ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নওগাঁর সাপাহারে সোলার চালিত পাতকুয়া দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ২০ এপ্রিল ২০১৯

নওগাঁর সাপাহারে সোলার চালিত পাতকুয়া  দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ ॥ উত্তরের বরেন্দ্র জেলা নওগাঁর সীমান্ত ঘেঁষা উপজেলা সাপাহার। যা ঠাঁ-ঠাঁ বরেন্দ্র এলাকা হিসেবে পরিচিত। বছরের চৈত্র-বৈশাখে বিশেষ করে খরা মৌসুমে খাবার বিশুদ্ধ পানির বড়ই অভাব। এখনো বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ কুপের (কুয়ো) পানি পান করে থাকে। মাটির নীচে শীলা মিশ্রনের ফলে টিউবওয়েল বসানো যায় না। বাধ্য হয়ে মানুষ পুকুর ও কুপের পানি পান করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। এ যেন কষ্টের শেষ নেই। পানির কষ্ট লাঘব করতে বাংলাদেশের কৃষিমন্ত্রনালয়ের উদ্ভাবনে দেশের ঠাঁঠাঁ বরেন্দ্র এলাকা সমূহে “পাতকুয়া খননের মাধ্যমে পানীয় জল ও স্বল্পসেচে সব্জিচাষ প্রকল্প” নামে একটি প্রকল্প হাতে নেয়। যার বাস্তবায়ন কাজ প্রায় শেষের দিকে। ইতোমধ্যেই প্রকল্পটি নওগাঁর সাপাহার বরেন্দ্র বহুমুখি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সহযোগীতায় এলাকায় পানীয় জল সমস্যা সমাধান ও স্বল্পসেচে সব্জিচাষে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। সাপাহার বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সহকারী প্রকৌশলী মোঃ রেজাউল করিম ও সহকারী প্রকৌশলী জাকারিয়া জানান, বিগত ২০১৭সালের দিকে দেশের এসব এলাকার কথা চিন্তা করে তৎকালীন কৃষি মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বরেন্দ্র এলাকায় স্বল্পসেচে সব্জি চাষসহ পানীয় জলের সমস্যা সমাধানের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওই সব এলাকায় সংকট মোকাবিলায় সমস্যা সমাধানের বিভিন্ন উপায় নিয়ে চিন্তাভাবনা করেন। অবশেষে মন্ত্রনালয়ের সফল প্রচেষ্টা ও তাদের নিজস্ব উদ্ভাবনে একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করে মন্ত্রনালয়ে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। বরেন্দ্রর সহকারী প্রকৌশলী রেজাউল করিম জানান, প্রতিটি পাতকুয়া মেশিনের মাধ্যমে ১শ’ থেকে ১৪০ ফুট খনন করা হয়। এর পর ওই খননকৃত কুপে ৪৬ ইঞ্চি ব্যাসের সিমেন্ট বালি ও ইটের খোয়াদ্বারা নির্মিত রিং বসানো হয়। কুপের উপরে লোহার এঙ্গেল দিয়ে নির্মিত ৩২ ফুট ব্যাসার্ধের একটি ঢাকনা স্থাপন করা হয়ে থাকে। এর পর কুয়া থেকে পানি উত্তোলনের জন্য ঢাকনার উপরিভাগে ২৫০ওয়াটের ১৬টি সোলার প্যানেল বসানো থাকে। এছাড়া ঢাকনাটি এমন ভাবে বসানো হয়, যাতে করে বৃষ্টির পানি ঢাকনা চুয়ে কুপের মধ্যে পড়তে না পারে। যার ফলে সুফলভোগী ওই কৃষক কিষানীগন পানীয় জল সংগ্রহ সহ সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সোলারের মাধ্যমে পানি উত্তোলন করে তাদের শাক সব্জিতে দিতে পারে। কুপগুলিতে কোন ব্যাটারী কিংবা বিদ্যুত সরবরাহ না থাকায় শুধু দিনের মধ্যে প্যানেলের মাধ্যমে যতটুকু পানি কুপ হতে উত্তোলন করা হয়, সারা রাতে তা আবার যেন পূর্বের লেয়ারে ফিরে আসতে পারে।
×