ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পেট্রাপোলে পণ্য শতভাগ পরীক্ষার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে কর্তৃপক্ষ

প্রকাশিত: ১১:০০, ২১ এপ্রিল ২০১৯

পেট্রাপোলে পণ্য শতভাগ পরীক্ষার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে কর্তৃপক্ষ

স্টাফ রিপোর্টার, বেনাপোল ॥ ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে আমদানি-রফতানি পণ্য চালান খালাস হওয়ার পূর্বে আনলোড করে শতভাগ পরীক্ষণের যে নির্দেশনা দিয়েছিল তা থেকে সরে এসেছেন বন্দর কর্তৃপক্ষ। পর্যাপ্ত জনবল, জায়গা, যন্ত্রপাতিসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা না থাকায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এতে খুশি আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা। আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা জানান, বিভিন্ন অব্যবস্থাপনায় এমনিতেই একটি পণ্য চালান ভারত থেকে আমদানি হতে পাঁচ থেকে শুরু করে অনেক ক্ষেত্রে ১৫ দিন পর্যন্ত সময় লেগে যায়। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া পেট্রাপোল বন্দরে আবার প্রতিটি পণ্য চালান শতভাগ পরীক্ষা করতে গেলে ভোগান্তি আরও কয়েকগুণ বেড়ে যেত। এর ফলে পণ্য খালাস একদিকে যেমন কঠিন হয়ে পড়ত তেমনি আমদানি খরচও বেড়ে যেত। যার প্রভাব পড়ত দেশীয় বাজারে। ব্যবসায়ীরা এই বন্দর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিত। জানা যায়, গত ১৬ এপ্রিল ভারতের পেট্রাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ সেখানকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয়, আমদানি-রফতানি পণ্য চালান খালাসের আগে পেট্রাপোল বন্দরে শতভাগ পরীক্ষা করতে হবে। যার স্মরক নম্বর ১১(২৬)১১৩/পিটিপিএল-আরডি/আইএমপি/এমআইএসসি/২০১৮-১৯/২৭২৫। এতে এদিন ভারত থেকে বাংলাদেশের বন্দরে পণ্য চালানের সব ট্রাক আটকে যায়। এতে টনক নড়ে ব্যবসায়ীদের। তারা কাস্টমসের উর্ধতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এমন সিদ্ধান্ত নিলে কি হবে তারও ব্যাখ্যা দেন। তারা বলেন, পেট্রাপোল বন্দরে পর্যাপ্ত জনবল, জায়গা, যন্ত্রপাতিসহ বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। পরে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে আগের নিয়মেই বন্দরে আমদানি-রফতানি করার কথা নিশ্চিত করেছেন পেট্রাপোল কাস্টমস এ্যান্ড স্টাফ ওয়েলফেয়ার এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কাত্তিক চন্দ্র দাস। ব্যবসায়ীরা জানান, বাংলাদেশের মতো পণ্য রাখার সেট নেই। নেই পর্যাপ্ত জায়গা। ফলে এমনিতেই সেখানে সারা বছর পণ্য জট লেগেই থাকে। ফলে মালামাল আমদানি-রফতানিতে মারাত্মক সমস্যা হয়। বিশেষ করে পচনশীল পণ্য আমদানি-রফতানিতে সমস্যা হয়ে থাকে। দেশে ২৩ স্থলবন্দরের মধ্যে চলমান ১৩ বন্দরের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর বেনাপোল। ১৯৭২ সাল থেকে এ পথে ভারতের সঙ্গে বেনাপোল বন্দরের বাণিজ্যিক যাত্রা। প্রতিবছর এ বন্দর দিয়ে ভারত থেকে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানি হয়ে থাকে। যা থেকে সরকারের প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজের কারণে প্রথম থেকে এ পথে বাণিজ্যে আগ্রহ বেশি ব্যবসায়ীদের। যশোর চেম্বারের সাবেক নেতা হুমায়ুন কবীর কবু বলেন, বেনাপোল বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি করতে গেলে বিভিন্ন সমস্যা হচ্ছে। বিশেষ করে ভারত থেকে পণ্য বোঝাই একটি ট্রাক বাংলাদেশে আসতে ১৫/২০ দিন সময় লাগছে। তার পরে আমার এমন সিদ্ধান্ত নেয়ার ফলে পণ্যের আমদানি খরচ বেশি হতো। সে কারণে এ বন্দর ব্যবহার কমিয়ে দিতেন আমদানিকারকরা। এটি বুঝতে পেরে পেট্রাপোল কাস্টমস তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসায় আমরা খুশি।
×