ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নওগাঁয় পাঁচ পরিবার একঘরে ॥ মসজিদ ও স্কুলে যেতেও বাধা

প্রকাশিত: ০৮:৩২, ২০ মে ২০১৯

  নওগাঁয় পাঁচ পরিবার একঘরে ॥ মসজিদ ও স্কুলে যেতেও বাধা

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ, ১৯ মে ॥ অন্যের পুকুর দখলে অংশগ্রহণ না করার কারণে পোরশা উপজেলার মশিদপুর ইউনিয়নের গোরখাই গ্রামের মৃত শহিদুল ইসলামের ছেলে মজিবর রহমানসহ তার অপর চার ভাইকে গত এক মাস ধরে একঘরে করে রেখেছে গ্রাম্য মাতবররা। শুধু এক ঘরে করেই তারা ক্ষান্ত হয়নি। তাদের মসজিদে নামাজ আদায়, ছেলে মেয়েদের স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করতেও নিষেধ করেছে তারা। এছাড়া তাদের বাড়িতে কোন দিনমজুরকেও কাজ করতে দিচ্ছে না ওই মাতবররা। ওই মাতবররা এক ঘরে পরিবারগুলোর সদস্যদের অব্যাহতভাবে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে আসছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনায় মজিবর বাদী হয়ে পোরশা থানায় লিখিত অভিযোগ করেও কোন ফল হয়নি বলে তিনি জানান। জানা গেছে, গোরখাই গ্রামের মৃত শহিদুল ইসলামের পাঁচ ছেলে মজিবর রহমান, আব্দুর রহমান, আইনুল ইসলাম, আব্দুর রহিম ও আব্দুল লতিফ দীর্ঘদিন যাবত একত্রে বসবাস করে আসছেন। তারা পোরশার পুরইল গ্রামের ইব্রাহীম শাহর একটি পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষ করে আসছেন। তাদের লিজ নেয়া পুকুরটি জোর করে দখল ছেড়ে দেয়ার জন্য গ্রামের ডাবরের ছেলে সাদের ও কাদের, গফুরের ছেলে আবুল কালাম, শমসেরের ছেলে মোকছেদ ও মাহবুরের ছেলে মালেকের নেতৃত্বে কিছু লোক ওই পাঁচ ভাইকে চাপ দেয়। এতে তারা রাজি না হওয়ায় তাদের এক ঘরে করা হয়। এরপরও থেমে নেই। গ্রামের মসজিদের ইমামের মাধ্যমে ওই পাঁচ ভাই ও তাদের পরিবারকে মসজিদে নামাজ পড়তে নিষেধ করা হয়। ফলে পবিত্র রমজান মাসেও তারা মসজিদে নামাজ পড়তে পারছেন না এবং তাদের ছেলে মেয়েদের স্থানীয় মাদ্রাসায় পড়তে যেতে নিষেধ করা হয়েছে বলে মজিবর জানান। এছাড়াও নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি জানান, কোন দিনমজুরকে কাজে লাগালে তারা ওই দিনমজুরকে তাদের কাজ করতে নিষেধ করছে। নিষেধ না শুনলে যে কোন মুহূর্তে বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যাবে বলে তারা বলছেন। বর্তমানে ওই পরিবারগুলো তাদের স্ত্রী সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে ওই গ্রামের মসজিদের ইমাম আজাহার আলী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তার মাধ্যমে নিষেধ করার ফলে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলে জানান তিনি। তবে তিনি মজিবরকে নামাজ পড়তে দেখেছেন কিন্তু তাদের ছেলেমেয়ে মাদ্রাসায় আসেন না বলে জানান। পোরশা থানা অফিসার ইনচার্জ শাহিনুর রহমান জানান, তিনি খবরটি শুনেই ওই গ্রামে গিয়েছিলেন। এ বিষয়ে অভিযোগ রয়েছে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পোরশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল হামিদ রেজা জানান, তিনি শনিবার ওই গ্রামে গিয়ে দু’পক্ষের কথা শুনেছেন। অবশ্যই পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান।
×