ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

৮০ লাখ নাগরিকের ডাটাবেজ সংগ্রহ করবে ইসি

প্রকাশিত: ১০:২৯, ২১ এপ্রিল ২০১৯

৮০ লাখ নাগরিকের ডাটাবেজ সংগ্রহ করবে ইসি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভোটার তালিকা হালনাগাদে এবার ৮০ লাখ নাগরিকের ডাটাবেজ সংগ্রহ করবে ইসি। এই নাগরিকদের মধ্যে যেমন থাকবে ভোটার হওয়ারযোগ্য নাগরিকের তথ্য। এর বাইরে যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়নি তাদের তথ্য থাকবে। এছাড়া ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যারা আগে কোন কারণে ভোটার হতে পারেননি তারাও উপযুক্ত কারণ দেখিয়ে ভোটার তালিকায় নাম লেখাতে পারবেন। তারা জানায়, এবার নতুন যারা ভোটার হবেন তাদের চূড়ান্ত তালিকা আগামী বছর ৩১ মার্চ প্রকাশ করা হবে। নতুন ভোটারদের লেমিনেটিং করা জাতীয় পরিচয়পত্র সরবরাহ করা হবে না। এর পরিবর্তে তাদের প্রত্যেককে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া হবে। ভোটার হওয়ার যোগ্য নাগরিকের তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি যারা ইতোমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের নামও ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেয়া হবে। এজন্য মৃত ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এইসঙ্গে কেউ ইচ্ছে করলে হালনাগাদের সময় ভোটার এলাকা পরিবর্তনও করতে পারবেন। নতুন ভোটার হতে বা ভোটার এলাকা স্থানান্তরিত করতে কোন অর্থের প্রয়োজন হবে না বলে জানিয়েছেন ইসি কর্মকর্তারা। বর্তমানে দেশে মোট ভোটার রয়েছে ১০ কোটি ৪২ লাখ। আইন অনুযায়ী একবার কারো নাম ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর দ্বিতীয়বার ভোটার হওয়ার কোন সুযোগ নেই। ইসি ডাটাবেজে প্রত্যেক ভোটারের তথ্য সংগৃহীত রয়েছে। দ্বিতীয়বার ভোটার হতে গেলে আঙ্গুলের ছাপের সঙ্গে মিলে যাবে। আইনে দ্বিতীয়বার ভোটার হলে তার জেল জরিমানার বিধানও রাখা হয়েছে। ২০০৮ সালে দেশের প্রথমবারে মতো ভোটার তালিকা তৈরির পাশাপাশি জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া হয় ভোটারদের। সেই থেকে এখন পর্যন্ত ইসি ভোটার হওয়ার যোগ্য নাগরিকের তথ্য হালনাগাদ করে আসছে। এভাবে ভোটার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিবছর ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার কথা থাকলেও জাতীয় নির্বাচন এবং অন্যান্য কারণে গত দুই বছরে হালনাগাদের কাজ করা সম্ভব হয়নি। আগের ইসির পক্ষ থেকে হালনাগাদের সময় কয়েক বছরের তথ্য একসঙ্গে সংগ্রহ করা হয়েছিল। এবারও চার বছরের নাগরিকের তথ্য একসঙ্গে সংগ্রহ করা হবে হালনাগাদের সময়। ইসি কর্মকর্তারা জানান, ২৩ এপ্রিল থেকে দেশের সব জেলায় ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শুরু হবে। এতে প্রথম পর্যায়ে দেশের ১৩৫ উপজেলায় নাগরিকের তথ্য নেয়া হবে। ১৩ মে প্রথম পর্যায়ের কাজ চলবে। পরের ধাপে কত উপজেলায় তথ্য নেয়া হবে তা পরবর্তীতে জানিয়ে দেয়া হবে। ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন এবারে ভোটার তালিকা হালনাগাদে ব্যয় ধরা হয়েছে সাড়ে ৮২ কোটি টাকা। তথ্য সংগ্রহের পর ২৫ মে থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম। তবে তথ্য সংগ্রহের সময় কেউ বাদ পড়লে রেজিস্ট্রেশনের সময়ও ভোটার হতে পারবেন। ইসি সচিব হেলালুদ্দিন জানান, এবার হালনাগাদে যুক্ত হওয়া নতুন ভোটাররা আগামী ৩১ জানুয়ারি তালিকাভুক্ত হবেন। জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহের সময় তাদের হাতে স্মার্টকার্ড দেয়া হবে। জানা গেছে, ২০১২ সালের পর থেকে যারা ভোটার হয়েছেন এমন নাগরিকের স্মার্টকার্ড দিতে পারেনি নির্বাচন কমিশন। তাদের লেমিনেটিং করা কার্ডই দেয়া হচ্ছে। ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তরুণদের ভোটার হতে উৎসাহ দিতেই এবার যারা তালিকাভুক্ত হবেন তাদের স্মার্টকার্ড দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ইসি সচিব জানিয়েছেন, এবারের ভোটার তালিকায় হিজড়ারা তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি পাচ্ছে। তাদের জন্য থাকছে আলাদা ভোটার তালিকা। লিঙ্গ পরিচয়ের স্থানে পুরুষ, নারীর পাশাপাশি তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে হিজড়াদের নামও ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কমিশন জানায়, রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি কোন বিদেশী যাতে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে না পারে সে সেক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ভোটার হাওয়া ক্ষেত্রে ধর্মীয় কুসংস্কার এড়াতেও বিশেষ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। অনেক নারী ধর্মীয় কারণে ভোটার তালিকায় নাম লেখাতে চায় না। ছবি তুলতেও চায় না। এ ধরনের বাধা দূর করতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সচেতনতামূলত প্রচার কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে।
×