ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

দক্ষিণ আফ্রিকার নির্বাচনে আবারও জয়ী ম্যান্ডেলার দল

প্রকাশিত: ০০:৪৪, ১২ মে ২০১৯

দক্ষিণ আফ্রিকার নির্বাচনে আবারও জয়ী ম্যান্ডেলার দল

অনলাইন ডেস্ক ॥ দক্ষিণ আফ্রিকায় পার্লামেন্ট নির্বাচনে আবারও জিতেছে ক্ষমতাসীন আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস (এএনসি)। এই দলের হয়েই দেশটিতে দীর্ঘদিন বর্ণবাদ অবসান আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েচেন দেশটির অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা। বর্ণবাদ যুগের অবসানের পর ২৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা দলটি আবারও নির্বাচনে জিতলেও এবারে কমেছে তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা। শনিবার দেশটির নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত আনুষ্ঠানিক ফলাফল অনুযায়ী, এএনসি এবারে ৫৭ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট পেয়েছে। ২০১৪ সালের সর্বশেষ নির্বাচনে দলটি ৬২ শতাংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল। বর্ণবাদী যুগপর্ব অবসানের ২৫ বছর পর গত বুধবার দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত হয় ষষ্ঠ পার্লামেন্ট নির্বাচন। বিগত ৫টি নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে এই ২৫ বছর দেশ শাসন করেছে বর্ণবাদবিরোধী লড়াইয়ের নেতৃত্বদানকারী সংগঠন আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস (এএনসি)। কিন্তু বিগত ২৫ বছরে সে দেশে গণতান্ত্রিক অগ্রগতিকে খুব সন্তোষজনক বলার সুযোগ নেই। দারিদ্র্য ও বেকারত্ব থেকে মুক্তি মেলেনি সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের। এর সঙ্গে সঙ্গে রয়েছে দলটির নেতৃস্থানীয়দের দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ। সবমিলে এএনসির সমর্থন কমে আসায় শাসন ক্ষমতায় ফেরার প্রশ্নে মধ্যপন্থী ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স (ডিএ) ও ইকোনোমিক ফ্রিডম ফাইটারস (ইএফএফ) নামের দুইটি রাজনৈতিক দলের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে এএনসি। নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিতের পর প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা বলেন, এই নির্বাচন দক্ষিণ আফ্রিকায় স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের রাজত্ব নিশ্চিত করেছে। তিনি বলেন, আমাদের জনগণ সবার জন্য একটি উন্নত দক্ষিণ আফ্রিকা গড়তে আমাদের সব নেতাকে জোরালো সমর্থন দিয়েছে। রামাফোসার আগে এএনসি ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল জেসি দুয়ার্তে অবশ্য অনেকটা নমনীয় স্বরে কথা বলেন। তিনি বলেন তাদের দল খুব দ্রুত দুর্নীতি প্রতিরোধ ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জনের দিকে ধাবিত হবে। তিনি বলেন, আমাদের ভুলগুলো শোধরানো দরকার। নির্বাচন আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে যে এএনসি ঐক্যবদ্ধ রয়েছে আর যে মূল্যবোধ ও নীতির ওপর তা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল আজও তা সত্য রয়ে গেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার নির্বাচনি আইন অনুযায়ী ব্যালট পেপারে থাকা দলগুলোর মধ্য থেকে একটি দল বেছে নেন ভোটাররা। প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে দলগুলো ৪০০ সদস্যকে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির সদস্য মনোনীত করে। ওই আইন প্রণেতারা পরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করে থাকেন। ক্ষমতায় ফিরলেও গত ২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ফলাফল করেছে এএনসি। ২০১৪ সালে দলটির সমর্থন ছিলো ৬২ শতাংশ। ২০০৪ সালে রেকর্ড ৬৯ শতাংশ ভোট পেয়েছিল দলটি। এবারে ৫৭ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট পাওয়া এএনসি ৪০০ আসনের পার্লামেন্টে ২৩০ সদস্যকে মনোনীত করতে পারবে। এছাড়া ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স ২০ দশমিক ৭৭ শতাংশ ভোট পেয়েছে। এতে পার্লামেন্টে ৮৮টি আসন পাবে তারা। ২০১৪ সালের নির্বাচন থেকে দুই শতাংশ বেশি ভোট পেয়েছে দলটি। শুক্রবার দলটির নেতা মুসি মাইমানে বলেন তিনি আত্মবিশ্বাসী যে তার দলের সমর্থন বাড়তে থাকবে আর ভবিষ্যত নির্বাচনে আরও ভালো ফল করবে। এছাড়া আরেক রাজনৈতিক দল ইকোনোমিক ফ্রিডম ফাইটারস (ইএফএফ) পেয়েছে প্রায় ১১ শতাংশ ভোট। পার্লামেন্টে দলটির আসন সংখ্যা হবে ৪৪। ২০১৪ সালের নির্বাচন থেকে প্রায় ৫ শতাংশ ভোট বেড়েছে দলটির।
×