ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ভেজাল দেয়া হত্যার শামিল, সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি

প্রকাশিত: ১০:১৭, ২০ মে ২০১৯

  ভেজাল দেয়া হত্যার শামিল, সর্বোচ্চ  শাস্তি দাবি

বিকাশ দত্ত ॥ আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে । কবি ভারত চন্দ্র রায় গুনাকরের কবিতায় দুধের বিষয়টি এভাবেই উঠে এসেছে। প্রাচীনকাল থেকে দুধ ও দইয়ের ওপর মানুষ নির্ভরশীল। প্রাচীনকাল থেকে শিশু খাদ্য হিসেবে দুধ ব্যবহৃত হয়ে আসছে। দুধ ও দই স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। কিন্ত বর্তমানে দুধ ও দইয়ের কথা শুনলে মানুষ আঁৎকে ওঠে। একই সঙ্গে সয়াবিন, সরিষার তেল, লবণ, হলুদের গুঁড়াসহ ৫২ পণ্যে ভেজাল পাওয়া গেছে। এ সমস্ত খাদ্যদ্রব্য খেলে মানুষের মৃত্যু অবধারিত। আইনবিশেষজ্ঞদের অভিমত, যারা খাদ্যে ভেজাল দিচ্ছে তাদের কোন ক্রমেই ক্ষমা করা যায় না। জেনেশুনে খাদ্যে ভেজাল দেয়াটা হত্যার শামিল। এসব খাদ্য নীরব ঘাতক হিসেবে কাজ করছে। যাদের এমন সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে তাদের অতিশীঘ্র বিচারের আওতায় আনা উচিত। আইন সংশোধন করে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ- দেয়া উচিত। খাদ্যমন্ত্রী ইতোমধ্যে বলেছেন, ভেজাল প্রতিরোধে প্রয়োজনে নিরাপদ খাদ্য আইন সংশোধন করে যাবজ্জীবন কারাদ- ও মৃত্যুদ-ের বিধান রাখা হবে। নিম্নমানের ৫২টি পণ্য বাজার থেকে তুলে নিয়ে ধ্বংস করতে আদালতের নির্দেশের পরে সচেতনতা বেড়েছে ভোক্তা শ্রেণীর মধ্যে। কিন্তু কিছু কোম্পানি বাজার থেকে তাদের পণ্য তুলে নিলেও অনেক দোকানে এখনও রয়ে গেছে নিম্নমানের বেশকিছু নিত্যপণ্য। আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর অভিযান শুরু করেছে। এদিকে হাইকোর্ট বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড এ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই), নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের জাতীয় নিরাপদ খাদ্য গবেষণাগারকে সতর্ক করে বলেছে, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে আদালত কাউকে ছাড় দেবে না। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ হাইকোর্টে তাদের ল্যাবের গবেষণামূলক রিপোর্টে জমা দিয়েছে। তাতে দেখা গেছে, সেই গরুর দুধে এ্যান্টিবায়োটিক, দইয়ে ক্ষতিকর সিসা। ৫২টি খাদ্যেদ্রব্যেও ভেজাল। এ সমস্ত খাদ্যদ্রব্য খেয়ে মানুষ তিলে তিলে মৃত্যু মুখে পতিত হবে। চারদিক ভেজাল খাদ্যপণ্যে সয়লাব। হাত বাড়ালেই ভেজাল পণ্য। খাদ্যে ভেজাল মেশানোর কারণে মানুষ কিডনি ও লিভার, ক্যান্সার ও চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছে। কোনভাবে ভেজাল বন্ধ করা যাচ্ছে না। ভেজালের কারণে আদালতও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ভেজাল খাদ্যদ্রব্যের বিষয়ে আদালত সোচ্চার হয়েছে। ঢাকাসহ সারা দেশের বাজারে কোন কোন কোম্পানির দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্যপণ্যে কী পরিমাণ ব্যাকটেরিয়া, কীটনাশক এবং সিসা মেশানো রয়েছে, তা নিরূপণ করে একটি তালিকা তৈরি ও জড়িতদের বিরুদ্ধে গৃহীত আইনী পদক্ষেপ প্রতিবেদন আকারে দাখিল করতে পুনরায় নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরির (এনএফএসএল) গবেষণায় গাভীর দুধে সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি কীটনাশক ও নানা ধরনের এ্যান্টিবায়োটিকের উপাদান পাওয়া সংক্রান্ত প্রতিবেদনসহ প্রতিষ্ঠানটির ডাঃ শাহনীলা ফেরদৌসকে হাজির হতে বলেছে হাইকোর্ট। ২১ মে ওই প্রতিবেদনসহ হাইকোর্টে হাজির থাকতে বলা হয়েছে। বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। অন্যদিকে বিভিন্ন খাদ্যপণ্যে ভেজালের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রয়োজনে মাদকবিরোধী অভিযানের মতো মানহীন অনিরাপদ খাদ্যপণ্যের বিরুদ্ধেও সরকারকে যুদ্ধ ঘোষণার অনুরোধ জানিয়েছে হাইকোর্ট। বাজারে প্রচলিত মানবদেহ ও জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ মানহীন পণ্যের কারণে বাংলাদেশে বসবাস অনিরাপদ হয়ে উঠছে । এ সময় ৫২ প্রতিষ্ঠানের মানহীন ৫২টি খাদ্যপণ্য বাজার থেকে দ্রুত প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত এক রিটের শুনানিতে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ প্রদান করে। আদালতের আদেশের পর বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ৫২টি মানহীন পণ্য বাজার থেকে প্রত্যাহারের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়। আগামী ২৩ মে এই রিট আবেদনের পরবর্তী শুনানির দিন রেখেছে আদালত। মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ॥ বাজারে প্রচলিত মানবদেহ ও জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ মানহীন পণ্যের কারণে বাংলাদেশে বসবাস অনিরাপদ হয়ে উঠছে। গরুর কাঁচা দুধে এ্যান্টিবায়োটিক, দইয়ে ক্ষতিকর সিসা ও গোখাদ্যেও মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশকসহ নানা ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক পাওয়া গেছে। বিষয়গুলো মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এ সব খাদ্যপণ্য গ্রহণে মানুষ কিডনি, যকৃৎসহ নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বাজারের ৯৬টি তরল দুধের নমুনা পরীক্ষা করে ৯৩টিতেই সিসাসহ মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর উপাদান পেয়েছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। এছাড়া প্যাকেটজাত ৩১টি দুধের মধ্যেও ১৮টিতে ক্ষতিকর উপাদান এবং কিছু কিছু দুধের নমুনায় টেট্রাসাইক্লিন ও সিপ্রোফ্লক্সাসিনের মতো এ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। অন্যদিকে ৫২ প্রতিষ্ঠানের মানহীন ৫২টি খাদ্যপণ্য বাজার থেকে দ্রুত প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। বাজারে থাকা ১৮টি কোম্পানির এসব পণ্য দ্রুত অপসারণ করে ধ্বংস এবং মানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত তার উৎপাদন বন্ধ করতেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরকে এসব নির্দেশ বাস্তবায়ন করে আগামী ১০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। খাদ্যে ভেজালের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ ঘোষণা’ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আদালত; এজন্য প্রয়োজনে ‘জরুরী অবস্থা’ ঘোষণা করতেও বলা হয়েছে। জাতীয় নিরাপদ খাদ্য গবেষণাগারের (এনএফএসএল) এক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত খবর দেখে গত ১১ ফেব্রুয়ারি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ দুধ-দই ও গোখাদ্য পরীক্ষার আদেশ দেয় আদালত। গত ৮ মে বুধবার বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ হাইকোর্টে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছে। সেই প্রতিবেদনে ভয়াবহ চিত্রই উঠে এসেছে। বিচারপতি মোঃ নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চে দাখিল করা প্রতিবেদনে দাখিল করা হয়। একই সঙ্গে আদালতকে জানানো হয়েছে খাদ্যে ভেজাল মেশানোর পেছনে কারা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করতে ১৬ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত ১১ ফেব্রুয়ারি কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে দুধ-দইয়ে এ্যান্টিবায়োটিক অনুজীব, কীটনাশক, সিসা, গরুর দুধেও বিষের ভয়, শিরোনামে রিপোর্টের ভিত্তিতে স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করে হাইকোর্ট। রুলে তিন মাসের মধ্যে কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ দেয়া হয়। হাইকোর্টের ওই নির্দেশের পর গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ১৬ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের সদস্য মোঃ মাহবুব কবিরকে আহ্বায়ক করে এ কমিটি গঠন করা হয়। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয় জানিয়ে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটির কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরা হয় আদালতে উপস্থাপিত প্রতিবেদনে। মামলার পরবর্তী দিন রাখা হয়েছে ১৫ মে। আইন সংশোধন করে শাস্তি বাড়ানো হবে ॥ রাষ্ট্রপক্ষে নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট আদালতের ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বলেছেন, গত ১১ ফেব্রুয়ারি কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে দুধ-দইয়ে এ্যান্টিবায়োটিক অনুজীব, কীটনাশক, সিসা, গরুর দুধেও বিষের ভয়- শিরোনামে রিপোর্টের ভিত্তিতে স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করে হাইকোর্ট। রুলে তিন মাসের মধ্যে কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা গ্রহণের আদেশ দেয়া হয়। কোর্টে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পক্ষে জানানো হয় যে, তারা ১৬ সদস্যের কমিটি গঠন করে কার্যক্রম শুরু করেছে। কারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের চিহ্নিত করে কোর্টে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, যারা এই সমস্ত ভেজালের ব্যবসা করছে, তাদের কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত। ভেজাল খাদ্যদ্রব্য খেয়ে মানুষ মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে। অচিরেই আইন সংশোধন করে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ- করা উচিত বলে আমি মনে করি। এদিকে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, ভেজাল প্রতিরোধে প্রয়োজনে নিরাপদ খাদ্য আইন সংশোধন করে যাবজ্জীবন কারাদ- ও মৃত্যুদ-ের বিধান রাখা হবে। সম্প্রতি সচিবালয়ের ২ নম্বর গেটের সামনে নিরাপদ খাদ্য ও সচেতনতামূলক কর্মসূচীর উদ্বোধনের পর মন্ত্রী এসব কথা বলেন। ‘নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩’ তে খাদ্যে ভেজালের সর্বোচ্চ শাস্তি নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ বছরের কারাদ- ও ২০ লাখ টাকা জরিমানা। ইদানীং নিরাপদ খাদ্য আইন সংশোধনের একটা দাবি উঠেছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, এটুকু বলতে চাই, আইনটা প্রথম হয়েছে। আমরা প্রথমই যদি যাবজ্জীবন বা মৃত্যুদ- দিতাম। কিন্তু দেয়া হয়নি। আইনটা পাস হয়েছে অর্থাৎ বাচ্চাটার জন্ম হয়েছে। সংযোজন-বিয়োজন অনেক কিছুই করা যেতে পারে। অতিসত্বর বিচারের আওতায় আনতে হবে ॥ এ প্রসঙ্গে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহম্মেদ জনকণ্ঠকে বলেন, যারা খাদ্যে ভেজাল দেয় তাদেরকে কোন অবস্থাতেই ক্ষমা করা যায় না। তাদের মতো ক্রিমিনাল হতে পারে না। তারা জেনেশুনে খাদ্যে ভেজাল দিচ্ছে। এটা ঠা-া মাথায় মার্ডারের শামিল। এমন সংশ্লিষ্টতা যাদের আছে তাদেরকে অতিসত্বর বিচারের আওতায় আনা উচিত। তাদের ক্ষমা করার প্রশ্নই উঠে না। তাদেরকে বিচারের মাধ্যমে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ- দেয়া প্রয়োজন। তা হলেই ভেজালের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। এমপাওয়ারমেন্ট থ্রু ল অব দ্য কমন পিপল (এলকপ)-এর নির্বাহী পরিচালক এবং আইনজীবী ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল বলেন, নিরাপদ খাদ্যের অধিকারকে বহু আগেই বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগ ফ্যাপ ২০ মামলায় বাংলাদেশের সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদে উল্লেখিত ‘জীবনের অধিকার’-এর অন্যতম উপাদান হিসেবে ঘোষণা করেছে। পরবর্তীতে হিউম্যান রাইটস এবং পিস বনাম বাংলাদেশ মামলায় নিরাপদ এবং ভেজালমুক্ত খাদ্যকে জীবনের অধিকার বলে স্বীকৃতি দেয়া হয়। শুধু খাবার নয়, আপীল বিভাগ ২০০৭ সালে রাবেয়া ভূঁইয়া বনাম এলজিআরডি মামলায় নিরাপদ খাবার জল সরবরাহের যে সংবিধিবদ্ধ দায়িত্ব রয়েছে- সেই দায়িত্ব প্রতিপালনে সরকারী সংস্থাগুলোর ব্যর্থতাকে জীবনের অধিকার রক্ষায় ব্যর্থতা হিসেবে গণ্য করেছে। সংবিধানের ৩০ এবং ৩১ অনুচ্ছেদে বর্ণিত জীবনের অধিকার এবং এসব রায়ের ধারাবাহিকতায় আমরা দেখতে পেয়েছি যে, বর্তমান সরকার ২০১৩ সালে নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩ প্রণয়ন করেছে। আইন করে সেখানে সরকারকে জাতীয় নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা পরিষদ, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, কেন্দ্রীয় নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করার জন্য বলা হয়েছে। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে। বিভিন্ন মামলায় হাইকোর্ট বিভাগ থেকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এই কর্তৃপক্ষকে আরও বেগবান এবং যুগোপযোগী করার জন্য সরকারকে অবিলম্বে জাতীয় নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা পরিষদ এবং কেন্দ্রীয় নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করতে হবে। প্রতিবছর রমজান এলেই খাদ্যের মান এবং দাম নিয়ে পত্রপত্রিকাসহ সরকারের বিশেষায়িত সংস্থাগুলোর কর্মতৎপরতা পরিলক্ষিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১২ মে ২০১৯, বিএসটিআইর মানের পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ বিভিন্ন কোম্পানির ৫২টি খাদ্যপণ্য বিক্রি বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট, ব্যবস্থা নিতে বলেছে উৎপাদনকারীদের বিরুদ্ধে। কি আছে তদন্ত প্রতিবেদনে ॥ বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দিয়েছে । প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের আরেকটি প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে। (১) কাঁচা তরল দুধের ৯৬টি নমুনা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তার মধ্যে অণুজৈবিক বিশ্লেষণ রিপোর্ট অনুযায়ী, ৯৩টি নমুনাতে টিপিসি ও কলিফর্ম কাউন্ট ক্ষতিকর মাত্রায় বিদ্যমান এবং একটি নমুনায় সালমোনেলা পাওয়া গেছে। রাসায়নিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ৫টি নমুনাতে সিসা, ৩টিতে আফলাটক্সিন, ১০টিতে টেট্রাসাইক্লিন, একটিতে সিপ্রোফ্লক্সাসিন এবং ৯টিতে পেস্টিসাইট (এ্যান্ডোসালফান) ক্ষতিকর মাত্রায় পাওয়া যায়। (২) প্যাকেটজাত তরল দুধের ৩১টি নমুনার (দেশী ২১টি এবং আমদানি করা ১০টি) মধ্যে ১৭টি দেশী দুধের নমুনাতে টিপিসি ও কলিফর্ম কাউন্ট, ১৪টিতে মোল্ডস এবং আমদানি করা তরল দুধের একটি নমুনাতে কলিফর্ম কাউন্ট ক্ষতিকর মাত্রায় বিদ্যমান। রাসায়নিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, দেশী দুধের একটি নমুনাতে আফলাটক্সিন, ৬টিতে টেট্রাসাইক্লিন এবং আমদানি দুধের তিনটিতে টেট্রাসাইক্লিন ক্ষতিকর মাত্রায় রয়েছে। (৩) দইয়ের ৩৩টি নমুনার ১৭টিতে টিপিসি, ৬টিতে কলিফর্ম কাউন্ট, ১৭টিতে ইস্ট/ মোল্ড এবং একটিতে সিসা ক্ষতিকর মাত্রায় বিদ্যমান। (৪) পশু খাদ্যের ৩০টির মধ্যে ১৬টিতে ক্রোমিয়াম, ৪টিতে আফলাটক্সিন, ২২টিতে টেট্রাসাইক্লন, ২৬টিতে এনরোফ্লক্সাসিন, ৩০টিতে সিফরোফ্লক্সাসিন এবং ২টিতে পেস্টিসাইট (এ্যান্ডোসালফান) ক্ষতিকর মাত্রায় বিদ্যমান। ১৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এক সভায় মিলিত হন। সভায় ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবের গবেষক প্রফেসর ড. শাহনীলা ফেরদৌস বলেন, গরুর কাঁচা দুধের ৯৬টি উপাদান বিশ্লেষণ করা হয়েছে তন্মধ্যে অণুজৈবিক বিশ্লেষণ রিপোর্ট অনুয়ায়ী ৯৩টি নমুনাতে টিপিসি ও কলিফর্ম কাউন্ট ক্ষতিকর মাত্রায় বিদ্যমান। এবং একটি নমুনায় সালমোনেলা পাওয়া গেছে। রাসায়নিক বিশ্লেষণ রিপোর্ট অনুযায়ী ৫টি নমুনাতে লেড,৩টি নমুনায় আফলাটক্সিন, ১০টিতে টেট্রাসাইক্লিন, ১টিতে সিপ্রোফ্লক্সাসিন এবং ৯টিতে পেস্টিসাইড (এন্ডোসালফান)ক্ষতিকর মাত্রায় পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনে বিশেষজ্ঞদের মতামত ॥ বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রাক্তন সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সো: ইকবাল রউফ মামুন গবেষককে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, অল্প সংখ্যক নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নমুনা বিশ্লেষণে পজিটিভ রিপোর্ট পাওয়া গেলেও ক্ষতিকর মাত্রার নমুনা খুবই কম। ঋঅঙ এর অর্থায়নে পরিচালিত গবেষণার ফল গণমাধ্যমে প্রচারের পূর্বে ঋঅঙ এর মাধ্যমে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করা যেত বলে তিনি মন্তব্য করেন। কাঁচা দুধে স্বাভাবিক মাত্রায় কিছু অণুজীব থাকতে পারে তবে ১টি নমুনাতে সালমোনেলার উপস্থিতি উদ্বেগের কারণ হতে পারে। খামার পর্যায়ে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে দুধ উৎপাদনের বিষয়ে প্রাণিসম্পদ বিভাগ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। একইভাবে পেস্টিসাইডের উপস্থিতি প্রতিরোধে কৃষিসম্প্রসারণ অধিদফতরের বালাইনাশক ব্যবস্থাপনা উন্নত করা প্রয়োজন। আলোচ্য বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হলে সকল নমুনার সঠিক উৎস জানা প্রয়োজন বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। সিনিয়র ন্যাশনাল এডভাইজার, এফ এ ও প্রফেসর ড. শাহ মনির হোসেন বলেন, দৈনিক পত্রিকায় উপস্থাপনায় কিছুটা অতিরঞ্জিত থাকায় ভোক্তার মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আশু করণীয় সম্পর্কে বলেন, কাঁচা দুধ ভালভাবে ফুটিয়ে খেতে হবে। প্রাণিসম্পদ বিভাগকে দুগ্ধ খামরিদের স্বাস্থ্যসম্মতভাবে দুগ্ধ দোহন ও পরিবহনের পরামর্শ জোরদার করতে হবে। সরবরাহ চেনের সকল পর্যায়ে কুল-চেনের ব্যবস্থা থাকতে হবে। ড.আহম সাইফুল ইসলাম, পিএসও, সিডিআইএল বলেন, কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে উন্নত দুধেল গাভীর জাত সৃষ্টি করে দুধের উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়েছে। তবে অবশ্যই দুধের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এবং এ লক্ষ্যে নিবন্ধিত খামারগুলোতে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে দুগ্ধ উৎপাদনের জন্য খামরিদের প্রশিক্ষণ প্রদান ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত আছে । ড. মোঃ গিয়াস উদ্দিন,পরিচালক,এনআরএলবিএর আর আই,সাভার, ঢাকা উপস্থাপিত গবেষণা কার্যক্রমের কতিপয় সীমাবদ্ধতা প্রসঙ্গে বলেন, ৩টি জেলার শিল্প কারখানা অধ্যুষিত এলাকা থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। শিল্প কারখানার বর্জ্য এবং পেস্টিসাইডের রেসিডিউ দ্বারা দুগ্ধ দূষণ হতে পারে যা পরবর্তীতে গবেষণার বিষয়। নমুনা সংগ্রহের ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক যুক্তিগ্রাহ্যতা বিবেচনা করা হয়নি। ব্রুসেলোসিস ও টিবি রোগের জীবাণু ধ্বংসের জন্য মূলত পাস্তুরায়ন প্রক্রিয়া চালু করা হয়েছিল। সালমোনেলা,ই-কলাই ব্যাকটেরিয়া আমাদের ঐতিহ্যগত রন্ধন প্রক্রিয়ায় উচ্চতাপে ধ্বংস হয়ে যায়। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য ও কমিটির আহ্বায়ক মোঃ মাহবুব কবীর এ প্রসঙ্গে বলেন, খাদ্যে পেস্টিসাইড দূষণ জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। দুধে পেস্টিসাইড পাওয়া গেছে ক্ষতিকর মাত্রায়। খাদ্য নিরাপত্তা একটি মাল্টি সেক্টোরাল ইস্য। অথচ আন্তঃসমন্বয়ের অভাব প্রকট। সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থা ও স্টেকহোল্ডার সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণের ওপর তিনি জোর দেন। ভেজাল মেশানো বড় দুর্নীতি ॥ প্রসঙ্গত, সরকারের জাতীয় নিরাপদ খাদ্য গবেষণাগারের এক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে গত ১০ ফেব্রুয়ারি সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরদিন জনস্বার্থে প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে আনেন একজন আইনজীবী। ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকাসহ সারাদেশে দুধ ও দুগ্ধজাতীয় খাবারে কী পরিমাণ ভেজাল (ব্যাকটেরিয়া, কীটনাশক ও সিসা) মেশানো হয়েছে তা পরীক্ষা করে জরিপ প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। ওই সময় আদালত উদ্বেগ প্রকাশ করে জানায়, খাদ্যে ভেজাল মেশানোর কারণে মানুষের কিডনি ও লিভার নষ্ট এবং ক্যান্সার হচ্ছে। খাদ্যে ভেজাল মেশানো ‘বড় ধরনের দুর্নীতি’। একই সঙ্গে, দুধের সঙ্গে সিসা মিশ্রণকারীদের শাস্তির আওতায় আনতে ব্যর্থতা কেন বেআইনী হবে না জানতে চেয়ে রুল জারি করে আদালত। পাশাপাশি দুধ ও দুগ্ধজাতীয় খাবারে ভেজাল মেশানোর সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তির নির্দেশ কেন দেয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়। চার সপ্তাহের মধ্যে খাদ্য সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব, কৃষি সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, কেন্দ্রীয় নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটি, দুর্নীতি দমন কমিশন ও বিএসটিআই চেয়ারম্যানকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। এদিকে হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ ৯ মে খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণের প্রশ্নে বিএসটিআই’র কার্যক্রম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে । একই সঙ্গে নিরাপদ দুধ নিশ্চিত করতে বিএসটিআই’র কাউন্সিল ও বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কাউন্সিলের কার্যপরিধি কী তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পাস্তুরিত তরল দুধের মাননিয়ন্ত্রণ নিয়ে দায়ের করা এক রিটের শুনানিতে বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মোঃ ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। পাশাপাশি আগামী ২৪ জুন মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করে আদালত। প্রসঙ্গত, এর আগে গত বছরের ১৭ মে ‘পাস্তুরিত দুধের ৭৫ শতাংশই নিরাপদ নয়’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর’বি) প্রতিবেদনে বলা হয়, তাদের বিজ্ঞানীরা বলছেন, বাজারে পাওয়া যায় এমন পাস্তুরিত দুধের ৭৫ শতাংশ অনিরাপদ। বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন কোম্পানির দুধের নমুনা পরীক্ষা করে তাতে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া পেয়েছেন। তারা পরামর্শ দিয়েছেন, মানুষ যেন দুধ কেনার পর ফুটিয়ে পান করেন। আইসিডিডিআর’বির বিজ্ঞানীরা দেশের ৪৩৮টি কাঁচা দুধের নমুনা এবং বাণিজ্যিকভাবে প্রক্রিয়াজাত দুধের ৯৫টি নমুনা সংগ্রহ করে তা বিশ্লেষণ করেন। এই গবেষণার ফল যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত সাময়িকী ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ফুড মাইক্রোবায়োলজিতে ছাপা হয়। সেখানে শিশুদের পুষ্টির প্রাথমিক উৎস এই দুধ নিয়ে গবেষণার ফলকে আইসিডিডিআর’বি ‘অপ্রীতিকর’ বলে বর্ণনা করা হয়। এরপর এসব প্রতিবেদন সংযুক্ত করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন আইনজীবী মোঃ তানভীর আহমেদ। ১২ মে হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ বিভিন্ন খাদ্যপণ্যে ভেজালের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রয়োজনে মাদকবিরোধী অভিযানের মতো মানহীন, অনিরাপদ খাদ্যপণ্যের বিরুদ্ধেও সরকারকে যুদ্ধ ঘোষণার অনুরোধ জানিয়েছে। বাজারে প্রচলিত মানবদেহ ও জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ মানহীন পণ্যের কারণে বাংলাদেশে বসবাস অনিরাপদ হয়ে উঠছে। এ সংক্রান্ত এক রিটের শুনানিতে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ একথা বলেছে। এসময় ৫২ প্রতিষ্ঠানের মানহীন ৫২টি খাদ্যপণ্য বাজার থেকে দ্রুত প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। বাজারে থাকা ১৮টি কোম্পানির এসব পণ্য দ্রুত অপসারণ করে ধ্বংস এবং মানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত তার উৎপাদন বন্ধ করতেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ২৩ মে এ্ই রিট আবেদনের পরবর্তী শুনানির দিন রেখেছে আদালত। এখনও বাজারে নিম্নমানের পণ্য ॥ নিম্নমানের ৫২টি পণ্য বাজার থেকে তুলে নিয়ে ধ্বংস করতে আদালতের নির্দেশের পরে সচেতনতা বেড়েছে ভোক্তা শ্রেণীর মধ্যে। কিন্তু কিছু কোম্পানি বাজার থেকে তাদের পণ্য তুলে নিলেও অনেক দোকানে এখনও রয়ে গেছে নিম্নমানের বেশকিছু নিত্যপণ্য। শনিবার রাজধানীর ক’টি বাজার ঘুরে দেখা যায়, এখনও দোকানে দোকানে রয়ে গেছে ৫২ টি নিম্নমানের পণ্যের কয়েকটি। রাজধানীর সূত্রাপুর বাজার ঘুরে দেখা যায়, মোল্লা সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড তাদের উৎপাদিত লবণ, বাংলাদেশ এডিবল ওয়েল লিমিটেড (বিইওএল) রূপচাঁদা সরিষার তেল ও সিটি গ্রুপ তাদের তীর সরিষার তেল বাজার থেকে তুলে নিয়েছে। তবে টিকে গ্রুপের পুষ্টি সরিষার তেল এবং প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের প্রাণ হলুদ গুঁড়া এখনও বাজারে রয়েছে। ভিন্ন নয় শান্তিনগর বাজারের চিত্রও। কয়েকটি স্টোরে দেখা যায়, প্রাণের হলুদ গুঁড়া ও লাচ্ছা সেমাই এখনও রয়ে গেছে। পুষ্টি সরিষার তেলও দেখা যায়।
×