সন্তানের চিকিৎসা করাতে এসে ডাক্তারের যৌন হয়রানির শিকার গৃহবধূ

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, ১৫ মে ॥ বাউফল হাসপাতালে সন্তানের চিকিৎসা করাতে এসে চিকিৎসকের যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন এক গৃহবধূ (২২)। তার বাড়ি কালাইয়া ইউনিয়নের আয়নাবাজ কালাইয়া গ্রামে। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ওই গৃহবধূর সন্তানকে অন্য হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনা ঘটেছে। জানা গেছে, ঘটনার দিন বেলা সোয়া ১১টার সময় ওই গৃহবধূ তার ১১ মাস বয়সী সন্তানকে নিয়ে বাউফল হাসপাতালে আসেন এবং ডাক্তার আবদুর রউফের অধীন তাকে ভর্তি করেন। (হাসপাতালে ভর্তির রেজিস্ট্রেশন নম্বর ২৭৪৮/৭) সন্ধ্যার দিকে ডাক্তার আবদুর রউফ ওই গৃহবধূকে মোবাইল ফোনে কল করে হাসপাতাল কোয়ার্টারের তার চেম্বারে দেখা করতে বলেন। এরপর রাত ৮টার সময় ওই গৃহবধূ তার মাকে সঙ্গে নিয়ে ডাক্তারের চেম্বারে যান। ওই গৃহবধূর সঙ্গে তার মাকে দেখে ডাক্তার রাগান্বিত হয়ে ওঠেন এবং তাকে পুনরায় হাসপাতালে গিয়ে ভর্তির কাগজপত্র নিয়ে একা আসতে বলেন। প্রায় ১০ মিনিট পর ওই গৃহবধূ ডাক্তারের চেম্বারে যান। তখন চেম্বারে তিনি ছাড়া অন্য কেউ ছিলেন না। এই সুযোগে ডাক্তার আবদুর রউফ তাকে কুপ্রস্তাব দেন। তিনি রাজি না হওয়ায় ডাক্তার রউফ তাকে জাপটে ধরেন এবং শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন। ওই গৃহবধূ ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে চেম্বার থেকে বাইরে এসে তার এক মামাকে মোবাইল করলে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে চলে আসেন এবং ডাক্তার রউফের চেম্বারে ঢুকে তাকে কিল ঘুষি মারেন। ঘটনাটি ছড়িয়ে পরলে স্থানীয় কয়েক সাংবাদিকসহ ২০-২৫ জন লোক ঘটনাস্থলে জড়ো হন। ওই গৃহবধূর পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে। এদিকে এ ঘটনার পর বুধবার হাসপাতাল থেকে ওই গৃহবধূর সন্তানকে পটুয়াখালী রেফার করা হয়েছে। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে তাকে রেফার করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, ডাক্তার আবদুর রউফ বাউফল হাসপাতালে এর আগেও চাকরি করেছেন। ওই সময় তার বিরুদ্ধে একাধিক নারী ঘটিত অভিযোগ উঠেছিল। কয়েক মাস আগেও তিনি এক তরুণীকে ভুল বুঝিয়ে কাবিন রেজিস্ট্রি ছাড়াই বিয়ে করেন এবং এক মাস পর তার সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করেন। চারিত্রিক সমস্যার কারণে প্রথম স্ত্রী তাকে তালাক দেন। এরপর ডাক্তার আবদুর রউফ দ্বিতীয় বিয়ে করেন। ওই স্ত্রী বর্তমানে গ্রামের বাড়িতে থাকেন। বাউফল হাসপাতালের কোয়ার্টারে তিনি একা থাকেন। আর এই সুযোগে তিনি অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ছেন। এ বিষয়ে ডাঃ আবদুর রউফ বলেন, ঘটনাটি সত্য নয়। তার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে একটি মহল এ অপপ্রচার চালিয়েছে। বাউফল হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবাবর পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ প্রশান্ত কুমার সাহা (পিকে সাহা) বলেন, ঘটনাটি আমাকে মৌখিক ভাবে জানানো হয়েছে। কোন লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়নি। তবে ডাক্তারদের নিয়ে আলোচনা করে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।