ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পেঁয়াজের মালা উপহার শতাব্দীকে

প্রকাশিত: ০১:৪৭, ১৯ এপ্রিল ২০১৯

পেঁয়াজের মালা উপহার শতাব্দীকে

অনলাইন ডেস্ক ॥ ভোটের প্রচারণায় এসে এক চাষির কাছ থেকে পেঁয়াজের মালা ‘উপহার’ পেলেন বীরভূমের তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়। এমন অভিনব উপহার পেয়ে শতাব্দীও মজা করে ওই চাষিকে বললেন, ‘ধন্যবাদ আপনাকে, হাত মেলান। আগামী বেশ কয়েক মাস আর আমাকে রান্নার জন্য বাজার থেকে পেঁয়াজ কিনতে হবে না।’ বৃহস্পতিবার লোবা এলাকায় প্রচারণায় গিয়েছিলেন শতাব্দী রায়ের। দুবরাজপুর থেকে বেরিয়ে উত্তরডাহা ধগড়িয়া, পলাশডাঙা গ্রামে ভোট প্রচার সেরে লোবায় পৌঁছে লোবা কালী বাড়িতে পূজা দেন তিনি। হুড খোলা গাড়িতে প্রচারের ব্যবস্থা ছিল। লোবা থেকে ফরিরবেড়া গ্রামে এসে প্রচারণা চালানোর সময় এলাকার এক পেঁয়াজ চাষি শেখ আতাউল বিদায়ী সাংসদকে মস্ত একটি পেঁয়াজের মালা উপহার দেন। তবে বিরোধীরা কটাক্ষ করে বলছে, আলুর রোগ লেগেছে পেঁয়াজেও। বেশি ফলনের জন্য এবার পেঁয়াজের দাম তলানিতে ঠেকেছে। ন্যায্য দাম না পাওয়ার জন্য রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনে নেমেছেন পেঁয়াজ চাষিরা। কয়েকদিন আগে রাস্তায় পেঁয়াজ ফেলে হুগলির পান্ডুয়া, পোলবা ও বলাগড় ব্লকে প্রতিবাদ করেছেন চাষিরা। বলাগড়েই মাত্র ১৭ দিনের ব্যবধানে আত্মহত্যা করেছেন দুই চাষি। বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠেছে রাজ্য সরকারকে সহায়ক মূল্যে পেঁয়াজ ও আলু কিনতে হবে। এমন পরিস্থিতিতে সেখানে শাসকদলের প্রার্থীকে পেঁয়াজের মালা ‘উপহার’ নাকি ‘উপহাস’ তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। জেলার এক সিপিএম নেতা বলেন, পেঁয়াজের দাম খোলা বাজারে মাত্র ৭ টাকা। তাহলে চাষির কাছ থেকে সেই পেঁয়াজ কত দামে কেনা হচ্ছে তা সহজেই অনুমান করা যায়। পেঁয়াজ আলু উৎপাদন করে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। তাই সেটাকে উপহার বলি কী করে? শতাব্দী এবং সেই চাষি, দু’জনেই অবশ্য দাবি করছেন, পেঁয়াজের মালা নিছকই উপহার। এর পেছনে অন্য কোন মানে খোঁজা উচিত নয়। শতাব্দীর বক্তব্য, এটা অবশ্যই উপহার। কারণ বাংলায় মোদির শাসন চলে না, যে কৃষকরা উপেক্ষিত থাকবেন। যখনই রাজ্যে চাষিরা সমস্যায় পড়েছেন, তখনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের পাশে থেকেছেন। শেখ আতাউলও জানিয়েছেন, পেঁয়াজের দাম কম ঠিকই, কিন্তু ফলন খুব ভাল হয়েছে। তার মতো হতদরিদ্র চাষির পক্ষে প্রিয় প্রার্থীকে উপহার দেওয়ার মতো আর কিছু ছিল না। তাই পেঁয়াজের মালা দিয়েছেন। রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমার দফতরের কাজ, পেঁয়াজ চাষে উৎসাহ দেওয়া। সেটা সফল। আগে মহারাষ্ট্রের নাশিক থেকে যে পরিমাণ পেঁয়াজ আনতে হতো তা এখন আনতে হয় না। দামের বিষয়টা কৃষি বিপণন দফতর দেখে। তবে, আমি নিশ্চিত, মুখ্যমন্ত্রী চাষিদের পাশে দাঁড়াবেন। আদর্শ নির্বাচনী বিধি চালু রয়েছে বলে হয়তো প্রতিশ্রুতি দিতে পারছেন না। বিরোধীরা অহেতুক সমালোচনা করছে বলেও দাবি করেন তিনি।
×