ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতে নির্বাচন ॥ ফোনে ফোনে প্রচারযুদ্ধ

প্রকাশিত: ১২:৩৫, ২৪ এপ্রিল ২০১৯

ভারতে নির্বাচন ॥ ফোনে ফোনে প্রচারযুদ্ধ

ভারতের লোকসভা নির্বাচন চলছে। সাত পর্বের এই নির্বাচন ১১ এপ্রিল শুরু হয়েছে। শেষ হবে ১৯ মে। যেসব এলাকায় এখনও নির্বাচনী প্রচারের সুযোগ আছে সেখানে জোরেশোরেই প্রচার চলছে। শহর ও গ্রামে বিলবোর্ড শোভা পাচ্ছে। ছোট ছোট লরিতে লাউডস্পিকার নিয়ে প্রচার চালাচ্ছে দলীয় কর্মীরা। তবে এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে জোরালো প্রচার কাজটা হচ্ছে ভোটারদের ফোনে। ২০১৪ সালে আগের সাধারণ নির্বাচনে ভারতের ১৩০ কোটি নাগরিকের মধ্যে মাত্র ১০ কোটির হাতে স্মার্টফোন ছিল। এবার স্মার্টফোন আছে ৪০ কোটিরও বেশি মানুষের হাতে। মোবাইল ডাটাও সস্তা। ভারত হয়ে দাঁড়িয়েছে ফেসবুকের বৃহত্তম বাজার। এ্যাকাউন্টের সংখ্যা ৩০ কোটিরও বেশি। হোয়াটসএ্যাপের সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছে ২০ কোটিরও বেশি। এ ছাড়াও আছে অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া এ্যাপস। এ্যাপসগুলো দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর তথ্যনির্ভর বা তথ্যবর্জিত প্রচার চালানোর এক পছন্দের বাহন হিসেবে কাজ করছে। এর মাধ্যমে নানা ধরনের রাজনৈতিক গুজব, চুটকি ও কৌতুকও পরিবেশিত হচ্ছে। যেমন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সত্যিই হিন্দু কিনা সে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। কোনটিতে আবার বলা হচ্ছে রাহুলকে দেখতে বড়ই দুর্বল দেখায়। ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) গত নির্বাচনে স্বেচ্ছাসেবকদের এক বিশাল বাহিনী গড়ে তুলেছিল যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার কাজ চালিয়েছিল। সেই নির্বাচনের পর থেকে পাঁচ বছরে এই সোশ্যাল মিডিয়ার সৈনিকরা অনলাইনে তাদের আদর্শগত শত্রুদের প্রধানত উদারপন্থী, বামপন্থী, মুসলমান ও নারীবাদীদের জীবন দুর্বিষহ করে তোলে। অন্য দলগুলোও তাদের নিজস্ব আইটি সেল খুলেছে। তবে ঘোষিত সকল নির্বাচনী প্রচারের চাঁদার ৯৩ শতাংশ বিজেপির হস্তগত হওয়ায় আশাই করা যায় এক্ষেত্রে সে এর প্রযুক্তিগত শ্রেষ্ঠত্ব বজায় থাকবে। শুধু উত্তর প্রদেশেই বিজেপির সাইবার যোদ্ধা রয়েছে দেড় লাখ। তারপর আছে কট। ভারতে টুইটারের প্রভাব বিশেষ কিছু নয়। তবে এটি সকলের কাছে দৃশ্যমান। আটলান্টিক কাউন্সিল নামে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান গত ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী মোদি যখন তামিলনাড়ুতে গিয়েছিলেন তখন টুইটারের ট্রাফিক পরীক্ষা করে দেখে। দেখা যায়, বট প্রতি সেকেন্ডে মোদির পক্ষে ও মোদির বিরুদ্ধে হাজার হাজার হ্যাকট্যাগ পুশ করে। আর মোদি সমর্থক বটগুলো তিনগুণ বেশি কাজ করছে। নির্বাচনের সময় সোশ্যাল মিডিয়া ও এ্যাপসগুলো নানা ধরনের রাজনৈতিক তথ্য, কৌতুক ও চুটকি পরিবেশন করছে। আবার অপপ্রচার, বিকৃত তথ্য প্রচারও করছে। এসব প্রচার ঠেকানোর মােত কোন উপায়ও স্বভাবতই নেই। ভারতের সর্বাধিক জনপ্রিয় স্মার্টফোন এ্যাপস ‘হেলো’র প্রতিদ্বন্দ্বী একটি এ্যাপের প্রধান নির্বাহী স্বীকার করেছেন যে এসব কার্যকলাপ বোধের কোন আইনও নেই। তবে নির্বাচন কমিশন আচরণবিধি লঙ্ঘিত হয় এমন বিষয়বস্তু বর্জন সুনিশ্চিত করার উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টায় সোশ্যাল মিডিয়া ফার্মগুলোর সঙ্গে বৈঠক করছে। তবে হোয়াটসএ্যাপের মতো অনেক এ্যাপের ওপর নজরদারি করা অসম্ভব। সূত্র : দি ইকোনমিস্ট
×