ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অভিমত টাইগারদের প্রধান কোচ স্টিভ রোডসের

সেমিতে খেলার যোগ্যতা রাখে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১১:৪৭, ২৬ এপ্রিল ২০১৯

সেমিতে খেলার যোগ্যতা রাখে বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ হাতে আছে আর মাত্র কয়েকটা দিন। এরপরই বিশ্বকাপের মিশনকে সামনে রেখে আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে যাবে বাংলাদেশ। ১ মে আয়ারল্যান্ডের উদ্দেশে দেশ ছাড়ার কথা রয়েছে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটার, কোচিং স্টাফদের। এর আগে দেশের মাটিতে কয়েকটা দিন প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছেন ক্রিকেটাররা। বৃহস্পতিবার প্রধান কোচ স্টিভ রোডস সংবাদ সম্মেলনেও বিশ্বকাপ নিয়ে নিজের অভিব্যক্তি তুলে ধরলেন। রোডসের কাছে মনে হচ্ছে, সেমিফাইনালে খেলতে সক্ষম বাংলাদেশ। প্রস্তুতি ক্যাম্পে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে মুশফিকুর রহীম নেটে ব্যাটিং করছিলেন। পাশের নেটেই রোডস ছিলেন। মুশফিকের ব্যাটিং থেকে সামনে চলে আসা বলটি একটি লোহায় লেগে রোডসের ভুরুতে আঘাত হানে। সেই আঘাত নিয়েই স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলন রুমে আসেন রোডস। বিশ্বকাপে লক্ষ্যের কথা জানতে চাইলেই তিনি বলেন, সত্যি কথা বলতে বিশ্বকাপে কয়েকটি অনেক ভাল দল যাচ্ছে। বাংলাদেশের জন্য খুবই কঠিন হবে। তবে আমি জানি অনেক দেশই বাংলাদেশকে শ্রদ্ধা করে। তারা জানে যেদিন বাংলাদেশ ভাল করে সেদিন যে কোন দলকেই হারাতে পারে। আমরা এর আগেও তা প্রমাণ করেছি। আমি এখানে (বাংলাদেশে) আসার আগে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দল ভাল করেছে। আমরা ওয়েস্ট ইন্ডিজনকে কয়েকটি সিরিজে হারিয়েছি। আমরা হারাতে পারি, তবে আমাদের সেরাটা খেলতে হবে। যদি নকআউটে খেলতে হয়। আমরা কী সক্ষম? অবশ্যই। সেমিফাইনালে খেলতে হলে বাংলাদেশকে কঠিন পথই পাড়ি দিতে হবে। এবার নয়টি ম্যাচ খেলতে হবে। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ২ জুন। প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর এক এক করে ৫ জুন নিউজিল্যান্ড, ৮ জুন ইংল্যান্ড, ১১ জুন শ্রীলঙ্কা, ১৭ জুন ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ২০ জুন অস্ট্রেলিয়া, ২৪ জুন আফগানিস্তান, ২ জুলাই ভারত আর ৫ জুলাই পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলবে টাইগাররা। ৯টি ম্যাচে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা খুবই কঠিন হতে পারে। প্রতিপক্ষও অনেক কঠিন ও শক্তিশালী দল। এরপরও বাংলাদেশ যদি ভাল করে তাহলে সেমিফাইনাল খেলা সম্ভব। এ জন্য সেরাটা খেলতে হবে। বিশ্বকাপের জন্য দেশের মাটিতে খুব বেশি প্রস্তুতি নেয়ার সুযোগ হয়নি। ক্রিকেটাররা একসঙ্গে থাকার সুযোগ এখনও পাননি। ঢাকা লীগ ছিল। তাই খেলা শেষে আজ-কালের মধ্যে সবাই একসঙ্গে হবেন। তবে কোচের মনে হচ্ছে স্কিল নিয়ে আরও কাজ করা গেলে সুবিধা হতো। তবে রোডস এখন আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের দিকেই নজর দিচ্ছেন। তিনি বলেছেন, আমি বিশ্বকাপের জন্য আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের দিকে তাকিয়ে আছি। আমরা আয়ারল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলব। তামিম যেমন বিশ্রামের কথা বলেছে। কয়েকজনের সুযোগও মিলবে। আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নেয়ার সুযোগ থাকবে। আশা করছি জিতব। সিরিজ জিতলে ভাল হবে। তবে প্রস্তুতি নেয়ার জন্যই যাব। সাকিব এখনও প্রস্তুতি ক্যাম্পে যোগ দেননি। তিনি আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ দলের সঙ্গে আছেন। হয়তো আরও এক দুটি ম্যাচ খেলেই দেশে ফিরবেন। সাকিবের আইপিএলে থাকা ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন কোচ। তিনি বলেছেন, একটি অথবা দুটি ম্যাচ খেলার সুযোগ মেলাতেই সাকিব ভারতে আছে। প্রস্তুতির মধ্যেই আছে। মাঠে ফিট থাকা জরুরী। সাকিবের জন্যই সবসময়ই যা গুরুত্বপূর্ণ। আশা করছি সে যেন কয়েকটি ম্যাচ খেলে। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের ম্যাচ খেলা প্রয়োজন। দুটি ভাল দিক আছে। প্রথমত সে ক্রিকেটের সঙ্গেই আছে। সে খেলতে ক্ষুধার্তও। যখন হায়দরাবাদ টিম থেকে দলের সঙ্গে যোগ দিবে তখন বড় মঞ্চে নিজেকে প্রমাণ করবে। আমার মনে হয় বাংলাদেশের জন্য সুবিধা হবে। বাংলাদেশ অভিজ্ঞ দলই গড়েছে। এ নিয়ে কোচ জানান, আমাদের কয়েকটি বিশ্বকাপ খেলা খেলোয়াড় আছে। অনেক ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতাও আছে। এটা সবসময়ই ভাল দিক। কয়েকজন খেলোয়াড়ের জন্য এটাই সঠিক সময়। ইমরুল কায়েসকে নিয়ে কোচকে বলতে হয়েছে। এত ভাল খেলার পরও কেন বাদ ইমরুল? কোচ জানান, দলে আমরা সর্বোচ্চ মানের ক্রিকেটার রাখতে চেষ্টা করেছি। ইমরুল উঁচুমানের ক্রিকেটার। একজন ভাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। তবু সে বিশ্বকাপ স্কোয়াডের অংশ নয়। এর মানে যাদের আমরা নিয়ে যাচ্ছি তারাও অনেক ভালমানের ক্রিকেটার। কোন অংশে তারচেয়ে কম নয়। আমরা ইমরুলের মতো ক্রিকেটারকে রেখে যাচ্ছি। সেটা আমাদের উঁচুমানের ক্রিকেটারের গভীরতা নির্দেশ করে। কেউ ইনজুরিতে পড়লে বা অন্য কোন কারণে তাকে আমাদের দরকার হতে পারে। আমরা খুব ভাল করে জানি সে কি করতে পারে। যদি ও এবারের বিশ্বকাপ মিস করে তাহলে করার কিছু নেই। তবে মাথায় রাখতে হবে, ভাল কেউ মিস করলে সে রকমই কেউই যাচ্ছে। তামিমকে নিয়ে ওপেনিংয়ে কোন দ্বিধা নেই। আছে তার ওপেনিং সঙ্গীকে নিয়ে। কে হবেন বিশ্বকাপে তামিমের ওপেনিং সঙ্গী? কোচ জানান, টপঅর্ডার কেমন হবে? সাম্প্রতিক সময়ে যেটা হয়েছে আমরা দেখেছি একজন ডানহাতি ও একজন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ইনিংসের শুরু করছে, লিটন ও তামিম। আমি ব্যক্তিগতভাবে ডানহাতি-বাঁহাতি জুটি পছন্দ করি। সঙ্গে যোগ করেন, শেষ দুই ম্যাচে সৌম্য (ঢাকা লীগে) যেটা করেছে- প্রথমে সেঞ্চুরি পরে ডাবল সেঞ্চুরি। প্রথম সেঞ্চুরির পর আমি তাকে বলেছিলাম তুমি সেঞ্চুরি করার পর অনেক সময় পেয়েছিলে সেটা কাজে লাগান দরকার ছিল। সবসময় এ রকম সুযোগ পাওয়া যায় না। এরপর কি হলো সে পরের ম্যাচে ডাবল সেঞ্চুরি করে বসলো! সৌম্য দারুণ ফর্মে আছে। আমি এখনই না বলি কে ওপেন করবে, কে করবে না। আমার মতে সেটা উচিতও হবে না। সেই সিদ্ধান্ত নিতে যথেষ্ট সময় বাকি রয়েছে। তবে একটা কথা বলতে চাই সৌম্য ও লিটন দু’জনের প্রতিই আমার আস্থা রয়েছে, ইনফ্যাক্ট খুব বেশি আস্থা রয়েছে। দেখা যাক কি হয়।
×