ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পিচিচি ট্রফি ও গোল্ডেন বুট মেসির

প্রকাশিত: ১০:২৩, ২১ মে ২০১৯

 পিচিচি ট্রফি ও গোল্ডেন বুট মেসির

জাহিদুল আলম জয় ॥ মৌসুমজুড়ে লিওনেল মেসি উড়লেও তার দল বার্সিলোনা প্রত্যাশিত সাফল্য পায়নি। শুধু স্পানিশ লা লিগাতেই চ্যাম্পিয়ন হতে পেরেছে ২০১৮-১৯ মৌসুমে। তাও চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর শেষটা ভাল হয়নি। রবিবার রাতে এবারের মৌসুমে লা লিগায় শেষ ম্যাচ খেলতে নেমেছিল বার্সা। এইবারের মাঠে মেসি জোড়া গোল করলেও ২-২ ব্যবধানে ড্র নিয়ে ফিরতে হয়েছে কাতালানদের। জয়ে বার্সা মৌসুম শেষ করতে না পারলেও মেসির অর্জনের কমতি নেই। ম্যাচে জোড়া গোল করে তিনি মৌসুমে ৫০ গোলের মাইফলক স্পর্শ করেছেন। এ নিয়ে ক্যারিয়ারে ষষ্ঠবার ৫০ বা তার চেয়ে বেশি গোল করলেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। সঙ্গে চলতি মৌসুমে লা লিগার সর্বোচ্চ গোলের (৩৬) খেতাব পিচিচি ট্রফিটা পাচ্ছেন মেসি। পাওয়ার কাছাকাছি আছেন মৌসুমে ইউরোপের সর্বোচ্চ গোলের পুরস্কার গোল্ডেন শু অর্থাৎ গোল্ডেন বুট। লা লিগার শিরোপা আগেই নিশ্চিত হয়ে গেছে বার্সিলোনার। সপ্তাহ আগে লিভারপুলের মাঠে হেরে চ্যাম্পিয়ন্স লীগ স্বপ্ন ভেস্তে গেছে। বাকি আছে কোপা ডেল রের ফাইনালে নামার। তার আগে লীগে শেষটা ড্রয়ে সেরেছে তারা। এই ড্রয়ে বার্সিলোনা ৮৭ পয়েন্ট নিয়ে লীগ শেষ করেছে। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ৭৬ পয়েন্টে দুইয়ে, আর রিয়াল মাদ্রিদ ৬৮ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে থেকে মৌসুম শেষ করেছে। টানা দ্বিতীয় লীগ শিরোপা জয়ের পথে মেসির ঝুলিতে জমেছে ৩৬ গোল। যা দুইয়ে থাকা সুয়ারেজ ও বেঞ্জামার চেয়ে ১৫ গোল বেশি। এতটা ব্যবধানে এর আগে কেউ পিচিচি হাতে নিতে পারেনি। ১৯৮৬-৮৭ মৌসুমে হুগো সানচেজ ১৪ গোলের ব্যবধানে পেছনে ফেলেছিলেন দুইয়ে থাকা প্রতিদ্বন্দ্বীকে। তাতে টানা তৃতীয়বার ও রেকর্ড ছয়বার পিচিচি ট্রফি জিতলেন ফুটবল জাদুকর। মেসির আগে টানা তিনবার পুরস্কারটি জিতেছিলেন মেক্সিকোর স্ট্রাইকার হুগো সানচেজ। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ১৯৮৫-৮৬, ১৯৮৬-৮৭ ও ১৯৮৭-৮৮ মৌসুমে এই কীর্তি গড়েছিলেন তিনি। ক্যারিয়ারে মোট পাঁচবার পুরস্কারটি জিতেছিলেন কিংবদন্তি এই ফরোয়ার্ড। ছয়বার এই খেতাব জেতার রেকর্ড আছে কেবল এ্যাথলেটিক ক্লাবের কিংবদন্তি টেলমো জারার, সেটিও ৬৬ বছর আগে। অর্থাৎ ১৯৪৫ থেকে ১৯৫৩ সালের মধ্যে মোট ছয়বার পুরস্কারটি জিতে রেকর্ড গড়েছিলেন জারা। এবার তাতে ভাগ বসিয়েছেন মেসি। ২০০৯-১০, ২০১১-১২, ২০১২-১৩ মৌসুমে প্রথম তিনবার পুরস্কারটি জিতেছিলেন মেসি। পরশু রাতে জোড়া গোলে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে মৌসুমে ৪৯ ম্যাচে স্কোরের ফিফটি হয়ে গেছে মেসির। কেবল লা লিগায় নয়, চ্যাম্পিয়ন্স লীগেও চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ (১২) গোল তার। তাতে ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শু পুরস্কারও মেসির ঝুলিতে যাচ্ছে এটা প্রায় নিশ্চিত। গোল্ডের শুরুর জন্য নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পিএসজির ফরাসী তারকা কিলিয়ান এমবাপেকে পেয়েছেন মেসি। তবে এমবাপের চেয়ে চার গোলে এগিয়ে আছেন। লীগ ওয়ানে এমবাপের এখনও এক ম্যাচ বাকি, মেসিকে টপকাতে হলে তাতে বিশেষ কিছুই করতে হবে বিশ্বকাপজয়ী তারকাকে। মেসিরও যে আছে এক ম্যাচ হাতে, কোপা ডেল রের ফাইনাল। এবার গোল করাতেও কমতি ছিল না তার। লা লিগার সর্বোচ্চ এ্যাসিস্ট (১৩) তার, অবশ্য যৌথভাবে। আর সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে মৌসুমে ১৯ বার সতীর্থদের গোলে সরাসরি ভূমিকা রেখেছেন মেসি। বার্সার ধার করা মিডফিল্ডার মার্ক কুকুরেলার গোলে ২০ মিনিটে এগিয়ে যায় স্বাগতিক এইবার। ৩১ মিনিটে আর্টুরো ভিদালের পাস থেকে মেসি ম্যাচে সমতা ফেরান। পরের মিনিটেই ইভান রাকিটিচের সহযোগিতায় মেসি ঠা-া মাথায় এইবার গোলরক্ষক মার্কো দিমিত্রোভিচকে পরাস্ত করলে এগিয়ে যায় কাতালান জায়ান্টরা। বিরতির ঠিক আগে পাবলো ডি ব্লেসিস অনেকটা একক প্রচেষ্টায় আবারও বার্সা গোলরক্ষক জাসপার সিলিসেনকে ফাঁকি দিলে ম্যাচটি ২-২ গোলে সমতায় ফিরে। আগামী সপ্তাহে ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে কোপা ডেল রে’র ফাইনালের আগে সিলিসেনকে নিয়ে নতুন করে চিন্তা করতেই হচ্ছে বার্সিলোনাকে। ম্যাচ শেষে বার্সা কোচ আর্নেস্টো ভালভার্ডে বলেন, যখন সামনে কোন লক্ষ্য থাকবে না তখন শতভাগ চেষ্টা করেও ম্যাচের গুরুত্বটা বোঝা যাবে না। এ কারণেই হয়তবা শেষ পর্যন্ত আমরা ড্র নিয়েই মাঠ ছেড়েছি। তবে আমি মনে করি মৌসুমটা আমাদের ভালই কেটেছে। পুরো মৌসুমেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আমরা শিরোপা ধরে রেখেছি। যদিও মৌসুমের শুরুতে সব কিছু কিছুটা হলেও কঠিন হয়ে উঠেছিল, তবে আমরা সেটা কাটিয়ে উঠেছি।
×