ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

১০ জুন নির্বাচিতদের তালিকা প্রকাশ

কলেজে ভর্তির আবেদন ১৪ লাখ ১৫ হাজার শিক্ষার্থীর

প্রকাশিত: ০৯:০৯, ২৫ মে ২০১৯

 কলেজে ভর্তির আবেদন  ১৪ লাখ ১৫ হাজার  শিক্ষার্থীর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কোন বিড়ম্বনা ছাড়াই শেষ হলো অনলাইন ও এসএমএসে কলেজে ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়া। আবেদন করেছেন ১৪ লাখ ১৫ হাজার ৮২৫ জন কলেজ ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী। এদিকে মাধ্যমিকে উত্তীর্ণদের মধ্যে এবার দুই লাখ ৪২ হাজার ৪২ শিক্ষার্থী একাদশে ভর্তির জন্য প্রথম ধাপে আবেদন করেননি। গত বছরও প্রথম ধাপে আবেদনের বাইরে ছিল প্রায় আড়াই লাখ। তবু সার্বিক পরিস্থিতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে শিক্ষা বোর্ড কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রতিবছরই এভাবে বেশ কিছু শিক্ষার্থী কলেজ পর্যায়ে এসে শিক্ষার সাধারণ ধারায় থাকেন না। তারা হয় কারিগরি ডিপ্লোমা বা অন্যান্য ধারায় চলে যান। কিছু শিক্ষার্থী ঝরে পড়ে। মেয়েদের অনেকের এই সময়ে বিয়ে হয়ে যায়। ফলে তারা সাধারণ কলেজ ভর্তির বাইরে থেকে যান। কোন রকমের বিড়ম্বনা ছাড়াই গত ১২ মে দুপুর ১২টা থেকে দেশব্যাপী একযোগে শুরু হয় নতুন নীতিমালা অনুসারে ভর্তি আবেদন কার্যক্রম। শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুবিধার কথা চিন্তা করে এবার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে প্রথমবারের মতো কলেজগুলোকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। আসন সংখ্যা ও পাসের হারের ভিত্তিতে করা হয়েছে পৃথক তালিকা। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব কমিটির প্রধান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বলেছেন, কলেজগুলোকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে কেবল শিক্ষার্থীদের স্বার্থের কথা চিন্তা করেই। যাতে প্রত্যেক শিক্ষার্থী জানতে পারে কোনটা কোন মানের প্রতিষ্ঠান। এসএসসিতে কেমন ফল হলে কোথায় ভর্তি হওয়া যাবে। এটা করা হচ্ছে শুধু ঢাকা বোর্ডেই। ঢাকা বোর্ডের সচিব অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেছেন, আসলে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ভর্তিতে যে প্রতিযোগিতা হয় তাতে সমস্যাটা হয় ঢাকা বোর্ড বিশেষত ঢাকা শহরেই বেশি। তাই অনেকেভাবে তারা ভাল কলেজে ভর্তি হতে পারেন না। তাই ফল ও সেই মানের কোন কলেজ তা দেখে আবেদন যাতে করতে পারেন সেজন্যই নতুন উদ্যোগ। শিক্ষার্থীরা যাতে এটা শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করেই করা হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীরাই উপকৃত হবে। সে তার নিজের ফল বিবেচনা করে কলেজ নির্বাচন করতে পারছে। শিক্ষার্থীদের মেধা ও প্রাপ্যতা অনুযায়ী কলেজ পছন্দ করতে পারছে। এর মধ্যে শুধু ঢাকা বোর্ডের অধীনস্ত কলেজগুলোর আসন সংখ্যা ও পাসের হারের ভিত্তিতে তিনটি পৃথক তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এদিকে ভর্তি নীতিমালা অনুসারে প্রথম ধাপে আবেদন শেষ হয় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে। এই পর্যায়ে আবেদনকারীদের ফল প্রকাশ করা হবে ১০ জুন। দ্বিতীয় পর্যায়ে আবেদন করা যাবে ১৯ ও ২০ জুন। ২১ জুনই তাদের আবেদনের ফল প্রকাশ করা হবে। তৃতীয় ধাপে আবেদন নেয়া হবে ২৪ জুন। ফল প্রকাশ করা হবে ২৫ জুন। ২৭ থেকে ৩০ জুনের মধ্যে শিক্ষার্থীদের নির্বাচিত কলেজে ভর্তি হতে হবে। অনলাইনে সর্বনিম্ন ৫টি ও সর্বোচ্চ ১০টি কলেজ বা মাদ্রাসায় আবেদন করা যাচ্ছে। এর জন্য নেয়া হচ্ছে ১৫০ টাকা। মোবাইল ফোনে প্রতি এসএমএসে একটি করে কলেজে আবেদন করা যাচ্ছে। এর জন্য মোট ১২০ টাকা লাগবে। এসএমএস ও অনলাইন মিলিয়ে কোন শিক্ষার্থী ১০টির বেশি প্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে পারবে না। কলেজ পছন্দ করতে এবার প্রথম ধাপের আবেদনের ফল প্রকাশ না করা পর্যন্ত আবেদন তালিকায় কলেজের পছন্দক্রম রদ-বদল করতে পারবে শিক্ষার্থীরা। এবার ১৪ লাখ ১৫ হাজার ৮২৫ জন শিক্ষার্থী কলেজে ভর্তি হতে অনলাইন ও এসএমএসের মাধ্যমে আবেদন করেছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক মোঃ হারুন-আর-রশিদ। অন্যদিকে এবার মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় এবার ১৭ লাখ ৪৯ হাজার ১৬৫ শিক্ষার্থী। ফলে মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হয়েও ২ লাখ ৪২ হাজার ৪২ শিক্ষার্থী একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হতে এখন পর্যন্ত আবেদন করেননি। কলেজ পরিদর্শক বলছেন, যারা আবেদন করেননি তাদের অনেকে ঝরে পড়বে, কেউ কেউ দেশের বাইরে পড়তে যাবেন। তবে কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে কিছু শিক্ষার্থী একাদশে ভর্তি হতে আবেদন করবেন। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সাবেক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও সরকারী নাজিমউদ্দিন কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ সৈয়দ সাদিক জাহিদুল ইসলাম বলছিলেন, আসলে প্রতিবছরই অনেক শিক্ষার্থী সাধারণ ধারায় থাকেন না। তারা হয় কারিগরি ডিপ্লোমা বা অন্যান্য ধারায় চলে যান। কিছু শিক্ষার্থী ঝরে পড়ে। মেয়েদের অনেকের এই সময়ে বিয়ে হয়ে যায়। ফলে তারা কলেজে ভর্তির বাইরে থেকে যান। তবে আরও যেহেতু আবেদনের সুযোগ আছে। তাই এখনই বলা যাচ্ছে না কতজন আসলে ভর্তি হচ্ছে না। এখনো সার্বিক অবস্থান সন্তোষজনক। শিক্ষার্থীরা ভালভাবে আবেদন করতে পেরেছেন। এবার কলেজে ভর্তি হতে ১০ লাখ ৫২ হাজার ১৮৪ জন অনলাইনে এবং ৩ লাখ ৭৪ হাজার ২২২ জন এসএমএসের মাধ্যমে আবেদন করেছেন। ১৪ লাখ ১৫ হাজার ৮২৫ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৬২ লাখ ৪৯ হাজার ৮৬টি আবেদন জমা পড়েছে। এরমধ্যে অনলাইনে ৫৮ লাখ ৬২ হাজার ৯৫টি এবং এসএমএসের মাধ্যমে ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৯৫১টি আবেদন।
×