ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রসঙ্গ ব্যথা

প্রকাশিত: ০৮:৫৯, ২১ মে ২০১৯

 প্রসঙ্গ ব্যথা

ঘাড়ব্যথায় বালিশ ব্যবহারের সঠিক নিয়ম প্রতিদিন মানুষ কষ্ট মুক্ত থাকতে ভাল বোধ করে। আর সারাদিন পরিশ্রম এর পর রাতে যখন ঘুমাতে যায় সেই ঘুমটা যেন ব্যথামুক্ত হয়। যে সব রোগীর ঘাড়ে ব্যথা তাদের মনে প্রশ্ন জাগে কি ধরনের বালিশ ব্যবহার সে করবে। রোগীদের এ্যাসেসমেন্ট করার সময় আমরা বুঝতে পারি কি ধরনের বালিশ তিনি ব্যবহার করবেন। তা ছাড়াও পাতলা এবং উঁচু বালিশে শোয়ায়ে দেখি সে কোন বালিশে আরামদায়ক বোধ করে অথবা ব্যথা বেড়ে যায়। পাতলা বালিশ ব্যবহারে ঘাড়ে কম্প্রেশন হয়। যদি পাতলা বালিশে ব্যথা বেড়ে যায় তাহলে ওই বালিশে শোয়া যাবে না। আমাদের প্রাকটিসে দেখতে পাই পাতলা বালিশে অধিকাংশ রোগীই কষ্ট বোধ করে। অপরদিকে রোগীকে যদি বেশি বালিশে শোয়ানো হলে মাথা সামনের দিকে বাকা হয় অর্থাৎ পাতলা বালিশে ঘাড়ে যে কম্প্রেশন হয় সে জায়গা ফাঁকা হয়ে যায়, তখন ব্যথা কমে যায়। উঁচু বালিশ এবং অতিরিক্ত বালিশ আমাদের ঘাড়ের যে লোডোরটিক কার্ভ থাকে সে কার্ভ সঠিক অবস্থায় বা সঠিক পজিশনে রাখতে সাহায্য করে। অন্যদিকে অনেক উঁচু বালিশ ঘাড়ের ব্যথা বাড়িয়ে দিতেই পারে। সেক্ষেত্রে মাসল স্ট্রেইন তৈরি করে ঘাড়, কাঁধ ও অন্যান্য জায়গায়। সে জন্য অবশ্যই চিৎ হয়ে শোয়ার সময় দুই হাঁটু নিচে ও কাত হয়ে শোয়ার সময় দুই হাঁটুর মাঝে বালিশ ব্যবহার করলে মাসল রিলাক্স থাকবে এবং কষ্ট কমে যাবে। অবশ্যই মনে রাখতে হবে আমরা যখন কাত হয়ে ঘুমাই তখন কাঁধ এবং মাথার মাঝখানে ফাঁকা জায়গায় এখানে এমনভাবে বালিশ ব্যবহার করতে হবে যেন মাথা এবং কাঁধের উচ্চতা সঠিক রাখে। অধিকাংশ সময়ই রোগীরা বলে থাকে পাতলা বালিশ ব্যবহারে অসস্থি বোধ করি, ব্যথা কমে না এবং ভালভাবে ঘুমাতে পারি না। রোগীরা বলে থাকেন- পাতলা বালিশের চেয়ে উঁচু বালিশ এবং অতিরিক্ত বালিশ ঘাড়ের কষ্ট কমায় এবং ব্যথামুক্ত ঘুমাতে সাহায্য করে। উঁচু ও নিচু বালিশের মধ্যে অধিকাংশ লোকের নিচু বালিশে ব্যথা বেড়ে যায় এর সংখ্যা অনেক অনেক বেশি। পরিশেষে বলা যায়, যে বালিশ ব্যবহারে আপনি ভাল বোধ করেন সেই রকম বালিশ ব্যবহার করবেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ডাঃ আলতাফ সরকার মাস্কুলোস্কেলিটাল ডিজঅর্ডারস বিশেষজ্ঞ লেজার ফিজিওথেরাপি সেন্টার ৪৪/৮, পশ্চিম পান্থপথ, ঢাকা ০১৭৬৫ ৬৬৮৮৪৬ . ব্যথানাশক নাকি ফিজিওথেরাপি এ যুগে হরহামেশাই বিভিন্ন আসক্তির কথা শোনা যায়। ভিডিও গেমস আসক্তি, মাদক আসক্তি, স্মার্টফোন আসক্তি ইত্যাদি। এখন নতুন যে আসক্তির কথা রোগীদের মাঝে শোনা যায়, তা হলো পেইন কিলার বা ব্যথানাশক আসক্তি। যারা দীর্ঘদিন কোমর ঘাড়-হাঁটু-কাঁধ ইত্যাদি ব্যথায় ভোগেন তাদের মধ্যে এই আসক্তি বেশি দেখা যায়। ব্যথার একটি বড়ি খেলেই যখন আরাম পাওয়া যায় তখন এই আসক্তি হবারই কথা। কিন্তু ব্যথানাশক ওষুধ আমাদের ব্যথা কমানের সঙ্গে সঙ্গে আর কি কি ক্ষতি করে তা অনেকেই জানেন না। আবার জানলেও সময় বা গাফিলতির কারণে ভাল বিকল্প চিকিৎসা না করিয়ে ব্যথানাশকই গ্রহণ করতে থাকেন। . ব্যথানাশক কি ক্ষতি করে? প্রথমত প্রায় সব ব্যথানাশক গ্যাস্ট্রিক আলসার তৈরি করে বা এর মাত্রা বৃদ্ধি করে। দ্বিতীয়ত এটি কিডনির ওপর খারাপ প্রভাব ফেলে। দীর্ঘদিন সেবনে কিডনি বিকলও হতে পারে। তৃতীয়ত উচ্চ রক্তচাপ কিডনি সমস্যা বা বহুমূত্র রোগীর জন্য চিকিৎসকরা ব্যথানাশক ব্যবহারে খুবই সতর্ক থাকেন। তাই এটি নির্দ্বিধায় ব্যবহারযোগ্য কোন ওষুধ নয়। . বিকল্প কি আছে? ব্যথার চিকিৎসায় ফিজিওথেরাপির জুড়িমেলা ভার। এটি সারা পৃথিবীতে ব্যাপকভাবে ব্যবহার হয়ে থাকে। তবে কথা হলো কি ধরনের ফিজিওথেরাপি ব্যথার চিকিৎসায় কার্যকর? এর উত্তর খুব সোজা নয়। ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার কার্যকারিতা নির্ভর করে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের ওপর। এখন তো যত্রতত্র এই চিকিৎসা পাওয়া যায়, কিন্তু এর সবই আসল ফিজিওথেরাপি নয়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় সেরাজেমকেও মানুষ থেরাপি বলছে। কিন্তু সেরাজেম ফিজিওথেরাপি তো নয়ই, এটি পুরো চিকিৎসা বিজ্ঞানের কোন অংশই নয়। আবার দেখা যায় অনেকেই ফিজিওথেরাপি চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞ সেজে বসে আছেন, যারা আদৌ এই সেবাই প্রদান করার লাইসেন্স বা অধিকার রাখেন না। যাই হোক, দেখে-শুনে সঠিক চিকিসক ও বিশেষজ্ঞ এর কাছ থেকে ফিজিওথেরাপি নিলে ব্যথা নিয়ন্ত্রণ খুব সোজা। ডাঃ মোহাম্মদ আলী চীফ কনসালট্যান্ট হাসনা হেনা পেইন রিসার্চ সেন্টার বাড়ি ৭, শায়েস্তা খাঁ রোড, সেক্টর ৪, উত্তরা, ঢাকা [email protected]
×