ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

টাইগারদের বিশ্বকাপ প্রস্তুতি শুরু

প্রকাশিত: ১২:০০, ২৩ এপ্রিল ২০১৯

টাইগারদের বিশ্বকাপ প্রস্তুতি শুরু

মোঃ মামুন রশীদ ॥ বিশ্বকাপের দল ঘোষণা হয়েছে ৬ দিন আগে। অনেক আগেই নির্ধারণ করা বিশ্বকাপ অনুশীলন ক্যাম্প সময়মতোই সোমবার শুরু হয়েছে। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের মূল উইকেটেই অনুশীলন করেছেন কয়েকজন ক্রিকেটার। ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগ (ডিপিএল) চলমান থাকাতে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে থাকা অধিকাংশ ক্রিকেটারই এই অনুশীলন ক্যাম্পে ছিলেন না। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহীম ও রুবেল হোসেনের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। আজ ডিপিএল শেষ হবে, এই ম্যাচের জন্য বিশ্বকাপ স্কোয়াডের বাকি সদস্যরা নিজ নিজ ক্লাবের হয়ে একাডেমি মাঠে অনুশীলন করেছেন। প্রথমদিনের অনুশীলন শেষে জাতীয় দলের ক্যারিবীয় পেস বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশ জানিয়েছেন যেহেতু সামনে দীর্ঘ সময়ের মিশন, তাই কিছু ক্রিকেটারকে নিয়ে ঝুঁকি নেয়া যাবে না। বিশেষ করে বিশ্বকাপের আগে আয়ারল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য ত্রিদেশীয় সিরিজে মুস্তাফিজের মতো আরও কয়েকজন তুরুপের তাসকে বেশি খেলাতে চান না তিনি। ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে ব্যাটিং সহায়ক উইকেট থাকবে, সে জন্য বোলারদের মধ্যে বৈচিত্র্যপূর্ণ কিছু দেখার আশা তার। বাংলাদেশ দলের বিশ্বকাপ মিশন শুরুর আগেই আছে আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ। আর সেই সিরিজ শেষ হওয়ার কিছুদিন বিরতি দিয়েই শুরু হবে বিশ্বকাপ। টানা খেলা এবং অপরিচিত কন্ডিশনে থাকার কারণে ইনজুরির ঝুঁকি থাকবেÑ বিশ্বকাপের আগে সেটি হোক তা চাইছেন না ওয়ালশ। তাছাড়া এমনিতেও বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার ছোটখাটো ইনজুরি বয়ে চলেছেন। বিশেষ করে ইনজুরি আক্রান্ত পেসার মুস্তাফিজের ব্যাপারে বিন্দুমাত্র ঝুঁকি নিতে রাজি নন তিনি, বিশ্বকাপে তাকে বড় দায়িত্ব পালন করতে হবে যখন সে ফিট হবে। তবে আমি মনে করি না আমরা একজনের ওপর নির্ভরশীল। সাকিব, ম্যাশ ও রুবেল খুবই ধারাবাহিক পারফর্মার। ফিজ ইনজুরির কারণে ভাল অবস্থায় নেই। সে বারবার ইনজুরিতে পড়ছে। সম্পূর্ণ ফিট মুস্তাফিজ একাই ম্যাচ জেতাতে পারে। আমাদের ওকে ফিট অবস্থায় পেতে হবে। আমাদের হাতে কিছু সময় আছে। আমার একটাই চিন্তা আমাদের ওর ব্যাপারে তাড়াহুড়ো করা উচিত না। আয়ারল্যান্ডে ওকে বেশি ব্যবহার করা উচিত হবে না। আয়ারল্যান্ডে বেশি ব্যবহার করলে আবার বিশ্বকাপে সতেজ অবস্থায় পাওয়া যাবে না মুস্তাফিজকে। মুস্তাফিজ বর্তমানে ইনজুরি থেকে ফেরার মিশনে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছেন। ডিপিএলে শাইনপুকুরের অনুশীলনে গোড়ালির ইনজুরিতে পড়েছিলেন তিনি। ওয়ালশ তার বিকল্প হিসেবে এবার তরুণ পেসার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে ভালভাবেই মনে করছেন। ১২ ম্যাচ খেলে ১৭ গড় ও সাড়ে চার ইকোনমি রেটে ২৪ উইকেট নিয়ে লীগের সেরা বোলারদের তালিকায় দ্বিতীয়তে অবস্থান সাইফউদ্দিনের। নতুন বলে প্রায় প্রতিম্যাচেই অবিশ্বাস্য ধারাবাহিকতায় বোলিং করছেন তিনি। এখন পর্যন্ত দুইবার পাঁচ উইকেটও শিকার করেছেন। তাই মুগ্ধ ওয়ালশ বলেন, সে দারুণ উন্নতি করেছে। খুবই ভাল বল করে আসছে সে। সাড়া জাগানোর মতো অলরাউন্ডার তিনি। আত্মবিশ্বাসী অবস্থায় আছে সে এবং ভাল করার ব্যাপারেও সে উদগ্রীব। সাইফউদ্দিনেরও ইনজুরি সংক্রান্ত সমস্যা আছে। টেনিস এলবো ইনজুরি নিয়েই খেলছেন ডিপিএলে। বোলিং ব্যাটিং করতে সমস্যা না হলেও ফিল্ডিংয়ে দূর থেকে থ্রো করতে ব্যথা অনুভব করেন। তাই ম্যাচে ৩০ গজের ভেতরে ফিল্ডিং করে আসছেন এ তরুণ পেসার। তবে এতেও বোলিং নৈপুণ্য কমেনি তার। বিশ্বকাপের আগে ইনজুরি সমস্যার সম্পূর্ণ মিটে গেলে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবেন এই তরুণ, বিশ্বাস ওয়ালশের, আমরা যদি ওকে সম্পূর্ণ ফিট করে তুলতে পারি, বিশেষ করে ওর টেনিস এলবো সমস্যার সমাধান হয়ে গেলে সে দলের জন্য ইতিবাচক শক্তি হয়ে উঠবে। তবে ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে ভাল করাটা সহজ হবে না বাংলাদেশ দলের বোলারদের জন্য। বিশেষ করে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যাটিং সহায়ক উইকেট থাকে এবং অনভ্যস্ততা অনেক বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে ভাল করার ক্ষেত্রে। ইংলিশ কন্ডিশন সাম্প্রতিক সময়ে কোকাবুরা বল খুব একটা সুইং করছে না। যার কারণে ব্যাটসম্যানরা সহজেই হাত খুলে খেলতে পারছে। বোলারদের সাফল্য পেতে হলে বৈচিত্র্য আনা আবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বিষয়ে ওয়ালশ বলেন, আমাদের উইকেটের চরিত্র ঠিকঠাক মতো পড়তে হবে। কিছু কিছু ম্যাচে বল সুইং করবে। তবে বেশিরভাগ উইকেট হবে ব্যাটিং সহায়ক। বৈচিত্র্য নিয়ে কাজ করতে হবে আমাদের। প্রতি দলই একজন আরেকজনকে খুব ভালমতো বিশ্লেষণ করে মাঠে নামে। সবাই আমাদের শক্তি ও দুর্বলতা জানে। আমরাও জানি তাদের শক্তি ও দুর্বলতা। তাই চতুরতার সঙ্গে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। বিশ্বকাপে প্রতিটি দলকে ৯টি ম্যাচ খেলতে হবে গ্রুপপর্বেই। বাংলাদেশ দলের সূচনা কেমন হয় তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। এ বিষয়ে ওয়ালশ বললেন, খুবই কঠিন হবে। আমাদের শুরুর দিকে দুটি ম্যাচ জিততে হবে। প্রতিটি দল তাদের নিজেদের দিনে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। বিশ্বকাপ দলের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বয়ে আনবে। লম্বা টুর্নামেন্ট, উইকেটও ভাল হবে, ব্যাটিং সহায়ক হবে। আমাদের চতুর হতে হবে এবং পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়ন করতে হবে।
×