরি কাপড়, যার নাম বানানাটেক্স। সেই তন্তু কলা থেকে নয়, বরং গাছের কা- থেকে নিষ্কাশন করা হয়। কুইস্টিয়ন ব্যাগ প্রস্তুতকারী কোম্পানি বানানাটেক্স সৃষ্টি করেছে। সুইজারল্যান্ডের এক পত্রিকা এই সাফল্যের জন্য তাদের একটি ডিজাইন পুরস্কারও দিয়েছে। সুইজারল্যান্ডের জুরিখ শহরে কুইস্টিয়ন কোম্পানির সদর দফতর। গত কয়েক বছরে কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতারা নানা রকম টেকসই উপাদান নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। কোম্পানিরসহ প্রতিষ্ঠাতা ক্রিস্টিয়ান কেগি বলেন, ‘আমরা সুতি নিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম। অরগ্যানিক কটন ফ্যাব্রিক তৈরি করতে কয়েক বছর সময় কাটিয়েছিলাম। একই সময়ে আমরা লিনেন, হেম্প ও বাঁশ নিয়েও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছি। এই প্রক্রিয়ায় কলার তন্তুর বিষয়ে জানতে পেরেছিলাম। সঙ্গে সঙ্গে তার সম্ভাবনা বুঝে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। এ্যাবাকা ম্যানিলা হেম্প বলেও পরিচিত। ফিলিপিন্সে এই কলাগাছ দেখা যায়। ঊনবিংশ শতাব্দী থেকে তা দিয়ে দড়ি ও মাছ ধরার জাল তৈরি করা হচ্ছে। কোন প্ল্যান্টেশন নয়, জঙ্গলে এই বুনো কলার গাছ পাওয়া যায়। কোন সেচ পদ্ধতি, সার বা কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না। তার তন্তু কাছেই শুকানো হয় এবং পরে কাগজে পরিণত করা হয়। ক্রিস্টিয়ান কেগি বলেন, ‘কলাগাছের তন্তু পাকিয়ে সুতায় পরিণত করে তা বুনলে অত্যন্ত অসম সারফেসের কাপড় তৈরি হয়। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন প্রক্রিয়া হিসাবে এই কাগজ তৈরি করলে তা সমান হয়ে যায়।’ তাইওয়ানে বিশেষ এক বয়ন কেন্দ্রে সেই কাগজ থেকে কাপড় তৈরি হয়। সরু করে কাগজ কেটে সুতা তৈরি করে তা বোনা হয়। সেই কাপড় চীনে রফতানি করে তা দিয়ে থলে তৈরি হয়। সেখানকার কাজের পরিবেশ ইইউ মানদ-ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ব্যাগের ডিজাইনও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সব খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে ভাবনাচিন্তা করা হয়েছে। তার স্টাইল বেশ হালকা মেজাজের ও বাস্তবধর্মী। গোটা বিশ্বে প্রায় ২০০টি দোকানে এই পণ্য বিক্রি হচ্ছে। কলার তন্তু দিয়ে তৈরি ব্যাগের দাম প্রায় ২২০ ইউরোর মতো। বর্তমানে মডেলের সংখ্যা সীমিত হলেও আরও ডিজাইন নিয়ে কাজ চলছে। কুইস্টিয়ন কোম্পানির আর এক সহ প্রতিষ্ঠাতা ক্রিস্টিয়ান শ্যোনেগার বলেন, ‘এই প্রক্রিয়ার সময় আমরা বুঝতে পারি, যে অনেক কোম্পানি এই পণ্য পরখ করে দেখতে আগ্রহী। আসলে এমন চাহিদা দেখে আমরা কিছুটা অবাক হয়েছিলাম। বিভিন্ন শিল্পক্ষেত্রে টেকসই উপাদানের প্রয়োজনীয়তার মাত্রাও আমাদের ভাবিয়েছিল।’ সুইজারল্যান্ডের এই ব্র্যান্ড পরিবেশ সচেতন প্রভাবশালী মানুষের জন্য শহুরে ব্যাগ তৈরি করে। কখনও সেই ব্যাগ আর ফ্যাশনদুরস্ত মনে না হলে সেটি পচিয়ে ফেললেই চলবে!
×