ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

জঙ্গী ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ

প্রকাশিত: ০৮:৪৮, ২২ মে ২০১৯

জঙ্গী ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময়েই দৃঢ়তার সঙ্গে বলে আসছেন যে, এই দেশে জঙ্গীবাদের কোন স্থান নেই। আর তাঁর সরকারের প্রধান লক্ষ্যই হলো গরিব মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। তাদের জীবনমানের উন্নতি সাধন। জঙ্গী ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করার পাশাপাশি মানুষের সহযোগিতা চাওয়ার বিষয়টিও উঠে আসে তাঁর কথায়। রবিবার গণভবনে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, আলেম-ওলামা, এতিম ও প্রতিবন্ধী শিশু, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় আহতরাসহ আত্মীয়-পরিজনদের সঙ্গে এক ইফতার মাহফিলে তিনি তাঁর প্রতিজ্ঞা ও সংগ্রামের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সবার দোয়া ও সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘সবাই মিলে দেশটাকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে হবে।’ শুধু দেশেই নয়, প্রধানমন্ত্রী যখনই যে দেশে গেছেন, সেখানে প্রবাসী বাঙালীদের সঙ্গে মিলিত হবার সুযোগ পেয়েছেন। সেখানেই দেশের কল্যাণে তাঁর সরকারের কর্মপন্থা নিয়ে কথা বলেছেন। স্মরণযোগ্য, বিগত দিনে রোমে এক গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী স্পষ্টভাবে দুর্নীতিবাজ এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বিচার চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বার্থে দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের সঙ্গে জড়িতদের বিচার হতেই হবে। যারা দুর্নীতি, সন্ত্রাস করবে এবং জঙ্গীবাদে জড়াবে তাদের অবশ্যই বিচার করতে হবে। দেশের শান্তি ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এটা প্রয়োজন। আমরা দেশে একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই। দেশকে উন্নত এবং জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে চাই। আর এটা তখনই সম্ভব হবে যখন আমরা দুর্নীতি, জঙ্গীবাদ ও স্বজনপ্রীতি নিয়ন্ত্রণ এবং অপসারণ করতে পারব। শত সমস্যার ভেতরেও দেশ এগিয়ে চলেছে। বর্তমানে প্রবৃদ্ধি ৭ ভাগের ওপরে, যা বিশ্বের অনেক দেশের কাছেই বিস্ময়কর। জনগণের কল্যাণ ও তাদের ভাগ্য পরিবর্তনে আন্তরিকতা নিয়ে সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলেই দেশের এত উন্নয়ন সম্ভব হচ্ছে। দেশবাসী আশা করে স্বনির্ভর উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে। এজন্য দেশের মানুষেরও করণীয় রয়েছে। সততা ও দেশপ্রেম নিয়ে নিজ নিজ ক্ষেত্রে আন্তরিক সক্রিয়তার সঙ্গে কাজ করে গেলে সার্বিক অর্থেই দেশ নিজের পায়ে দাঁড়াতে সক্ষম হবে। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে একটা নি¤œ মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। আজকের বাংলাদেশ জাতির পিতার সেই লক্ষ্য সামনে নিয়ে, তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছে। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রতিটি নাগরিককেই উদ্যমী ও উদ্যোগী হতে হবে। এটা ঠিক যে, বর্তমান সরকার জঙ্গীবাদ কঠোর হস্তে দমন করেছে। তার মানে এই নয় যে, আমাদের আত্মতুষ্টিতে ভুগতে হবে। জঙ্গীরা নতুন কৌশল অবলম্বন করবেÑ এটা স্বাভাবিকভাবেই ধরে নেয়া যায়। জঙ্গীদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিভঙ্গি অত্যন্ত পরিষ্কার। তিনি বলিষ্ঠ কণ্ঠে উচ্চারণ করেছেন, সন্ত্রাসী-জঙ্গীদের কোন ধর্ম নেই, দেশকাল পাত্র নেই। জঙ্গী জঙ্গীই, সন্ত্রাসী সন্ত্রাসীই। যদি তা না হতো তাহলে ধর্মের দোহাই দিয়ে তারা হত্যাযজ্ঞ চালাত না। প্রতিটি ধর্মেরই মূল কথা শান্তি, হানাহানি নয়। পরধর্মের প্রতি সহিষ্ণুতার কথাও বলা আছে ধর্মগ্রন্থসমূহে। ফলে বিধর্মীদের ওপর যারা চড়াও হয় তারা অধর্মই করে। এদের তাই কঠোর হস্তে দমন করতে হবে।
×