ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নাটোরের জোর করে আদিবাসীর ধান কেটে নিয়েছে প্রতিপক্ষরা, আটক ২

প্রকাশিত: ০৯:৩১, ২২ মে ২০১৯

নাটোরের জোর করে আদিবাসীর ধান কেটে নিয়েছে প্রতিপক্ষরা, আটক ২

নিজস্ব সংবাদদাতা, নাটোর ॥ নাটোর সদর উপজেলায় বিষ্ণু রানী নামে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর (আদিবাসী) এক সদস্যের লাগানো ধান জোর করে কেটে নিয়েছে প্রতিপক্ষরা। বুধবার ভোরে সদর উপজেলার পিরজীপাড়া মৌজার শংকরভাগ মামুদপাড়া বিলে এই ঘটনা ঘটে। বিষ্ণু রানীর ছেলে ধান কাটতে বাধা দিলে তাকেও প্রাণ নাশসহ দেখে নেওয়ার হুমকি দেয় প্রতিপক্ষরা। এই ঘটনায় ওই ভুক্তভোগীর ছেলে মিঠুন কুমার তেলী ওইদিনই দুপুরে নাটোর সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আব্দুস সামাদ ও ছেলে সেলিমকে আটক করেছে। ভুক্তভোগী ও মামলার অভিযোগসূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালে নাটোর সদর উপজেলার শংকরভাগ আদিবাসী পল্লীর বাসিন্দা শুটকা তেলীর স্ত্রী বিষ্ণু রানী তার নিকটতম প্রতিবেশী মৃত হরিলাল তেলীর ছেলে শ্যামলাল তেলী ও তার ছোট ভাই রতন তেলীর কাছ থেকে পিরজীপাড়া মৌজার শংকরভাগ মামুদপাড়া বিলে ২৩৯৬নং দাগের সাড়ে ৪ শতাংশ ধানী জমি ক্রয় করেন। অন্যদিকে, একই উপজেলার বাসুপাড়া গ্রামের মৃত আখেরের ছেলে ও মামলার বিবাদী আব্দুস সামাদ শংকরভাগ গ্রামের বাবলু মন্ডলের কাছ থেকে একই দাগে ৫৪ শতক জমির মধ্যে ২৫শতক ক্রয় করেন। মিঠুন তেলী দাবি করে বলেন, একই দাগে ৫৪ শতকের মধ্যে তার বাবা ও মায়ের নামে মৃত মতিলাল তেলীর নিজ খতিয়ানভুক্ত মোট সাড়ে ১৩ শতক জমি ক্রয় করা হয়। যার সব রকমের বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। কিন্তু আব্দুস সামাদ ও তার লোকজন প্রয়োজনীয় দলিলপত্র না থাকলেও বুধবার ভোরে অবৈধভাবে জোরপূর্বক শুটকা ও বিষ্ণু রানীর ক্রয়কৃত জমিতে লাগানো ২৯ জাতের ধান কেটে নিয়ে যায়। এসময় মিঠুন তেলী ও তার পরিবারের সদস্যরা ধান কাটতে বাধা দিলে আব্দুস সামাদ নানা ধরনের হুমকি ধামকি দিয়ে তাদেরকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। পরে নিরুপায় হয়ে বিষ্ণু রানীর ছেলে মিঠুন তেলী জমির দখল ফিরে পেতে ও প্রতিপক্ষের প্রাণ নাশের হুমকি ধামকির কারনে বুধবার দুপুরে নাটোর সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আব্দুস সামাদ ও ছেলে সেলিমকে আটক করেছে। মিঠুন কুমার তেলী জানান, এই জমি নিয়ে এর আগেও উভয়ের মধ্যে বিবাদ হলে এলাকার মান্যগণ্য ব্যক্তিরা সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে আমাদের কাছে উক্ত জমি বুঝিয়ে দেয়। তবে আব্দুস সামাদ সালিশের সেই রায় না মানায় বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য আদালতে বর্তমানে একটি মামলা বিচারাধীন আছে। তিনি আরো জানান, আমাদের সমস্ত কাগজপত্র বৈধ এবং মামলায় আমরাই জিতব জেনে আব্দুস সামাদ জোরপূর্বক অবৈধভাবে আমাদের লাগানো ধান কেটে নিয়ে গেছে। এর বিচার চাই। মামলার বিবাদী আব্দুস সামাদ বলেন, আদালতেই দেখা যাবে জমি কার !! এবিষয়ে নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী জালাল উদ্দিন জানান, এ বিষয়ে এখনও অবগত হইনি। তবে অবগত হয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
×