ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকার ফুটপাথ আবারও হকারদের দখলে

প্রকাশিত: ০৯:১৮, ২৭ এপ্রিল ২০১৯

 ঢাকার ফুটপাথ আবারও হকারদের দখলে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীতে প্রতিদিন নানা পেশা, নানা রকমের মানুষের আনাগোনা। ঢাকার অন্যতম ব্যস্ততম এলাকার মধ্যে রয়েছে গুলিস্তান, মতিঝিল, পল্টন এলাকা। বলা চলে রাজধানীর সবচেয়ে বেশি মানুষের পদচারণা থাকে এসব এলাকায়। যে কারণে এখানে দিন-রাত সবসময়ই মানুষে গিজগিজ করে। অথচ তারা স্বাচ্ছন্দে হাঁটার জন্য ফুটপাথ ব্যবহার করতে পারছে না। যদিও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যৌথ উদ্যোগে কয়েক মাস আগে হঠাৎই বদলে যায় ফুটপাথের চিরচেনা দৃশ্য। গত ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে এসব এলাকার ফুটপাথ অবৈধ দখলমুক্ত করা হয়। হকারদের জন্য রাজধানীর গুলিস্তান, মতিঝিল, পল্টন এলাকার যে ফুটপাথ দিয়ে চলাচল করাই মুশকিল ছিল, ডিএসসিসি ও ডিএমপির যৌথ উদ্যোগে বদলে যায় সেই দৃশ্য। তারপর থেকে কিছুদিন আগেও এসব ফুটপাথে একটিও দোকান বা হকার ছিল না। ফলে স্বচ্ছন্দে চলাচল করতে পেরে সন্তুষ্টিও প্রকাশ করেছিলেন পথচারীরা। কিন্তু ডিএসসিসির ফুটপাথ দখলমুক্ত রাখার উদ্যোগ দুই মাসও টেকেনি। মাত্র দেড় মাসের মতো সময় ফুটপাথ দখলমুক্ত থাকার পর পথচারীদের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে আবারও হকাররা বসে গেছেন। এতে পথচারীদের চলাচল বাধাগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি সড়কে বেড়েছে যানজট। যে গুলিস্তান, মতিঝিল, পল্টন এলাকায় এত পথচারী কিন্তু সেখানে ফুটপাথে দিয়ে তাদের হেঁটে চলাচলের যেন কোন অধিকারই নেই। পথচারীদের হাঁটার জায়গা দখল করে নানা রকমের পসরা সাজিয়ে রেখেছে অবৈধ দখলদাররা। তাই বাধ্য হয়েই পথচারীরা ফের নেমে এসেছেন মূল সড়কে। ফলে যান চলাচলে বিঘ্নের পাশাপাশি সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। সেই সঙ্গে থাকছে পথচারীদের দুর্ঘটনার আশঙ্কাও। রাজধানীর মুগদাপাড়া থেকে মতিঝিল পর্যন্ত লেগুনায় আসেন বেসরকারী চাকরিজীবী নাজমুল হক। এরপর হেঁটে পল্টনে অফিসে পৌঁছান। তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারির শেষভাগ থেকে ফুটপাথ দিয়ে স্বাচ্ছন্দে হাঁটতে পেরেছিলাম, একটি দোকান বা হকারও ছিল না। হেঁটে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু দেড়-দুই মাস না যেতেই আবারও ফুটপাথ দখল নিয়েছে হকাররা, ফলে আগের মতো বিড়াম্বনা ফিরে এসেছে। আরেক পথচারী সবুজ আহমেদ বলেন, গুলিস্তান, মতিঝিল, পল্টন এলাকায় প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ হেঁটে চলাচল করে। কিছুদিন ফুটপাথ দখলমুক্ত থাকায় সবাই খুব ভালভাবে চলাচল করতে পেরেছিল। কিন্তু বর্তমানে আবারও দখল হওয়ায় ফুটপাথ দিয়ে চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই বাধ্য হয়ে পথচারীদের মূল সড়ক ধরে হাঁটতে হচ্ছে। যে কারণে দুর্ঘটনার শঙ্কা বাড়ার পাশাপাশি যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। ডিএসসিসির উচিত পথচারীদের কথা মাথায় রেখে ফুটপাথ দখলমুক্তে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, ফুটপাথ দখলমুক্ত রাখতে আমাদের তৎপরতা অব্যাহত আছে। আমরা অভিযান চালিয়ে ফুটপাথ দখলমুক্ত করি। কিন্তু চলে আসার পর হকাররা অনেক সময় আবার বসে পড়ে। তাদের তো সব সময় আর পাহারা দেয়া সম্ভব না। তবে ফুটপাথ দখলমুক্ত রাখতে আমাদের নিয়মিত প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। গুলিস্তানের ফুটপাথে জুতার দোকানি হাবিবুর রহমান বলেন, মাঝখানে কিছুদিন হকার উচ্ছেদে খুব চাপাচাপি ছিল। যে কারণে আমরা একটুও বসতে পারিনি। তবে ইদানিং তেমন একটা কড়াকড়ি নেই, তাই আমরা আবার বসতে শুরু করেছি। তিনি বলেন, আমরা সাধারণ পথচারীদের সমস্যা করে ফুটপাথে হকারি করতে চাই না। পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে দিলে ফুটপাথ ছেড়ে চলে যাব। আমাদেরও পরিবার পরিজন আছে, ফুটপাথে বসে ব্যবসা না করলে আমরা চলব কীভাবে?
×