ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঠাকুরগাঁওয়ের একমাত্র শিশু পার্কের বেহাল অবস্থা

প্রকাশিত: ০৯:৫০, ২১ মে ২০১৯

ঠাকুরগাঁওয়ের একমাত্র শিশু পার্কের বেহাল অবস্থা

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও ॥ শহরের প্রাণকেন্দ্র আশ্রমপাড়া মহল্লায় জেলার একমাত্র সরকারি শিশু পার্কের শহীদ মিনারের উপর শতবর্ষী এক গাছ ভেঙ্গে পড়ে আছে প্রায় এক মাস থেকে। শিশু পার্কের প্রতিটি রাইটস একে তো জরাজীর্ন ভঙ্গুর অপরদিকে সংস্কার করা নতুন শহীদ মিনারটি ভেঙ্গে পড়ে আছে। কিন্তু গত এক মাস ভেঙ্গে পড়ে থাকা শহীদ মিনারটি সংস্কার করার তো কোন উদ্যোগ নেই এমনকি ভাঙ্গা গাছটি সরিয়ে নেওয়ারও কেও নেই মনে হচ্ছে। শুধু চলছে নামে মাত্র দপ্তরে দপ্তরে চিঠি চালাচালি। ঠাকুরগাঁও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বলছেন, গাছটি টেন্ডারের মাধ্যমে সরানোর জন্য লিখিত ভাবে বন বিভাগকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে বলা হয়েছে। কিন্তু অপরদিকে বন বিভাগ বলছে এই রকম কোন চিঠি এখনো পায়নি তারা। এই ভাবে একে অপরের উপর দোষ চাপিয়ে দিয়ে কোন প্রকার সমাধানের উদ্যোগ গ্রহন করা হচ্ছে না। গত ১৬ এপ্রিল রাতে কালবৈশাখী ঝড়ে শহীদ মিনারের পেছনের শতবর্ষী একটি আমগাছ ভেঙ্গে পড়ে শহীদ মিনারের উপর। আমগাছটি শহীদ মিনারের উপর পড়ায় শহীদ মিনারটিও ভেঙ্গে যায়। ঘটনার এক মাস অতিবাহিত হলেও এখনো সরানো হয়নি ভেঙ্গে পড়া আমগাছ, মেরামত হয়নি শহীদ মিনারটি। স্থানীয়দের দাবী কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে ভেঙ্গে পড়া আমগাছটি এক মাস যাবত সেখানেই পড়ে রয়েছে। ফলে শিশুরা বঞ্চিত হচ্ছে খেলাধুলা থেকে। আর এভাবে ভেঙ্গে পড়ে থাকা শহীদ মিনারটি দেখে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম শহীদ মিনারের প্রতি এই অবহেলা থেকে একটি খারাপ শিক্ষা পাবে। আশ্রমপাড়া মহল্লার বাসিন্দা জয়দেব রায় বলেন, বাঙ্গালী জাতীর বাংলা ভাষার জন্য যারা জীবন দিয়েছে তাদের স্বরণে নির্মিত এই শহীদ মিনার এইভাবে অবহেলায় পড়ে রয়েছে। বাংলা ভাষার সাথে এই শহীদ মিনার ওতপ্রতভাবে জড়িত। সেখানে শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত একটি শহীদ মিনার এতদিন ধরে ভেঙ্গে পড়ে আছে সেটা দেখার কেও নেই। শহীদ মিনারটির উপর ভেঙ্গে পড়ে আছে যে আম গাছটি সেটার উপর ছোট শিশুরা খেলতে গিয়ে দূর্ঘটার শিকারও হচ্ছে। অন্তত শিশুদের কথা চিন্তা করেও পৌর কর্তৃপক্ষের উচিৎ ছিলো ভাঙ্গা গাছটি সড়ানো। স্থানীয় এলাকাবাসী সফিউল এনাম পারভেজ বলেন, গাছটি দ্রুত সড়িয়ে শহীদ মিনারটি আবারো সংস্কারসহ জরুরী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে ইতোপূর্বে পৌর মেয়র বরাবর গণস্বাক্ষরিত একটি স্মারকলিপি দিয়েছি। তাৎক্ষনিক ভাবে পৌর মেয়র বলেছিলেন, গাছ কাটার অনুমতি তাদের নেই। এটা বন বিভাগের সম্পত্তি। তাই পৌরসভা কতৃপক্ষ কোন প্রদক্ষেপ গ্রহন করতে পারছে না। তিনি আরও বলেন, আশ্রম পাড়া শিশু পার্ক এলাকায় আরো কিছু ঝুঁিকপূর্ণ গাছ আছে যেগুলো হালকা বাতাস হলেই ভেঙ্গে পড়ে বড় ধরণের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও পৌরসভার মেয়র মির্জা ফয়সাল আমিন বলেন, ইতোমধ্যে পৌরসভা থেকে বন বিভাগককে লিখিত ভাবে অবহিত করা হয়েছে। তাদের অনুমতি পেলে দ্রুত সময়ে টেন্ডারের মাধ্যমে গাছ বিক্রয় করে শহীদ মিনারের কাজ করা হবে। ঠাকুরগাঁও বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহন শাহ আকন্দের কাছে গাছ কাটার লিখিত সম্পর্কে হানতে চাইলে তিনি বলেন, আশ্রমপাড়া শিশু পার্কের গাছের বিষয়ে কোন চিঠি পায়নি। চিঠি পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। স্থানীয়দের দাবী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন দ্রুত সময়ে সকল প্রকার দাপ্তরিক কাজ শেষ করে শহীদ মিনারটিকে পূনরায় সংস্কার করে। এতে শিশু পার্কের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আসবে ও শিশুদের খেলার উপযোগী হবে এ শিশু পার্কটি।
×