ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আশা শেষ হয়ে যায়নি আমিরের

প্রকাশিত: ১২:০৪, ২০ এপ্রিল ২০১৯

  আশা শেষ হয়ে  যায়নি আমিরের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ইনজুরির কারণে বেশ কিছুদিন খেলার বাইরে থাকলেও মিচেল স্টার্ক আর প্যাট কামিন্সকে বিশ্বকাপ দলে অন্তর্ভুক্ত করেছে ‘ডিফেন্ডিং’ চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। লিয়াম প্লাঙ্কেটের মতো অভিজ্ঞ পেসারকে ফিরিয়েছে আয়োজক ইংল্যান্ড। ডেল স্টেইনও জায়গা করে নিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকা দলে। কারণ ইংলিশ কন্ডিশনে অভিজ্ঞ এই পেসাররাই পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। সেখানে ব্যতিক্রম পাকিস্তান। অফ-ফর্মের জন্য বিশ্বকাপ স্কোয়াডে নেই মোহাম্মদ আমির। অথচ দেশটির সাবেক দুই কিংবদন্তি ওয়াসিম আকরাম এবং শোয়েব আকতার দৃঢ়তার সঙ্গে বলছেন, অভিজ্ঞ বাঁ-হাতিই হয়ে উঠতে পারেন তুরুপের তাস, যেমনটা হয়েছিল ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের ক্ষেত্রে। দল ঘোষণার একদিন পর এবার খোদ প্রধান নির্বাচক ইনজামাম উল হক জানালেন, আশা শেষ হয়ে যায়নি, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে ভাল করলে বিশ্বকাপে ফেরার সুযোগ থাকবে আমিরের। ইনজামাম বলেন, আমির ও আসিফ আলীর বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ এখনও আছে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভাল করতে পারলেই ওরা সুযোগ পাবে। আমরা আশা করছি আমির-আসিফ ভাল কিছু করে দেখাবে। কারণ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমিরের অভিজ্ঞতা অনেক। অতীতে ইংল্যান্ডের কন্ডিশনেও সে ভাল করেছে। গত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে রেকর্ড তেমনই বলে। আর আসিফ মারকুটে ব্যাটসম্যান। বড় ইনিংস খেলতে পারলে সেও বিশ্বকাপের দলে সুযোগ পেতে পারে। উল্লেখ্য, ৩১ মে নটিংহামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে পাকিস্তান। তার আগে ইংল্যান্ডের সঙ্গে সিরিজ খেলতে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহেই উড়াল দেবে সরফরাজ আহমেদের দল। ৫ মে কার্ডিফে একমাত্র টি২০’র পর ৮ মে শুরু পাঁচ ওয়ানডে সিরিজ। বিশ্বকাপ দল ঘোষণার পরও আইসিসির নিয়নুযায়ী আগামী ২৩ মে পর্যন্ত দলে পরিবর্তন করা যাবে। সেই সুবাদে আমির-আসিফের বিশ্বকাপে সুযোগের কথা বললেন ইনজামাম। ইংল্যান্ডে আমিরের রেকর্ড খুবই ভাল। ২০১৭ সালে এখানেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে দুর্দান্ত বোলিং করে দলকে জিতিয়েছিলেন। বড় সংগ্রহ তাড়া করতে নামা ভারতের ইনিংসে ৯ ওভারের মধ্যে সেরা তিন ব্যাটসম্যান শিখর ধাওয়ান, রোহিত শর্মা আর বিরাট কোহলিকে তুলে নিয়ে শিরোপা জয়ের রাস্তাটা তিনিই তৈরি করে দিয়েছিলেন। সেই আমিরই এবার নেই ইংল্যান্ডের মাটিতে বিশ্বকাপে। সিদ্ধান্তটা নিঃসন্দেহে কঠিন ছিল ইনজামামের নেতৃত্বাধীন নির্বাচক কমিটির জন্য। কিন্তু পরিসংখ্যান তো আমিরকে বাঁচানোর পক্ষে কথা বলেনি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর দুই বছরে ওয়ানডেতে ১০১ ওভার বল করে মাত্র ৫ উইকেট নিতে পেরেছেন। গড় ৯২.৬০। এই সময়ের মধ্যে বিশ্বব্যাপী অন্তত ৬০০ বল করেছেন, এমন বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে বাজে পারফর্মেন্স এটিই। তবে আরেকটি পরিসংখ্যান কিন্তু আমিরের পক্ষে। নিজের খারাপ সময়েও আমির ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন ৪.৫৮। আধুনিক ক্রিকেটে যাকে বেশ সমীহ জাগানিয়াই বলা যায়। খারাপ সময় কাটালেও আমিরের ক্যারিয়ারে ওভারপ্রতি রান দেয়ার গড় এখন ৪.৭৮। অর্থাৎ উইকেট না পেলেও ব্যাটসম্যানদের ক্রিজে আটকে রাখার কাজটা বেশ ভালভাবেই করতে জানেন এই বাঁহাতি। এই দিকটি বিবেচনার সঙ্গে অভিজ্ঞতাকে সামনে রাখলে আমির বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পেতেই পারতেন। সেটা হয়নি। যদিও ২৭ বছর বয়সী এই পেসারের এখনই যে সব শেষ হয়ে গেছে এমনও নয়। নির্বাচকরা তারজন্য একটি সুযোগ রেখেছেন। বিশ্বকাপের ১৫ সদস্যের দলে জায়গা না হলেও ইংল্যান্ড সফরে আছেন আমির। সেখানে ভাল করলে বিশ্বকাপ মঞ্চেও পা রাখার সুযোগ আসবে। সেটা প্রধান নির্বাচক ইনজামাম নিজেই জানিয়ে দিলেন। আমিরের সামনে সে সুযোগটা আসতে পারে। সাবেক গতিতাকরা শোয়েব আখতারেরও বিশ্বাস আমির ফিরবে, আমি এখনও মনে করি ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে আমির ভয়ঙ্কর অস্ত্র হতে পারে।
×