ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রানে ফেরা সৌম্য বিশ্বকাপে আলো ছড়াতে চান

প্রকাশিত: ১২:০৪, ২৩ এপ্রিল ২০১৯

রানে ফেরা সৌম্য বিশ্বকাপে আলো ছড়াতে চান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এবার আসন্ন বিশ্বকাপ স্কোয়াডে সৌম্য সরকারকে দলে নেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ সহজ ছিল না বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচকদের। কারণ চলমান ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে (ডিপিএল) ব্যাট হাতে একেবারে ভাল যাচ্ছিল না এ বাঁহাতি ওপেনারের সময়টা। তবে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে মারকুটে এ ওপেনার ভাল করবেন এই আস্থা রেখেই তাকে দলে রাখা হয়েছিল। কিন্তু সে জন্য আগেভাগে ব্যাটে রান পাওয়াটা আত্মবিশ্বাসের পুুঁজি হতে পারে। অবশেষে সেই পুঁজিটা পেয়েছেন সৌম্য একেবারে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে। লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিরুদ্ধে হেরে গেলেই শিরোপা ধরে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়তো তার দল আবাহনী লিমিটেডের। সেই ম্যাচে চিরচেনা সৌম্য খেলেছেন মাত্র ৭৯ বলে ১৫ চার, ২ ছক্কায় ১০৬ রানের বিস্ফোরক ইনিংস। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু দাবি করেছেন এই সেঞ্চুরি বেশ আত্মবিশ্বাসী করবে সৌম্যকে। আর সৌম্যও তাই বিশ্বকাপে দারুণ কিছু করে দেখানোর দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। দীর্ঘদিন রান খরায় ভুগেছেন সৌম্য। এবার ডিপিএলে আগের ১০ ম্যাচে তার ইনিংসগুলোয় সৌম্যের ব্যাট ছিল আশঙ্কাজনকভাবে নিষ্প্রভ। সর্বশেষ ইনিংসগুলো ছিল- ০, ১৭, ২, ১, ১৪, ১০, ১২, ২৯, ৪৩, ৩৬! সর্বোচ্চ ৪৩ রানের ইনিংসটি মোহামেডানের বিপক্ষে খেলেছিলেন। তার আগে ৩৬ রানের ইনিংসটি খেলেছিলেন প্রাইম ব্যাংকের হয়ে। এ দুটি ইনিংস ছিল প্রথমদিকে। এরপর তো বিভীষিকাময় ছিল তার ব্যাটিং নৈপুণ্য। তবে এরপরও বিশ্বকাপের দলে তাকে নেয়ার বিষয়ে যথেষ্ট আস্থা রেখেছিলেন নির্বাচকরা। অবশেষে সেই আস্থার জবাব দিয়েছেন ৭৯ বলে ১০৬ রানের দুর্ধর্ষ ইনিংস খেলে। যদিও তার এই ব্যাটিংয়ে অনেক পরিবর্তন দেখা গেছে আগের তুলনায়। প্রধান নির্বাচক নান্নু এবং প্রধান কোচ স্টিভ রোডস ওই ইনিংস দেখেছেন পাখির চোখে। তাদের চোখে, মুখে ও কণ্ঠে সন্তুষ্টির ছাপ। নান্নু বলেন, ‘সৌম্য সামনের পায়ে গিয়ে একটু ক্রস খেলতো। যে বলটা সোজা ব্যাটে মিড অফে খেলা যায়, সেটা সে টেনে অন সাইডে মারার চেষ্টা করতো। এবার এ কারণেই সে লীগে অনেকগুলো ম্যাচে আউট হয়েছে। কোচ স্টিভ রোডস আর আমরা সকাল থেকে অপেক্ষায় ছিলাম, আজ সৌম্য কোন টেকনিকে খেলে। শুধু রান করেছে বলে বলছি না, আজকে সে অনসাইডে ক্রস ব্যাটে খেলার চেষ্টা করেছে কম। বেশিরভাগ বল বোলারের ডান বা বাঁপাশ দিয়ে সোজা ব্যাটে শট করেছে। যে কারণে রান পেয়েছে বলে আমার বিশ্বাস। আসল সময়ে জ্বলে উঠলেন সৌম্য সরকার। বিশ্বকাপের আগ দিয়ে তার ব্যাট হাসলো। কিন্তু আরও বড় ইনিংস খেলতে চেয়েছিলেন সৌম্য। তিনি বলেন, প্রিমিয়ার লীগে যত ম্যাচ খেলেছি তার কোনটায় আমি ভাল করিনি। তারপরও টিম ম্যানেজমেন্ট আমাকে খেলিয়েছে। আজ ছিল বড় ম্যাচ, চিন্তা ছিল এমন ম্যাচে বড় কিছু করতে পারলে আত্মবিশ্বাস বাড়বে। এ রকম পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছিলাম। চাপ বলতে নিজের কাছে খারাপ লাগছিল। রান করতে পারছিলাম না। অথচ জাতীয় দলের হয়ে রান ছিল। বারবার নিজেকে প্রশ্ন করছি, কেন ভুল করছি। ভুল শুধরে নিতে কাজ করছেন সৌম্য। এখন আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নেয়ার মতো একটা ইনিংস খেলে স্বস্তিতে ২৬ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান। তিনি বলেন, বিশ্বকাপে দারুণ কিছু অবদান রাখতে চাই। মনোযোগ বাড়ানোর চেষ্টা করেছি। সোজা ব্যাটে ব্যাট করার চেষ্টা করেছি। যে আউটগুলো হচ্ছিলাম সেগুলো নিয়ে বাসায় গিয়ে চিন্তা করা, আমি ভিন্ন কিছু করতে পারতাম কিনা। আগের যে ভিডিওগুলো ছিল সেগুলো দেখেছি। এই বলগুলোয় আমি ওইখানে কি খেলেছি, এখানে কি খেলছি। এইগুলো নিয়েই চিন্তা করেছি। বড় ম্যাচে রান পাওয়ায় নড়েবড়ে আত্মবিশ্বাস আরও পক্ত হবে, বিশ্বাস নান্নুর, রান যদি করতে থাকে আত্মবিশ্বাস অনেক বেশি থাকে। ওর প্রতিভা নিয়ে তো কোন প্রশ্ন নেই। তারপরও ওর সেঞ্চুরিটা ওকে আরও বেশি আত্মবিশ্বাস দেবে।
×