ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অভয়নগরে মৌমাছির অভয়ারণ্য

প্রকাশিত: ১০:২৯, ১১ মে ২০১৯

 অভয়নগরে মৌমাছির অভয়ারণ্য

প্রায় ১শ’ মৌমাছির চাক। ছোট-বড় সব আকারের মৌচাক রয়েছে। তিনতলা ভবন ও বিভিন্ন গাছেও রয়েছে মৌচাক। পরিচর্যার প্রয়োজন নেই। মানুষের সংস্পর্শে সহাবস্থানে রয়েছে মৌমাছিগুলো। শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ আশাপাশের মানুষের ওপর আক্রমণের নেই কোন অভিযোগ। এ যেন মানুষ ও মৌমাছির এক মেলবন্ধন। কোন গল্প বা কাহিনী নয় সম্পূর্ণ সত্য। মানুষের সঙ্গে মৌমাছির এক সঙ্গে বসবাসের বাস্তব চিত্র অভয়নগর উপজেলার শ্রীধুরপুর ইউনিয়নের পুড়াখালী ফকিরবাগান এলাকার হযরত ফাতেমাতুজ্জোহরা (রাঃ) মহিলা মাদ্রাসা ও এতিমখানায়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাদ্রাসার তিনতলা ভবনের প্রতি তলায় বারান্দার সামনের অংশে মৌমাছির চাক রয়েছে। যা সংখ্যায় ৫০টির কাছাকাছি হবে। এছাড়া ভবনের পেছনে ও মাদ্রাসার ভিতরে প্রায় প্রতিটি গাছে রয়েছে মৌচাক। সব মিলিয়ে সংখ্যায় ১শ’ এর কাছাকাছি হবে। দুপুরে মাদ্রাসার শিশু শিক্ষার্থীদের ক্লাস শেষ। হৈ-চৈ করতে করতে বেরিয়ে আসতে দেখে তাদের কাছে জানতে চাইলাম, এত মৌমাছির মধ্যে ক্লাস করতে ভয় লাগে কি? তারা একসঙ্গে চিৎকার করে বলল, কোন সমস্যা নেই। মৌমাছিরা আমাদের বন্ধু, কামড়াই না। কথা হয় মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা সাজ্জাদুর রহমানের সঙ্গে। তিনি জানান, মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠালগ্ন ১৯৯৬ সাল থেকে তিনি কর্মরত আছেন। ২০০০ সালে তিনতলা ভবনটি নির্মিত হওয়ার পর থেকে মৌমাছি চাক বাঁধতে শুরু করে। ধীরে ধীরে ভবনটির চারপাশ ও ছোট-বড় সব ধরনের গাছেও মৌচাক বাঁধতে শুরু করে মৌমাছি। তবে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কখনও মৌচাকগুলো অপসারণের চেষ্টা করেনি বা মধু সংগ্রহ ও বিক্রির চিন্তাও করেনি। মৌমাছিগুলো নির্ভয়ে আমাদের মাদ্রাসায় বসবাস করে আসছে। এ ব্যাপারে মাদ্রাসার সুপার হাফেজ মাওলানা আশেক এলাহী বলেন, প্রায় ৪শ’ শিক্ষার্থী, ১৬ জন শিক্ষক ও ১০ জন কর্মচারী রয়েছে এ প্রতিষ্ঠানে। প্রতিদিন সকালে ও বিকালে শিক্ষার্থীরা ওই ভবনের সামনে খেলাধুলা করে। এছাড়া অনেক শিশু শিক্ষার্থী মৌচাক থাকা গাছে ফল পাড়তে ওঠানামা করে। আল্লাহর রহমতে অদ্যাবধি কেউ মৌমাছির আক্রমণের শিকার হয়নি। তবে মাঝে মধ্যে দু’একজনকে কামড়ালেও হাসপাতালে নিতে হয়নি। অনেক সময় বহিরাগত মেহমান আসলে মৌচাক থেকে অল্প পরিমাণ মধু সংগ্রহ করে তাদেরকে পরিবেশন করা হয়ে থাকে। তা পরিমাণে খুবই কম। তিনি আরও জানান, মাদ্রাসার বাক প্রতিবন্ধী এক কর্মচারী প্রতিনিয়ত মৌচাক ও মৌমাছির প্রতি খেয়াল রাখে। যখন কোন মৌচাক নষ্ট বা মৌমাছি অন্যত্র চলে যায়, তখন সেই কর্মচারী পরিত্যাক্ত মৌচাকগুলোকে ফেলে দেয় এবং ওই স্থানটি পরিষ্কার করে রাখে। পরবর্তীতে যাতে অন্য মৌমাছি সেখানে নতুন করে চাক বাঁধতে পারে। -সাজেদ রহমান, যশোর থেকে
×