ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নিজের বিয়ে ঠেকিয়ে দিল রাঙ্গুনিয়ার স্কুলছাত্রী

প্রকাশিত: ০৯:০৩, ২১ এপ্রিল ২০১৯

নিজের বিয়ে ঠেকিয়ে দিল রাঙ্গুনিয়ার স্কুলছাত্রী

নিজস্ব সংবাদদাতা, রাঙ্গুনিয়া, ২০ এপ্রিল ॥ রাঙ্গুনিয়ায় নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকিয়ে দিয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ১৪ বছর বয়সের শারমিন আক্তার নামে এক শিক্ষার্থী। সে উপজেলার পোমরা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী। বাবা-মা জোরপূর্বক তার বিয়ের আয়োজন করলে সে বিষয়টা সাহস নিয়ে প্রধান শিক্ষককে জানায়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে বাল্যবিয়েটা প- হয়ে যায়। শারমিন বলেন, ‘পরিবারে আমি একমাত্র মেয়ে। আমার বাবা ভ্যান চালায়, বড় ভাই সিএনজি অটোরিক্সা চালক ও মেঝো ভাই অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে। হঠাৎ মা-বাবা আমার বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। আমি বলছি যে, আমি ছোট, এখন বিয়ে নয়, পড়ালেখা করব। তাছাড়া আমার এক জায়গায় বিয়ে হলে তোমরা তো বুঝবে না যে স্বামীটা ভাল। যদি স্বামী খারাপ হয়, আমাকে ছেড়ে দে, তারপর! কিন্তু তারা শোনে নাই’। বাবা কথা না শোনায় অবশ্য দমে যায়নি সে। স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সাহায্যে স্থানীয় প্রশাসনকে তার বিয়ের কথা জানায় শারমিন। প্রশাসনের হস্তেক্ষেপে থেমে যায় বিয়ে। তার এমন সাহসিকতায় মুগ্ধ সকলে। সে আরও বলে, ‘মনে হচ্ছিল বিয়ে হলে জীবনটা এখানেই শেষ। আমি পড়ালেখা করে আরও বড় হতে চাই।’ পোমরা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদ সভাপতি মফজ্জল আহমদ কন্ট্রাক্টর বলেন, ‘উপজেলার পোমরা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাদেরীয়া পাড়া এলাকার মোঃ মিজানের দুই ছেলে ও ১ মেয়ের মধ্যে সবার ছোট সন্তান শারমিন আক্তার। সে বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ালেখা করছে। শনিবার সকাল ৯টার দিকে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে ছাত্রীটি এসে কান্না করছিল এবং বলছিল, বাবা-মা তার বিয়ে ঠিক করেছে এবং রবিবার ফেনীতে নিয়ে আপন খালাত ভাইয়ের সঙ্গে তার বিয়ে দেয়ার যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েছে। তাৎক্ষণিক বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তিনি নিজে গিয়ে বাল্যবিয়েটি বন্ধ করে দেন।’
×