ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

গোলোৎসবে ‘ট্রেবল’ জয়ের আনন্দ ম্যানচেস্টার সিটির

প্রকাশিত: ১০:৩৪, ২০ মে ২০১৯

 গোলোৎসবে ‘ট্রেবল’ জয়ের আনন্দ ম্যানচেস্টার সিটির

জাহিদুল আলম জয় ॥ মূল লক্ষ্য ছিল উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ট্রফি জয়। কিন্তু এ লক্ষ্য পূরণ হয়নি ইংলিশ পরাশক্তি ম্যানচেস্টার সিটির। তবে ইউরোপ সেরার আসরে সফল হতে না পারলেও ঘরোয়া ফুটবলে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে সিটিজেনরা। শেষ হতে যাওয়া ২০১৮-১৯ মৌসুমে ইংলিশ ফুটবলে ‘ট্রেবল’ অর্থাৎ তিনটি শিরোপা জয়ের উল্লাস করেছে পেপ গার্ডিওলার দল। আগেই ইংলিশ লীগ কাপ ও প্রিমিয়ার লীগের শিরোপা শোকেসে ভরেন কোম্পানি, জেসুস, এ্যাগুয়েরোরা। এই ধারাবাহিকতায় এবার ঐতিহ্যবাহী এফএ কাপেরও শিরোপা জিতে নিয়েছে সিটি। শনিবার রাতে ফাইনাল ম্যাচে ওয়াটফোর্ডকে ৬-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে ম্যানচেস্টার সিটি। লন্ডনের বিখ্যাত ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে বিজয়ী দলের হয়ে দু’টি করে গোল করেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড গ্যাব্রিয়েল জেসুস ও ইংলিশ মিডফিল্ডার রাহিম স্টার্লিং। একটি করে গোল করেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার ডেভিড সিলভা ও ম্যাচসেরা বেলজিক মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্রুইন। এফএ কাপের ইতিহাসে ১৯০৩ সালের পর ফাইনালে এটাই কোন দলের সবচেয়ে বড় জয়। পুরো ম্যাচের কোন সময়ই সিটির ওপর চড়াও হতে পারেনি ওয়াটফোর্ড। একতরফা প্রাধান্য বিস্তার করে খেলে অনুমিতভাবেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সিটি। তবে সিটি অধিনায়ক ও ডিফেন্ডার ভিনসেন্ট কোম্পানির বিপক্ষে একটি পেনাল্টির আবেদন করে সফল হতে না পেরে ওয়াটফোর্ড বেশ হতাশ হয়। ওই সময় রেফারি কেভিন ফ্রেন্ড কিংবা ভিএআর-এর কোন সমর্থন পায়নি দলটি। ধারাবাহিক আক্রমণের সুুফল হিসেবে ম্যাচের ২৬ মিনিটে প্রথম গোল আদায় করে সিটি। গোলটির পর গার্ডিওলার দলকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। অপেক্ষাকৃত লম্বা ডিফেন্ডারদের ফাঁকি দিয়ে ডেভিড সিলভার হেড ওয়াটফোর্ড গোলরক্ষক গোমেজকে পরাস্ত করলে এগিয়ে যায় সিটিজেনরা। বার্নান্ডো সিলভার কার্লিং ক্রস থেকে ব্রাজিলিয়ান জেসুস ৩৮ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। ওয়াটফোর্ডের অভিজ্ঞ গোলরক্ষক গোমেজ অবসরে যাওয়ার আগে নিজের সেরাটা দিয়েই দলকে বাঁচাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সিটির উড়ন্ত পারফর্মেন্সের কাছে মূলত গোমেজের কিছুই করার ছিল না। রিয়াদ মাহারেজ ও জেসুসের আরও দু’টি প্রচেষ্টা বিরতির আগে আটকে দিয়ে ৩৮ বছর বয়সী গোমেজ কিছুটা হলেও চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু বিরতির পর তাকে আরও চার গোল হজম করতে হয়। উলফসবার্গের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে ২-০ গোলে পিছিয়ে থাকার পর ডেলোফে ওয়াটফোর্ডকে অতিরিক্ত সময়ে রক্ষা করেছিলেন। তবে ফাইনালে নিজেকে মেলে ধরতে ব্যর্থ হন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড। এই ম্যাচে এ্যাগুয়েরোকে বসিয়ে রেখে জেসুসকে সেরা একাদশে খেলান সিটি কোচ গার্ডিওলা। কোচের আস্থার প্রতিদান ব্রাজিলিয়ান তারকা ভালমতোই দিয়েছেন দুর্দান্ত খেলে। বিরতির পর ৫৫ মিনিটে মাঠে নামানো হয় বেলজিয়াম মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্রুইনকে। ম্যাচের ৬১ মিনিটে জেসুসের সহায়তায় তিনি সিটির হয়ে তিন নম্বর গোল করেন। ৬৮ মিনিটে জেসুসকে প্রতিদান ফিরিয়ে দেন ব্রুইন। বেলজিক মিডফিল্ডারের সহায়তায় নিজের দ্বিতীয় ও দলের চার নম্বর গোল করেন ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে ব্রাজিলের হয়ে ব্যর্থ হওয়া জেসুস। ম্যাচের শেষ দশ মিনিট নিজের করে নেন ইংলিশ তারকা স্টার্লিং। ৮১ ও ৮৭ মিনিটে আরও দুই গোল করে ওয়াটফোর্ডকে লজ্জায় ডোবান তিনি। যে কারণে হাফডজন গোলের স্বাদ নিয়ে শিরোপা জয়ের উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন সিটির ফুটবলাররা। ওয়াটফোর্ড যেখানে নিজেদের ক্লাব ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো বড় কোন শিরোপা জয়ের স্বপ্নে বিভোর ছিল, সেখানে সিটি অপেক্ষায় ছিল ট্রেবল জয়ের। ওয়াটফোর্ডের আশা পূরণ হয়নি, উৎসব করেছে সিটিজেনরাই। এটি নিজের কোচিং ক্যারিয়ারে গার্ডিওলার ২৭তম শিরোপা। ফাইনালে জয়ের পর উচ্ছ্বসিত গার্ডিওলা বলেন, এটা আমাদের জন্য অসাধারণ একটি ফাইনাল ছিল। একটি দারুণ মৌসুমের মাধ্যমে আমরা শেষ করলাম। ক্লাবের সকলকে আমি অনেক বড় একটি অভিনন্দন জানাতে চাই। বিশেষ করে আমার খেলোয়াড়দের। কারণ তাদের জন্যই আমরা এই শিরোপাগুলো জিততে পেরেছি।
×