ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নওগাঁয় ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

প্রকাশিত: ০৪:৩৬, ১৯ এপ্রিল ২০১৯

  নওগাঁয় ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ ॥ নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার আত্রাই নদীর মহিষবাথান ঘাটে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে নদীর তীর ঘেঁষে অবাধে বালু উত্তোলনে বাঁধের কংক্রিটের ব্লক (সিসি) ধসে পড়ে হুমকির মুখে পড়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ। এতে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে বাঁধে ভাঙন দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তীরবর্তী বাসিন্দারা। বাঁধটি ভেঙে পড়লে সরকারি খাদ্য গুদাম, সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ১৪-১৫টি এনজিও অফিসসহ অন্তত ৬ টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়বে। জানা গেছে, মহিষবাথান ঘাটে একই স্থানে সারি বেধে ১০ থেকে ১২টি ড্রেজার বসিয়ে এক বছরের বেশি সময় ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে একটি প্রভাবশালী মহল। নদীর তলদেশে গভীর গর্ত করে খননযন্ত্র দিয়ে বালু উত্তোলন করায় সিসি ব্লকের নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে সিসি ব্লক নদীতে ধসে পড়ছে। ফলে ফসলি জমিসহ বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। বালু উত্তোলনে ওই এলাকার প্রায় অর্ধ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের বিভিন্ন স্থান নদীতে ধসে পড়ায় গত ১৬ এপ্রিল (মঙ্গলবার) এলাকাবাসী বালু উত্তোলনে বাধা প্রদান করে। সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে “মহাদেবপুরে নীতিমালা উপেক্ষা করে বালু উত্তোলনের মহোৎসব” শিরনামে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় নড়ে চরে বসে উপজেলা প্রশাসন। সে সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোবারক হোসেন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসমা খাতুন ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেয়। প্রশাসনের বাধার মুখে বালু উত্তোলনকারীরা কয়েকটি ড্রেজার মেশিন তুলে নেয়। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে চলে আসার পর তারা আবারও ড্রেজিং করে বালু তুলতে থাকে। প্রশাসনের বাধা উপেক্ষা করে বালু উত্তোলন করলে বুধবার সন্ধ্যায় ইউএনও আবারও ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আগমন টের পেয়ে বালু উত্তোলনকারী ও ট্রাক ড্রাইভাররা ট্রাক ফেলে পালিয়ে গেলে ট্রাকের চাকার হাওয়া ছেড়ে দেয়া হয়। বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০-এর ধারা ৫-এর ১ উপধারা অনুযায়ী, পাম্প, খননযন্ত্র (ড্রেজিং) বা অন্য কোনো মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ বালু বা মাটি উত্তোলন করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ধারা ৪ এর (খ) অনুযায়ী সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারেজ, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেল লাইন ও অনান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা হইলে অথবা আবাসিক এলাকা হইতে সর্বনিম্ন ১ কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু আত্রাই নদী থেকে বালু তোলার ক্ষেত্রে আইন মানা হচ্ছে না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোবারক হোসেন জানান, ‘মহিষবাথান ঘাটে তিন দফায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। খননযন্ত্র ব্যবহার করা দ-নীয় অপরাধ। নীতিমালা লঙ্ঘন করে কেউ বালু তুললে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
×