স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ বরিশালে বৃহৎকার শিল্পনগরী থাকলেও সেখানে নেই কোন শিল্পপ্রতিষ্ঠান। রয়েছে শিল্প উদ্যোক্তাদের বিশাল বিশাল গোডাউন। নামকায়েস্তে চার থেকে পাঁচটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান থাকলে সেগুলো কখনও খোলা আবার কখনও বন্ধ দেখা গেছে। সোনারগাও টেক্সটাইল মিল, বেঙ্গল বিস্কুট, মোহাম্মদী ইলেকট্রিক প্রজেক্ট ও ফরচুর নামক একটি জুতো উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এই শিল্পনগরীর যৌবণ ধরে রেখেছে। কিন্তু শিল্পনগরীর প্লট বরাদ্দের ক্ষেত্রে রয়েছে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, যাদের নামে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তাদের অনেকেই শিল্প ঘরনার লোক নন। বরং প্লট বরাদ্দ নিয়ে সেখানে আবাসিক ভবন তৈরি করে ভাড়া আদায় করেছেন। আবার অনেককে বরাদ্দ দেওয়া প্লট ব্যাংক মর্গেজ রেখে উত্তেলিত ঋণঅর্থ অন্যখাতে ব্যয় করেছেন। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের দাবি, প্রশাসনিক জবাবদিহিতা না থাকার কারণে এই শিল্পনগরীর তেমন কোন জৌলুস নেই। তেমনি এখানে নেই কোন নিরাপত্তা। অভিযোগ রয়েছে-শিল্পনগরীটি মাদকের অভায়ারণ্যে পরিণত হয়েছে।
সূত্রমতে, বিশালাকার এই শিল্পনগরী দীর্ঘ ৫৯ বছরেও পূর্ণতা লাভ করতে পারেনি। এক্ষেত্রে ভূক্তভোগিদের দাবি, এ অঞ্চলে শিল্প উদ্যোক্তাদের আকৃষ্ট করতে না পারায় শিল্পনগরীর এমন দৈন্যদশা। অথচ শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য এ অঞ্চল এখন সম্ভবনাময় জনপদ হিসেবে হাতছানি দিচ্ছে। বিশেষ করে পদ্মা সেতু ও পায়রা সমুদ্র বন্দর নির্মাণে ব্যবসা বাণিজ্য প্রসারিত করার সুযোগ সৃষ্টি এবং পণ্য আনা নেওয়ার ক্ষেত্রেও দূরত্ব কমে আসছে। এতোকিছুর পরেও শিল্প উদ্যোক্তারা এ শিল্পনগরীতে কোন প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে আগ্রহী নয়। তবে আবাসিক ভবন নির্মাণ করে ভাড়া দেওয়া বা গোডাউন নির্মাণে তাদের বেশিমাত্রায় উৎসাহ লক্ষ্যণীয়। বিসিক শিল্পনগরীর এমাথা থেকে অন্যমাথায় সর্বত্রই ব্যক্তি বিশেষের বিশালাকার গোউাউন দেখা যায়।
বিসিক বরিশাল অফিসের কর্মকর্তা খায়রুল বাশার জনকণ্ঠকে বলেন, বিসিকের ৪৭০টি প্লটের ১৭৩টি সচল রয়েছে। অনেকে প্লট বরাদ্দ নিয়ে সেখানে ভবন নির্মান করে গোডাউন ভাড়া দিয়েছেন। বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত হয়ে তাদের নোটিশ দিয়েছি। যদি তারা দ্রুত গোডাউন ভাড়া বন্ধ না করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বরিশাল বিসিকের উপ-মহাব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান খান জনকণ্ঠকে জানান, শিল্পনগরীর উন্নয়নে সরকার সাম্প্রতিকালে ৫২ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। ইতোমধ্যে ছয় কোটি ৪৭ লাখ টাকায় নিচু অংশে থাকা ১২টি প্লটে মাটি ভরাট ও এক কোটি ২৭ লাখ টাকায় প্রধান গেটসহ ৫০০ মিটার দেয়াল নির্মাণ কাজের টেন্ডার করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বিসিকের অভ্যন্তরের সড়কগুলোসহ সার্বিক উন্নয়নের কাজ করা হবে। পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের ঋণ সুবিধাসহ শিল্প ইউনিট স্থাপন, উৎপাদন, বিপননের সবধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পর উদ্যোক্তারা শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়তে আগ্রহী হবেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: