ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শান্তির প্রতীক সেন্ট এ্যান্থনির গির্জা

প্রকাশিত: ০৮:৩৯, ২৭ এপ্রিল ২০১৯

 শান্তির প্রতীক সেন্ট এ্যান্থনির গির্জা

শ্রীলঙ্কার সেন্ট এ্যান্থনির গির্জা। এটি দেশটির বিখ্যাত একটি উপাসনালয়। গির্জাটির বিশেষত্ব হচ্ছে, এখানে সকল ধর্মের লোকজন প্রার্থনা করতে পারেন। একটি সন্ত্রাসবাদী হামলা সব ওলটপালট করে দিয়েছে। ভয়াবহ হামলার পর বন্ধ করে দেয়া হয়েছে গির্জাটি। ১৭৫ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম ধর্মানুরাগীদের গির্জায় ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। ইস্টার সানডেতে এই গির্জাতেও হামলা চালানো হয়। রাজধানী কলম্বোর কোচকিকাদে জেলার এই গির্জাটির রাস্তা সকল ধর্মের মানুষের চেনা। কারণ আশীর্বাদের জন্য তারা প্রায় প্রতিদিনই এখানে আসত। মূলত রোমান ক্যাথলিক গির্জা হওয়া সত্ত্বেও এটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ‘অলৌকিক কর্মী’ সুনাম অর্জন করেছে। জনশ্রুতি রয়েছে, কোন অনুরোধ হোক সেটা বিশাল, ক্ষুদ্র কিংবা বিশেষভাবে নির্দিষ্ট, কোন কিছুই সেন্ট এ্যান্থনির কাছ থেকে উত্তরহীন নয়। রবিবার গির্জাটির প্রবেশপথে বোমা বিস্ফোরণের পর সোমবার থেকে পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। শ্রীলঙ্কার আট জায়গায় বোমা হামলায় তিন শতাধিক মানুষ নিহত এবং শত শত আহত হয়। গির্জাটির চারপাশ হলুদ টেপ দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে এবং সশস্ত্র নিরাপত্তা কর্মকর্তারা পাহারা দিচ্ছেন। এরপরও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ গির্জাটির বাইরে জড়ো হন। গির্জা এলাকার যতটা কাছে যাওয়া সম্ভব তারা যাচ্ছেন। এদের অধিকাংশই শুধু স্বেত ভবনটির দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছেন। বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই গির্জাটির ভেতরে কী ঘটেছে। দূর থেকে দেখলে মনে হয় এটির ওপর কোন আচড় পড়েনি। তবে একটু মনোযোগ দিয়ে দেখলে এবং ঘটনা বিষয়ে অবহিত থাকলে আন্দাজ করা যায় ভেতরে কী ঘটেছে। এটির প্রবেশপথের কাছে কিছু ধ্বংসাবশেষ গ্লাসের ভাঙ্গা টুকরো দেখা যায়। গির্জাটির বাম পাশের টাওয়ারে ঘড়িটি আটটা ৪৫ মিনিটে থমকে আছে। ঠিক যে সময়ে হামলাটি হয়। এখানে বহু হতাহত হয়, কারণ বিপুল সংখ্যক মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। এমনকি অন্য দিনেও গির্জাটি উপাসনাকারীতে পরিপূর্ণ থাকে। প্রধান যাজকের ধারণা, ইস্টার সানডেতে এক হাজারেরও বেশি মানুষ প্রার্থনার জন্য সমবেত হয়েছিলেন। গির্জাটির বাইরে জড়ো হয়েছিলেন এমন একজন হলেন প্রবাথ বুদ্ধিকা। বুদ্ধিকা যদিও বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী তবে অন্য অনেকের মতো তিনিও সেন্ট এ্যান্থনির প্রভাবে বিশ্বাসী। তিনি বলেন, ‘আমার বাড়ি এখানেই।’ তিনি আরও বলেন, ছোটবেলা থেকেই তিনি পরিবারের সঙ্গে বেশ কয়েকবার গির্জায় গিয়েছেন। অন্য অনেকের মতো বুদ্ধিকাও বিস্ফোরণের শব্দ শুনে গির্জার কাছে ছুটে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি যে বীভৎসতা দেখেন তা বর্ণনাতীত। -বিবিসি
×