স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশ্বকাপ শুরু হতে আর মাত্র সাতদিন বাকি। ৩০ মে থেকে ইংল্যান্ড এ্যান্ড ওয়েলসে ওয়ানডে বিশ্বকাপ শুরু হবে। যেহেতু বিশ্বকাপ ওয়ানডে ফরমেটের তাই ওয়ানডেতে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার কে, সেদিকে সবার নজর থাকে। বাংলাদেশের সাকিব আল হাসানই সেই অলরাউন্ডার। যিনি আফগানিস্তানের রশিদ খানকে পেছনে ফেলে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের স্থানটি আবার দখল করে নিয়েছেন। সেটি আবার বিশ্বকাপের আগেই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার হয়েছেন। চোট সাকিবকে বারবার তাড়া করছে। গত বছর সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপ চোটের জন্য ঠিকমতো খেলতে পারেননি। ফাইনাল খেলতে পারেননি। আবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সফরেও যেতে পারেননি। চোটের জন্য কোন ম্যাচই খেলতে পারেননি। এবার ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালেও খেলতে পারেননি সাকিব। এরপরও যতটুকু খেলেছেন, দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ও ত্রিদেশীয় সিরিজের তিনটি ম্যাচে তাতেই ৫ ম্যাচে ব্যাটিং করে তিনটিতে হাফ সেঞ্চুরি ও ৫ উইকেট নিয়ে অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়েছেন। সাকিব তাই আবারও বিশ্বসেরা ওয়ানডে অলরাউন্ডার হয়ে গেছেন। আইসিসি র্যাঙ্কিং ঘোষণা করে। সেখানেই সাকিব যে দুই নম্বর থেকে এক নম্বরে উঠে এসেছেন সেটিও প্রকাশ পায়। সাকিবের রেটিং পয়েন্ট ৩৫৯। সেখানে ৩৩৯ পয়েন্ট নিয়ে রশিদ খান এখন নেমে গেছেন দুইয়ে।
এই স্থানটিকে সাকিব নিজের বানিয়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু গত বছর সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপের পর রশিদ খান এই স্থানটি দখল করে নেন। একটা সময় সাকিব ও দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অলরাউন্ডার জ্যাক ক্যালিসের মধ্যে এই স্থানটি দখল নিয়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই জমতো। কখনও সাকিব এক নম্বর হন। কিছুদিন পরই আবার ক্যালিস সেই স্থান দখল করেন। আবার সাকিব এক নম্বরে চলে আসেন। কিন্তু গত বছর সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপ শেষে সাকিবকে সরিয়ে আফগান অলরাউন্ডার রশিদ যে এক নম্বর অলরাউন্ডার হন, রশিদকে সরাতে প্রায় আটমাস লাগল সাকিবের। ইনজুরিতে যে ঠিকমতো আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ম্যাচ খেলতেই পারেননি। রশিদ যখন সাকিবকে হটিয়ে শীর্ষে ওঠেন তখন তার রেটিং পয়েন্ট ছিল ৩৫৩। দুই নম্বরে থাকা সাকিবের রেটিং তখন ৩৪১। ত্রিদেশীয় সিরিজে দুর্দান্ত পারফর্মেন্সের পর সাকিবের এই রেটিং পয়েন্ট দাঁড়িয়েছে ৩৫৯। ৩৩৯ পয়েন্ট নিয়ে রশিদ খান আছেন দুইয়ে। তিনে আছেন রশিদেরই সতীর্থ মোহাম্মদ নবী। তার রেটিং পয়েন্ট ৩১৯। চারে পাকিস্তানের ইমাদ ওয়াসিম (২৮৯ রেটিং) আর পাঁচে নিউজিল্যান্ডের মিচেল স্যান্টনার (২৭৯ রেটিং)। একটা সময় তিন ফরমেটেই সাকিব অলরাউন্ডার র্যাঙ্কিংয়ে দাপট দেখাতেন। কিন্তু এখন সেটি পারেন না। টেস্ট ও টি২০’র অলরাউন্ডার র্যাঙ্কিংয়ে সাকিব আছেন দুই নম্বরে। ওয়ানডেতে এক নম্বর অলরাউন্ডার হওয়ার আগে টেস্টের এক নম্বর অলরাউন্ডারের জায়গাটি হারান সাকিব। ওয়েস্ট ইন্ডিজের জেসন হোল্ডার (৪৩৯ রেটিং) এক নম্বরে আছেন। সেখানে সাকিব আছেন দুই নম্বরে। ৩৯৯ রেটিং নিয়ে আছেন সাকিব। টি২০তে অস্ট্রেলিয়ার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (৩৯০ রেটিং) এক নম্বরে রয়েছেন। সাকিব (৩৩৮ রেটিং) এখানেও আছেন দুই নম্বরে। তবে বিশ্বকাপের আগে যে সুখবর মিলল তা সাকিবের আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। যা দলের জন্যই কাজে দেবে। পিঠের ব্যথায় ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে খেলতে না পারলেও এখন অনুশীলনে ব্যাটিং করছেন সাকিব। সুস্থ হয়ে উঠছেন। বিশ্বকাপের আগে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ রয়েছে। ২৬ ও ২৮ মে যথাক্রমে পাকিস্তান ও ভারতের বিপক্ষে কার্ডিফে প্রস্তুতি ম্যাচ আছে। এই দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে সাকিব খেললেই বোঝা যাবে আর কোন সমস্যা নেই। তখন দল আরও চাঙ্গা হয়ে উঠবে। বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে খেলতে হলে সাকিবের মতো অলরাউন্ডার চায় সবদলই। বাংলাদেশ দলে সেই অলরাউন্ডার আছেন। তিনি আবার বিশ্বকাপের আগেই ওয়ানডে অলরাউন্ডারে বিশ্বসেরা হয়েছেন। এই তকমা নিয়েই বিশ্বকাপ মঞ্চে খেলতে নামবেন।