ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাবেক এমপি আবদুল মজিদ আর নেই

প্রকাশিত: ০১:১১, ২০ এপ্রিল ২০১৯

সাবেক এমপি আবদুল মজিদ আর নেই

অনলাইন রিপোর্টার ॥ সুনামগঞ্জের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ বীরমুক্তিযোদ্ধা সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবদুল মজিদ মাস্টার আর নেই (ইন্নালিল্লাহি...রাজিউন)। শনিবার সকাল ৮ টা ৪৫ মিনিটে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার মৃত্যুতে সুনামগঞ্জের রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শোক জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষজন। তারা শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন বিভিন্ন মহল। মরহুমের মরদেহ সিলেট থেকে সুনামগঞ্জের বাসায় নিয়ে আসার পর আজই তাকে পারিবারিক গোরস্তানে দাফন করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বজনরা। তিনি দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের টেংরাটিলা (শান্তিপুর) গ্রামের বাসিন্দা। সুনামগঞ্জ-৫ (ছাতক-দোয়ারাবাজার) আসনের সাবেক এই সংসদ সদস্য গত ১০ দিন ধরে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্টজনিত কারণে আইএলডি রোগে ভুগছিলেন। উল্লেখ্য, বীরমুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আবদুল মজিদ মাস্টার জেলা তথা ছাতক-দোয়ারাবাজার উপজেলার এক বর্ষীয়ান ও কিংবদন্তি রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। দেশ স্বাধীনের পর তিনি ১৯৯১ সালে সুনামগঞ্জ-৫ (ছাতক-দোয়ারাবাজার) আসন থেকে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দোয়ারাবাজার উপজেলার বাসিন্দা হিসেবে তিনি ওই আসনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৮০ সালে শিক্ষকতার পেশায় মনোনিবেশ করে টানা ১০ বছর দোয়ারাবাজার মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি অনুন্নত ও শিক্ষাবঞ্চিত এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেয়ার এক প্রাণ পুরুষ। পরে তিনি জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তার সময়ে দোয়ারবাজার উপজেলার পুরো রূপরেখা প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন থেকে উপজেলায় প্রথম বিদ্যুতায়নসহ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের রূপরেখা বাস্তবায়িত হয়। তার আমলে দোয়ারাবাজার কলেজ বর্তমানে দোয়ারাবাজার সরকারি কলেজ, দোয়ারাবাজার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, উচ্চ বিদ্যালয়, উপজেলা সদরে প্রথম বিদ্যুতায়ন, রাস্তাঘাট, সেতু, কালভার্ট নির্মাণ তার হাত ধরেই ওইসব প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্প আলোর মুখ দেখে। সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিসরে তিনি ছিলেন জেলাবাসীর কাছে স্বজন জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। ১৯৮৯ সালে তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি আইন পেশায় জড়িত হন। তার পেশায় তিনি এখনও সফল ব্যক্তি। মূলত আইন পেশা থেকে তিনি সুনামগঞ্জ জেলার সর্বস্তরের মানুষের কাছে পরিচিত হয়ে ওঠেন। এক কর্মদক্ষ ব্যক্তি হিসেবে সুনামগঞ্জে সব মহলে সমানভাবে সমাদৃত ছিলেন। ২০০৯ সাল থেকে ৫ বছর তিনি সুনামগঞ্জ জজকোর্টের কৌঁসুলির (পিপি) দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি জেলা জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং জেলাজুড়ে জাতীয় পার্টিকে সুসংগঠিত করেন। ২০০৯ সালে সুনামগঞ্জ-৪ (সদর-বিশ্বম্ভরপুর) আসনের জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য বেগম মমতাজ ইকবালের মৃত্যুর পর তিনি জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি নির্বাচিত হন। এ ছাড়া তিনি জেলা পরিষদ প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে প্রথমবারের মতো জেলা পরিষদ সদস্য মনোনীত হয়েছিলেন।
×