ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

জানালেন তথ্যমন্ত্রী

বিটিভি ভারতে দেখানো নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে

প্রকাশিত: ১০:২৪, ১৬ মে ২০১৯

 বিটিভি ভারতে দেখানো নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, রাষ্ট্র নয়, বিএনপিই অকার্যকর দলে পরিণত হয়েছে। পাশাপাশি তিনি বলেন, সংবাদপত্র কর্মচারী ও প্রেস শ্রমিকবৃন্দ গণমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সংবাদপত্র প্রকাশ ও মানুষের কাছে তা পৌঁছাতে তাদের ভূমিকা প্রশংসার দাবিদার। বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে এবং সভাকক্ষে বাংলাদেশ সংবাদপত্র কর্মচারী ফেডারেশন ও বাংলাদেশ ফেডারেল ইউনিয়ন অব নিউজ পেপার প্রেস ওয়ার্কার্সের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি বিএনপির মহাসচিব মীর্জা ফখারুল ইসলাম আলমগীরের ‘বাংলাদেশ অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে’ এমন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেল বিটিভি ভারতে প্রদর্শন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। এনিয়ে সুসংবাদ তৈরি হয়ে আছে, এখন শুধু ঘোষণার অপেক্ষা। সচিবালয়ের ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাসের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান। ড. হাছান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলেছে। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশ, খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশ, মানুষের মাথাপিছু আয় গত ১০ বছরে ৬০০ ডলার থেকে ২০০০ ডলারে দাঁড়িয়েছে, দারিদ্র্য ৪০ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে নেমে এসেছে, মানুষের গড় আয়ু ৬৭ থেকে ৭৩ বছরে উন্নীত হয়েছে- এভাবে রাষ্ট্র এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বিএনপি’টা ফখরুল ইসলাম আলমগীরদের নেতৃত্বে অকার্যকর হয়ে যাচ্ছে। এ সময় বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কেরানীগঞ্জের নতুন কারাগারে স্থানান্তর বিষয়ে বিএনপি’র আপত্তির প্রতি সাংবাদিকবৃন্দ দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছিল যে, খালেদা জিয়াকে পুরনো একটি ভবনে স্যাঁতসেতে পরিবেশে রাখা হয়েছে। পুরনো ঢাকার সেই ভবনটিকে আধুনিক সুযোগ-সুবিধায় সজ্জিত করার পরও তারা এ অভিযোগ করে আসছিল। এখন যখন কেরানীগঞ্জের নতুন সব সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন ভবনে বেগম জিয়াকে স্থানান্তর করা হচ্ছে, এতে বিএনপির খুশি হওয়ার কথা। কিন্তু এর বিরুদ্ধেও রিজভী আহম্মেদ সংবাদ সম্মেলন করছেন, যার কারণ বোধগম্য নয়। বেগম জিয়াকে কোথায় রাখলে তারা খুশি হবেন? পাল্টা প্রশ্ন করেন তথ্যমন্ত্রী। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সংবাদপত্র কর্মচারী ও প্রেস শ্রমিকবৃন্দ গণমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সংবাদপত্র প্রকাশ ও মানুষের কাছে তা পৌঁছাতে তাদের ভূমিকা প্রশংসার দাবিদার। সংগঠন দুটির নেতৃবৃন্দ এ সময় ১০টি দাবি সংবলিত একটি যৌথ স্মারকলিপি মন্ত্রীকে হস্তান্তর করেন। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, দ্রুত নবম ওয়েজবোর্ডের গেজেট প্রকাশ, কর্মচারী ও প্রেস শ্রমিকদের জন্য কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন, নিউজপেপার সার্ভিস এ্যাক্ট ১৯৭৪ ফিরিয়ে আনা, নিজস্ব অফিস ভবন ও আবাসনের ব্যবস্থা, সংবাদপত্র শিল্প নীতিমালা প্রণয়ন, সংবাদপত্র শিল্পের সুবিধা শ্রমিক কর্মচারীদেরকে সাংবাদিকদের সমান হারে দেয়া, কর্মচারী-শ্রমিকদের বকেয়া দ্রুত পরিশোধ, ছাঁটাই বন্ধ ও অস্থায়ী শ্রমিক-কর্মচারীদের ছয় মাসের মধ্যে স্থায়ী করা, ট্রেড ইউনিয়নের পূর্ণ অধিকার দেয়া ও ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন না করা পত্রিকায় সরকারী সুবিধা বন্ধ করা। মন্ত্রী দাবিগুলো সুবিবেচনার আশ্বাস দেন। বাংলাদেশ সংবাদপত্র কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি মোঃ মতিউর রহমান তালুকদার ও বাংলাদেশ ফেডারেল ইউনিয়ন অব নিউজ পেপার প্রেস ওয়ার্কার্সের সভাপতি মোঃ আলমগীর হোসেন খানের নেতৃত্বে কর্মচারীদের প্রতিনিধি মোঃ বজলুর রহমান মিলন, মোঃ খায়রুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম, মোঃ মাহবুব আলম, মোঃ সেকান্দার আলী, দেবেন্দ্রনাথ মজুমদার, মোঃ সোহেল আহমদ এবং মোঃ আসাদুজ্জামান এবং শ্রমিক প্রতিনিধি মোঃ কামাল উদ্দিন, মোঃ শামীম চৌধুরী, মোঃ আহসান উল্লাহ, মোঃ আবু কাউসার, মোঃ তাজাম্মেল হক, মোঃ আব্দুল মান্নান, মোঃ রফিকুল ইসলাম এবং লিয়াকত আলী সভায় অংশ নেন। ভারতীয় হাইকমিশনারের সৌজন্য সাক্ষাত ॥ এর আগে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য সচিবালয়ে তার দফতরে এলে প্রায় ঘণ্টাখানেক স্থায়ী বৈঠকে দু’দেশের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন তারা। বুধবার সচিবালয়ের ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাই কমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাসের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান। তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো যাতে ভারতে দেখানো সম্ভবপর হয় সেটি নিয়ে আলোচনা করেছি। বিটিভি ভারতে দেখানোর ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। আমি এখনই এ বিষয়ে বলতে চাই না, যেহেতু ভারতে নির্বাচন চলছে। কিন্তু খুব শীঘ্রই আপনাদের সুসংবাদ আমরা দিতে পারব, সুসংবাদ তৈরি হয়ে আছে, (এখন) ঘোষণা করতে চাই না। বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাণে স্ক্রিপ রাইটার আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশে আসবেন বলে জানান হাছান মাহমুদ। ভারত-বাংলাদেশের প্রযোজনায় বঙ্গবন্ধুর ওপর একটি ছবি নির্মিত হতে যাচ্ছে। সেই ছবির পরিচালক হচ্ছেন শ্যাম বেনেগাল। সেটি নিয়ে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভীর নেতৃত্বে তথ্য সচিবসহ সেখানে গিয়েছিলেন। সেখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। বঙ্গবন্ধু ফিল্মের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। স্ক্রিপ রাইটার আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশে আসবেন এবং দুই সপ্তাহ থাকবেন। হাছান মাহমুদ জানান, যৌথ মালিকানা ও প্রযোজনায় এই চলচ্চিত্রটিতে বাংলাদেশের ৬০ ভাগ এবং ৪০ ভাগ মালিকানা ভারত সরকারের। ইতোমধ্যে ভারতের পক্ষ থেকে প্রযোজনীয় অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, কাজ শুরু হয়ে গেছে। ভারতের হাইকমিশনারের সঙ্গে ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান তথ্যমন্ত্রী।
×