ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দুর্নীতিমুক্ত সরকারী সেবা

প্রকাশিত: ০৯:১৪, ১৬ মে ২০১৯

 দুর্নীতিমুক্ত সরকারী সেবা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবারের নির্বাচনী অঙ্গীকারে দৃপ্ত প্রত্যয়ে ঘোষণা দিয়েছেন দুর্নীতির ব্যাপারে সরকারের অবস্থান হবে একেবারে শূন্য সহিষ্ণুতা। সেই লক্ষ্যে বর্তমান সরকার বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনায় দেশকে নিয়ম-শৃঙ্খলার আবর্তে এগিয়ে নেয়ার পদক্ষেপ নিতে থাকে। সরকারের পাশাপাশি দুর্নীতি দমন কমিশনও এমন দায়বদ্ধতায় সরকারী বিভিন্ন সেবা প্রদান কর্মযজ্ঞে তাদের নজরদারি এবং জরিপের মাধ্যমে দুর্নীতির সূত্রগুলোকে চিহ্নিত করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তবে সরকারী সেবা প্রদান সংস্থাগুলো পদ্ধতিগত ত্রুটি-বিচ্যুতির কারণে দুর্নীতি নামক অপকর্ম থেকে কোনভাবেই বের হয়ে আসতে পারছে না। সরকারী এমন সব ব্যবস্থাপনার ওপর দুদক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দিয়েছে, যাতে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ১৪টি সরকারী প্রতিষ্ঠানের সেবা প্রদান কর্মযোগে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি, বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতার চিত্র স্পষ্টভাবে উঠে আসে। এসব ব্যাপারে দুদক দুর্নীতির উৎস ও প্রতিকার সংক্রান্ত পরামর্শ এবং নির্দেশ দিয়েছে প্রতিবেদনে। ভূমি ব্যবস্থাপনা, সহজে পাসপোর্টপ্রাপ্তি, স্বাস্থ্য, আয়কর, হিসাবরক্ষণ অফিসগুলো, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, বেসরকারী বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, সরকারী নিয়োগ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ, আইনশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠান এমন সব জনকল্যাণমূলক সংস্থায় দুর্নীতি, অনিয়ম এবং জনহয়রানির সম্ভাব্য কারণসমূহ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে শতাধিক সুপারিশও নির্দেশিত হয়েছে দুর্নীতি রোধে। উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানসমূহে সার্বিক ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতি এবং দীর্ঘসূত্রতা প্রকটভাবে দৃশ্যমান। এসব অনৈতিক কার্যক্রমের উদ্ভূত সঙ্কট মোকাবেলা করতে হয় অসহায় মানুষগুলোকে। নতুন করে পাসপোর্ট প্রদান পদ্ধতির মধ্যে আধুনিক কর্মপ্রক্রিয়া সংযুক্ত দুর্নীতি সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়- শুরু থেকেই দালালদের দৌরাত্ম্য, যাচাই কার্যক্রমে পুলিশী হয়রানি, যা ঘুষের মাধ্যমে সমাধান করা হয়। তারপরেও আছে অসাধু আর অদক্ষ কর্মকর্তাদের দুর্নীতির সুযোগ নেয়ার মতো অনৈতিক অপকৌশল। এমন কঠিন আবর্ত থেকে বের হওয়ার পথও নির্দেশিত হয়েছে। এছাড়াও অধিদফতরে ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করা বিশেষ প্রয়োজন। চিকিৎসাসেবায়ও দুদকের তথ্যে হরেকরকম অনিয়ম আর বিশৃঙ্খলার বিষয়টি স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে। বিশেষ করে হাসপাতালে চিকিৎসকদের অনুপস্থিতি প্রায় নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। চিকিৎসাসেবায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এই সেবা প্রদান সংস্থাকে নতুন মাত্রা দিতে পারে। দুদকের তথ্য এবং পরামর্শ অনুযায়ী দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিটি খাতকে বিশেষ নজরদারিতে এনে আধুনিকায়ন, নতুন প্রকল্প প্রণয়ন এবং অন্যায়ের কোন সুযোগ থাকবে না এমন ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণে অগ্রাধিকার দিতে হবে। দুদকের পক্ষ থেকে সমস্যা চিহ্নিত করে প্রতিকারের যেসব উপায় নির্দেশ করা হয়েছে, তার বাস্তবায়ন সব থেকে জরুরী।
×