অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ মাঠ পর্যায়ে ধানের দাম বৃদ্ধির প্রচেষ্ঠার অংশ হিসাবে সরকার চালের আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি করেছে। দেশে সব ধরণের চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে চালের আমদানি শুল্ক ২৮ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫৫ শতাংশ করেছে। এ ব্যাপারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বুধবার এক প্রজ্ঞাপ জারি করেছে। যা বুধবার থেকেই কার্যকর করা হয়েছে।
জানা যায়, বর্তমানে চালের ওপর ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক এবং ৩ শতাংশ আবগারি শুল্ক বিদ্যমান রয়েছে। নতুন শুল্ক কাঠামোয় ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক বহাল রেখে আবগারি শুল্ক বা রেগুলেরি ডিউটি ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে এসব পণ্যের ওপর ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর আরোপ করা হয়েছে। ফলে চাল আমদানির ক্ষেত্রে মোট করভার ৫৫ শতাংশে (কাস্টমস ডিওটি ২৫ শতাংশ এবং রেগুলেটরি ডিওটি ২৫ শতাংশ ও অগ্রিম আয়কর ৫ শতাংশে) উন্নিত করা হয়েছে।
বুধবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এ-সংক্রান্ত একটি এসআরও জারি করে তা ওই দিন থেকেই কার্যকর করেছে। এর আগে চাল আমদানিতে মোট শুল্ক ছিল ২৮ শতাংশ। এখন সেটি প্রায় দ্বিগুণ করে ৫৫ শতাংশ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সিনিয়র সচিব অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ ও চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ১০ মাসে প্রায় তিন লাখ তিন হাজার টন চাল আমদানি করা হয়েছে। এতে দেশীয় উৎপাদন খরচের চেয়ে কম মূল্যে চাল বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে কৃষক। ফলে প্রান্তিক কৃষকরা আর্থিকভাবে বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। কৃষকদের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষাকল্পে প্রধানমন্ত্রীর সদয় অনুশাসন অনুযায়ী চালের ওপর আমদানি শুল্ক কর বৃদ্ধি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল গত রবিবার কৃষক বাঁচাতে দেশে চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, কৃষকদের ধানের ন্যয্য দাম নিশ্চিতে সরকার চাল আমদানিতে করাকড়ি আরোপ করা হবে।
চলমান বোরো মৌসুমে নতুন ধান উঠার পর বাজারে ধানের দাম আশংকাজনকভাবে কমে যায়। ফলে কৃষক নতুন ধান নিয়ে চরম বিপাকে পড়ে। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। কি করে কৃষকের ধানের দাম বৃদ্ধি করা যায় তা নিয়ে তিনি কৃষি মন্ত্রী, খাদ্য মন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। ধানের দাম বৃদ্ধির সরকারের ওই প্রচেষ্ঠার অংশ হিসাবেই বুধবার চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে আমদানি শুল্ক দ্বিগুন বাড়িয়ে দেয়া হলো।
