ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

‘হায়াৎ সাইফের জীবন ও কীর্তি ধরে রাখতে জরুরী স্মারকগ্রন্থ’

প্রকাশিত: ০৯:১৮, ২১ মে ২০১৯

 ‘হায়াৎ সাইফের জীবন ও কীর্তি ধরে রাখতে জরুরী স্মারকগ্রন্থ’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কবি হায়াৎ সাইফ ছিলেন একজন আধুনিক কবি ও সাহিত্য সমালোচক। কবি হায়াৎ সাইফের প্রয়াণে এক স্মরণসভা হয় বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে সোমবার সকালে। বাংলা একাডেমি আয়োজিত এ স্মরণ সভায় আলোচনা ও স্মৃতিচারণে অংশ নেন কবি আসাদ চৌধুরী, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী, কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক, নাট্যজন ফেরদৌসী মজুমদার, কবি কাজী রোজী, কবি জাহিদুল হক, ফ র মাহমুদ হাসান, সাবেক কূটনীতিক মহিউদ্দিন আহমেদ, কবি আসাদ মান্নান এবং কবি হায়াৎ সাইফের দুই পুত্র জিসান সাইফ ও মেহরান সাইফ। হায়াৎ সাইফের স্ত্রী তাহমিনা ইসলাম লাকি এবং পরিবারের অন্য সদস্যরা সভায় উপস্থিত ছিলেন। স্মরণসভায় প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম প্রেরিত লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলা একাডেমির উপপরিচালক ড. আমিনুর রহমান সুলতান। সভাপতিত্ব করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার। স্মরণসভা সঞ্চালনা করেন বাংলা একাডেমির কর্মকর্তা পিয়াস মজিদ। বক্তারা বলেন, ষাটের দশকের বিশিষ্ট কবি ও গদ্যকার হায়াৎ সাইফ। প্রথম কবিতাগ্রন্থ ‘সন্ত্রাসে সহবাস’ (১৯৮৩) থেকে শুরু করে সাম্প্রতিকতম কবিতায় তিনি তার স্নিগ্ধ ও পেলব স্বাক্ষর রেখে গেছেন। কবিতায় নৈর্ব্যক্তিক ব্যঞ্জনায় ব্যক্তির অন্তর্গত আর্ত অবয়ব যেমন তিনি সুদক্ষতায় ফুটিয়ে তুলেছেন তেমনি পরোক্ষতার মুদ্রায় দেশ, মাটি ও মানুষের কথা তুলে ধরেছেন। গদ্য রচনায়ও তার সাফল্য সামান্য নয়। হায়াৎ সাইফের প্রবন্ধ গ্রন্থ উক্তি ও উপলব্ধি প্রমাণ করে মৌলিক ধ্যান ও ভাবনাশীল গদ্যের কারুকার হিসেবে তার বিশিষ্টতা। পাশাপাশি গবেষণাগ্রন্থ’ সংরক্ষণবাদ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও শুল্ক ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তার মেধা ও মননের সাক্ষ্য বহন করে। ব্যক্তি হিসেবেও তিনি ছিলেন তুলনারহিত। একজন সদালাপী, সজ্জন, উদার, অসাম্প্রদায়িক, মানবতাবাদী মানুষের নাম হায়াৎ সাইফ। তারা বলেন, হায়াৎ সাইফের জীবন ও কীর্তি স্মরণীয় করে রাখতে তার রচনা সংরক্ষণ এবং একটি স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ জরুরী। লিখিত বক্তব্যে এইচ টি ইমাম বলেন, ষাটের দশকের আধুনিক কবিদের মধ্যে হায়াৎ সাইফ ছিলেন অন্যতম। উচ্চপদস্থ একজন সরকারী কর্মকর্তা হিসেবে একদিকে যেমন তিনি তার প্রাত্যহিক দায়িত্ব সামলেছেন, অপরদিকে নিজের হৃদয় নিংড়ানো ভালবাসা ও চেতনার নিমগ্নতা দিয়ে সৃজন করেছেন অনন্য সাধারণ কাব্যগাথা। সজ্জন, সদালাপী এই মানুষটি কখনও খ্যাতির মোহে ধাবিত হননি, কোন প্রত্যাশা বা উচ্চাকাক্সক্ষার কাছেও নিজের মনোজগতকে বিসর্জন দেননি। নিজের আজন্ম বিশ্বাস, ভাললাগা ও ভালবাসাকে সার্বজনীনতায় লীন করেছেন। নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন সময়ের বহমান গতিধারায়, সৃষ্টি কল্যাণে। সভাপতির বক্তব্যে রামেন্দু মজুমদার বলেন, হায়াৎ সাইফ বর্ণাঢ্য কর্মজীবন ও সাহিত্যকৃতির অধিকারী ছিলেন। একজন রুচি স্নিগ্ধ, জ্ঞানযোগী মানুষ হিসেবে তার কোন তুলনা ছিলনা। তার অনন্য কবিতাকৃতির যথাযথ স্বীকৃতি তিনি পাননি কিন্তু এই নিয়ে কখনও তার কোন আক্ষেপ ছিল না। বরং সৃষ্টি, সুন্দর এবং কল্যাণের পথে তিনি সবসময় নিজেকে নিবেদিত রেখেছেন। আমাদের সকলের স্মৃতিতে হায়াৎ সাইফ এভাবেই ভাস্বর হয়ে থাকবেন।
×