ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

গাজীপুরে কাপাসিয়ায় স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যার পর স্বামীর আত্মহত্য

প্রকাশিত: ০৮:২১, ২২ এপ্রিল ২০১৯

গাজীপুরে কাপাসিয়ায় স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যার পর স্বামীর আত্মহত্য

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ গাজীপুরের কাপাসিয়ায় শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে গিয়ে সোমবার স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যার পর অটো রিক্সা চালক এক যুবক নিজে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। দাম্পত্য কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশের ধারণা। নিহতরা হলো- গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার বড়চালা এলাকার মনির হোসেনের ছেলে ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা চালক রোমান (২১) ও তার স্ত্রী ফাহিমা আক্তার (১৮)। নিহত ফাহিমা টোক ইউনিয়নের আড়ালিয়া খালপাড় এলাকার আইসক্রীম বিক্রেতা ফজলুল হকের মেয়ে। কাপাসিয়া থানার এসআই শফিকুল ইসলাম ও স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৯ মাস আগে কাপাসিয়ার বড়চালা এলাকার অটোরিক্সা চালক রোমানের সঙ্গে বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী আড়ালিয়া খালপাড় গ্রামের আইসক্রীম বিক্রেতা ফজলুল হকের মেয়ে ফাহিমা আক্তারের। বিয়ের পর হতেই নানা বিষয়াদি নিয়ে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সঙ্গে ফাহিমার পাবারিক কলহ শুরু হয়। একপর্যায়ে বনিবনা না হওয়ায় বিয়ের কিছুদিন পর স্বামীর বাড়ি থেকে ফাহিমা বাবার বাড়ি চলে এসে বসবাস শুরু করে। রবিবার রোমান শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে আসে। সোমবার সকালে ঘুম থেকে উঠে রোমান ও তার স্ত্রী হাত-মুখ ধুয়ে গোসল করে। পরে তারা ঘরে গিয়ে ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে শুয়ে পড়ে। এসময় রোমানের শ্বশুর ও শ্বাশুড়ি বাজারে যায়। বাজার থেকে ফিরে এসে রোমান ও ফাহিমাকে নাস্তা খাওয়ার জন্য ফাহিমার মা ডাকাডাকি করতে থাকে। কিন্তু তাদের কোন সাড়া না পেয়ে দুপুরে স্বজনরা ঘরের টিনের বেড়ার ফাঁক দিয়ে বিছানায় ফাহিমার এবং আড়ের সঙ্গে গলায় ওড়না দিয়ে রোমানের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায়। খবর পেয়ে পুলিশ বিকেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে নিহতেদের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। কাপাসিয়া থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক জানান, পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যার পর অটো রিক্সা চালক রোমান নিজে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথামকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। নিহত ফাহিমার গলায় কালো দাগ রয়েছে। এদিকে গাজীপুরে শ্রীপুরের জঙ্গল থেকে একইদিন (সোমবার) গার্মেন্টসের এক নারী কর্মীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের নাম হাসিনা আক্তার (২৫)। শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের সোনাকর এলাকার নুরুল ইসলামের মেয়ে। শ্রীপুর থানার এসআই রাজীব দাস জানান, প্রায় ৮ বছর আগে শ্রীপুরের বরমী ইউনিয়নের জাম্বুরিরটেক এলাকার কফিল উদ্দিনের সঙ্গে বিয়ে হয় হাসিনা আক্তারের। সোমবার দুপুরে এলাকাবাসী স্থানীয় গাড়ারণ কমিউনিটি ক্লিনিকের পাশের জঙ্গলের একটি গাছে গলায় ওড়না দিয়ে পেঁচানো হাসিনার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। লাশের পা মাটির সঙ্গে লেগে ছিল। বিষয়টি নিয়ে তদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। অপরদিকে, গাজীপুরের কালিয়াকৈরে এক নারী পোশাক শ্রমিককে কুপিয়ে হত্যা পর তার সাবেক স্বামী নিজে ছুরিকাঘাতে আত্মহত্যা করেছে। নিহতরা হলো শেরপুর সদর উপজেলার রাইচপাড়া এলাকার ফাহিমা আক্তার (২১) ও তার স্বামী মফতুল ইসলাম (২৫)। নিহত মফতুল ইসলামের বাড়ি একই জেলায়। কালিয়াকৈর থানা পুলিশের ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আবুল কাশেম ও স্থানীয়রা জানান, দাম্পত্য বিরোধের জেরে সম্প্রতি নেশাসক্ত স্বামী মফতুল ইসলামের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর গার্মেন্টস কর্মী ফাহিমা আক্তার গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার খোলারটেকি এলাকার বাদশা মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থেকে স্থানীয় নায়েগ্রা পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। শনিবার রাতে ফাহিমার বাসায় এসে অতর্কিতভাবে ছোরা দিয়ে শরীরের বিভিন্নস্থানে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তাকে খুন করে তার সাবেক স্বামী মফতুল ইসলাম। পরে পালিয়ে যাবারকালে লোকজনকে আসতে দেখে হাতের ছোরা দিয়ে নিজের পেটে আঘাত করে। এতে মফতুল রাস্তার পার্শ্ববর্তী খাদে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় । খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে নিহতদের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
×