ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মানসিক ভারসাম্য হারানো নারীর সন্তান প্রসব

প্রকাশিত: ০৮:২৫, ১৯ এপ্রিল ২০১৯

 মানসিক ভারসাম্য হারানো নারীর সন্তান প্রসব

স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা ॥ পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার খালগোড়া বাজারের নির্জন বালুর মাঠে শুক্রবার ভোর রাতে মানসিক ভারসাম্য হারানো এক নারী সন্তান প্রসব করেছে। ওই নারী নিজেও জানে না, তার এই সন্তানের বাবা কে? এ নিয়ে এলাকায় চলছে তোলপাড়। মানুষের মুখে মুখে ফিরছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। পুলিশও এ খবরে নড়েচড়ে বসেছে। পুলিশের মতে-এটি রীতিমতো জগন্য অপরাধ। রাতের শেষ প্রহরে যখন চারদিকে নীরব নিস্তব্ধ পরিবেশ। হঠাৎ নির্জন বালুর মাঠ থেকে ওই নারীর কণ্ঠে আহাজারির শব্দ ভেসে আসছিল। করুণ আহাজারি সইতে না পেরে পার্শ্ববর্তী বাড়ির দুই নারী ঘটনাস্থলে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে তারা বাচ্চা প্রসব হওয়া মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারী ও তার পাশেই সদ্য ভূমিষ্ঠ কন্যা শিশু সন্তান দেখতে পান। তখনও মা এবং শিশুটির সারা গায়ে রক্ত ছিল। পরে পারুল নামের এক মহিলা শিশুটির নাড়ি কেটে ওই নারীকেসহ নিজের ঘরে নিয়ে যান। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক বছরের বেশি সময় ধরে অজ্ঞাত পরিচয়ের এই নারী এলাকায় ঘোরাফেরা করছে। তার বয়স আনুমানিক ৩০-৩২ বছর। কথা বলতে পারে না। চার-পাঁচ মাস আগে সকলের নজরে পড়ে ওই নারী সন্তানসম্ভবা। তখন থেকেই এনিয়ে কানাঘুষা শুরু হয়। বর্তমানে ওই নারী নবজাতক শিশুটিকে নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা অহিদুল পাহলানের স্ত্রী পারুল বেগমের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। নিজের মেয়ে সন্তান না থাকায় পারুল বেগমই শিশুটির লালন-পালনের দায়িত্ব নিতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এ বিষয়ে পারুল বেগম বলেন, মানসিক ভারসাম্য হারানো ওই মহিলার দুরবস্থা দেখে নিজের বাড়িতে নিয়ে এসেছি। মহিলা অসুস্থ হওয়ায় ডাক্তার দেখিয়েছি। এখন মা-মেয়ে দু জনই সুস্থ আছে। তিনি আরও বলেন, আমার তিন ছেলে সন্তান। কোন মেয়ে নেই। তাই আমি এ বাচ্চাটাকে আমার সন্তানের মতো করে মানুষ করতে চাই। কিন্তু অনেকে আমার কাছ থেকে নিয়ে যেতে চাইছে। খালগোড়া বাজারের ব্যবসায়ী কালু হাওলাদার বলেন, প্রায় এক বছর ধরে পাগলি খালগোড়া বাজারে থাকে। কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদেরকে শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। বাজারের আরেক ব্যবসায়ী নিদির শীল বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক ও লজ্জাজনক ঘটনা। তদন্তসহ অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। এ ব্যাপারে রাঙ্গাবালী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আলী আহম্মেদ বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। এরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। তদন্ত করে এবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোনক্রমে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
×