ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মাদারীপুরে বৈশাখী মেলার ৫‘শ বছরের ঐতিহ্য চড়কপূজা

প্রকাশিত: ০৮:২১, ২২ এপ্রিল ২০১৯

মাদারীপুরে বৈশাখী মেলার ৫‘শ বছরের ঐতিহ্য চড়কপূজা

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর ॥ মাদারীপুরে বৈশাখী মেলার ৫‘শ বছরের ঐতিহ্য চড়কপূজা ও চড়ক ঘুড়ানো দেখতে হাজারো দর্শনার্থীর ভিড় জমেছে রাজৈরে। মাঠ জুড়ে শুধু মানুষ আর মানুষ। মাঠের মধ্যে স্থাপন করা হয়েছে চড়কগাছ। চড়ক গাছের সঙ্গে বাঁশ দিয়ে তৈরি করা বিশেষ এক ধরণের চড়কায় ঝুলন্ত রশির সঙ্গে পিঠে লোহার তৈরি মোটা বড়শি গেঁথে রশি দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয় তিন যুবককে। তখন বাণ বিদ্ধ যুবকরা চকড়গাছের চতুর্পাশে দ্রুতবেগে ঘুরাতে থাকেন। এই দৃশ্য দেখে দর্শনার্থীদের মনে তৈরি হয় শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি। সবাই অবাক হয়ে আকাশের দিকে চেয়ে দেখে চড়কে ঘুরানো তিন যুবককে। রবিবার বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্তরাজৈর উপজেলার কদমবাড়ি বাজারের বালুর মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে এমনি এক শ্বাসরুদ্ধকর উৎসব। কদমবাড়ির স্থানীয় মন্টু গাইনের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় বৈশাখী মেলা। মেলাকে আকর্ষনীয় করে তুলতে মাঠের মধ্যে আয়োজন করা হয় চড়ক পূজা ও চড়ক ঘুড়ানো উৎসব। যা দেখতে ভিড় করেন দূর দূরন্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরা। আয়োজকরা জানান, চড়কপূজা বাংলাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লোকোৎসব। এই পূজাকে ঘিরেই চড়কঘুল্লার আয়োজন করা হয়। তবে রাজৈর এলাকায় চড়কপূজার আয়োজন ছাড়াও বিশেষ বিশেষ দিনে চড়কঘুল্লার আয়োজন করা হয়। এই বছর ৭দিন ব্যাপী বৈশাখী মেলাকে আকর্ষনীয় করে তুলতে মেলার শেষের দিন আয়োজন করা হয় এই চড়কঘুল্লার। চড়কঘুল্লায় অংশ নেয়া যুবকদের বিভিন্ন প্রকারের দৈহিক যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়। তাদের লোহার তৈরি বড়শি শরীরে গেঁথে মোটা রশির সাথে বেঁধে দ্রুতবেগে ঘুরানো হয় চকড়গাছের চতুর্পাশে। চড়কে ওঠা যুবকরা পিঠে, হাতে, পায়ে, জিহ্বায়, চোখের কোণে এবং শরীরের অন্যান্য অংশে বাণ শলাকা বিদ্ধ করা হয়। চড়ক পূজার আয়োজক ও কদমবাড়ি যুব সমাজের প্রধান সমন্বয়কারী মন্টু গাইন বলেন, ‘আমরা খোলা জায়গায় বৈশাখী মেলার আয়োজন করেছি। এই মেলাকে আকর্ষনীয় করে তুলতে চড়কঘুল্লার আয়োজন করেছি। আমাদের এখানে প্রতি বছর এই মেলা হয়ে আসছে। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবার অংশগ্রহণে মেলায় দর্শনার্থীদের সরগম বাড়তে থাকে। তাই দর্শনার্থীদের আনন্দ দিতেই আমরা এই চড়কঘুল্লার আয়োজন করেছি।’
×