ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

‘গণপরিবহনে ৯৮ শতাংশ যাত্রী নৈরাজ্যের শিকার’

প্রকাশিত: ০৮:১৫, ১৮ মে ২০১৯

‘গণপরিবহনে ৯৮ শতাংশ যাত্রী নৈরাজ্যের শিকার’

অনলাইন রিপোর্টার ॥ পবিত্র রমজানের শুরু থেকে পরিবর্তিত অফিস সময় অনুযায়ী যাতায়াতে ইফতারির পূর্ব মুহূর্তে যানজট, গণপরিবহন সংকটসহ নানা কারণে নগরীর যাত্রী সাধারণ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে বলে জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সংস্থাটির দাবি, রমজান মাসে বিকাল ৩ টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত নগরীতে চলাচলকারী বাস-মিনিবাসের প্রায় ৯৭ শতাংশ সিটিং সার্ভিসের নামে দরজা বন্ধ করে যাতায়াত করছে এবং ৯৮ শতাংশ যাত্রী অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্যের শিকার হচ্ছে। শনিবার (১৮ মে) সংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদনে বলা হয়,নগরীর মাঝপথের বিভিন্ন স্টপেজের যাত্রীসাধারণ চরম নৈরাজ্যের শিকার হচ্ছে। এইসব বাসগুলো সরকার নির্ধারিত ভাড়ার পরিবর্তে কোম্পানি কর্তৃক নির্ধারিত অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। এতে করে নিম্নআয়ের লোকজনের যাতায়াত দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে নগরীতে চলাচলকারী সিএনজি অটোরিকশা শতভাগ চুক্তিতে চলাচল করছে। এতে মিটারের প্রায় ৩-৪ গুণ বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এছাড়াও যাত্রীদের পছন্দের গন্তব্যে যেতে রাজি হয়না ৯৩ শতাংশ অটোরিকশা। অনেকটা কাকতালীয়ভাবে ড্রাইভারের পছন্দের গন্তব্যে মিলে গেলে রাজি হয় যাত্রীর গন্তব্যে যেতে। এদিকে কমলাপুর, মগবাজার, শনিরআখড়া, গুলিস্তান, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, পোস্তগোলা,শাহবাগ,ফার্মগেট,মিরপুর-১০,মহাখালী,আগারগাঁও,ধানমন্ডি,বনানী,বারিধারাসহ নগরীর অনেক গুরুত্বপূর্ণ এলাকার রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও ট্যাক্সি ক্যাবের দেখা মিলে না। নৈরাজ্যে যুক্ত হয়েছে রাইড শেয়ারিং অ্যাপ যাত্রী কল্যাণ সমিতির অভিযোগ, এই নৈরাজ্যে প্রথমবারের মতো যুক্ত হয়েছে রাইড শেয়ারিং এর নামে চলাচল করা মোটরবাইকগুলো। বিকাল ৪টার পর থেকে অ্যাপস এর পরিবর্তে চুক্তিতে ৩ থেকে ৪ গুণ অতিরিক্ত ভাড়ায় যাত্রী বহন করার চিত্র নগর জুড়ে দেখা গেছে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক যাত্রী ছাউনি না থাকায় বা যাত্রী ছাউনিগুলো বেদখলে থাকায় তীব্র গরমে নাজুক পরিস্থিতির মুখে পড়ছে নগরীর রোজাদার যাত্রীসাধারণ। বিশেষত নারী,শিশু,বৃদ্ধ ও অসুস্থ রোগীরা এহেন পরিস্থিতিতে ভয়াবহ অবস্থার মুখোমুখি হলেও রাস্তার কোথাও দাড়াঁনো বা বসে বিশ্রামের সুযোগ মেলে না। যাত্রী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়,বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির গণপরিবহনের ভাড়া নৈরাজ্য ও যাত্রীসেবা পর্যবেক্ষণ উপ-কমিটির ৩টি টিম গত ৭ দিন যাবৎ নগরীতে উল্লেখিত স্পটগুলোতে রমজান মাসে যাত্রী ভোগান্তি ও ভাড়া নৈরাজ্য পর্যবেক্ষণ করে। পর্যবেক্ষণকালে উল্লেখিত এলাকায় বাস-মিনিবাস,অটোরিক্সা, ট্যাক্সিক্যাব,রাইড শেয়ারিং সার্ভিস সমূহের যাত্রীসেবা পরিস্থিতি,চালক ও যাত্রীসাধারণের সঙ্গে কথা বলে প্রতিবেদনটি তৈরি করে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়,পর্যবেক্ষণকালে ৯০ শতাংশ যাত্রী রমজানে গণপরিবহন ব্যবস্থার এহেন কর্মকাণ্ডের ওপর তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন। ৯৫ শতাংশ যাত্রী প্রতিদিন যাতায়াতে দুর্ভোগের শিকার হন। ৯৮ শতাংশ যাত্রী অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্যের শিকার হয়। ৬৮ শতাংশ যাত্রী চলন্তবাসে ওঠানামা করতে বাধ্য হন। সিটিং সার্ভিসের নামে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েও ৩৬ শতাংশ যাত্রী দাঁড়িয়ে যেতে বাধ্য হন। হয়রানীর শিকার হলেও অভিযোগ কোথায় করতে হয় জানেনা ৯৩ শতাংশ যাত্রী। তবে ৯০ শতাংশ যাত্রী মনে করেন অভিযোগ করে কোনও প্রতিকার পাওয়া যায় না বলেই তারা অভিযোগ করেন না। যাত্রী ভোগান্তির এহেন চিত্র জাতীয় দৈনিক ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় গুরুত্ব পেলেও এইসব ভোগান্তি নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তৎপরতা লক্ষ করা যায়নি।
×