ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের অন্যায়ভাবে ফেরত পাঠানো হয়েছে ॥ ব্রিটিশ আউট অফিস

প্রকাশিত: ০৯:১০, ২৫ মে ২০১৯

  বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের  অন্যায়ভাবে ফেরত  পাঠানো হয়েছে ॥ ব্রিটিশ আউট অফিস

বাংলা ট্রিবিউন ॥ ভিসা সংক্রান্ত বাধ্যতামূলক ইংরেজী ভাষা পরীক্ষায় (টিওইআইসি) প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত বহু বাংলাদেশী শিক্ষার্থীকে অন্যায়ভাবে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের অর্থায়নে পরিচালিত যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল অডিট অফিসের এক তদন্ত প্রতিবেদনে একথা বলা হয়েছে। শুক্রবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতারণার অভিযোগে হাজার হাজার বিদেশী শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিলের কাজে যথেষ্ট মনোযোগ দেয়নি ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র দফতর। সে কারণে ভুল করে অনেক নিরপরাধ শিক্ষার্থীর ভিসাও বাতিল হয়েছে। এসব বিদেশী শিক্ষার্থীর মধ্যে অনেক বাংলাদেশী শিক্ষার্থীও রয়েছে। ২০১৪ সালে বিবিসির এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে ব্রিটিশ কলেজগুলোতে টেস্ট অব ইংলিশ ফর ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিকেশন (টিওইআইসি) পরীক্ষায় প্রতারণার কিছু চিত্র উঠে আসে। এ ঘটনায় তদন্তে নামে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা ৩৩ হাজার ৭২৫টি পরীক্ষার ফল অবৈধ বা অকার্যকর ঘোষণা করে। এছাড়া ২২ হাজার ৬৯৪টি পরীক্ষার ফল প্রশ্নবিদ্ধ বলে সিদ্ধান্ত দেয়। যাদের ফল প্রশ্নবিদ্ধ ছিল তাদের রিভিউ-এর সুযোগ দেয়া হলেও অন্যদেরকে কোর্স বাতিল করতে বলা হয়। এমনকি অনেককে স্বদেশে ফেরতও পাঠানো হয়। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সরব হয়ে ওঠে অভিবাসীদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা ব্রিটিশ সংগঠন মাইগ্রেন্ট ভয়েস। তাদের তৎপরতার জেরে গত মাসে এই ইস্যুতে তদন্ত শুরু করে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল অডিট অফিস। শুক্রবার ন্যাশনাল অডিট অফিসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এটা স্পষ্ট যে ব্যাপক প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু কোন কোন ক্ষেত্রে কিছু ভুল মানুষকে ভুলভাবে দায়ী করা হয়েছে এবং তাদের অন্যায়ভাবে যুক্তরাজ্য থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদনের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের প্রসঙ্গে ন্যাশনাল অডিট অফিসের প্রধান আমিয়াস মোরসে বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যখন ব্যাপকভাবে পদক্ষেপ নেয়া শুরু করে, ইংরেজী ভাষা পরীক্ষায় প্রতারণায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বহিষ্কার ও সংশ্লিষ্ট কলেজগুলোকে বন্ধ করে দেয়া শুরু করে তখন আমরা ভেবেছিলাম প্রতারণায় জড়িত না থাকা ব্যক্তিদের সুরক্ষাকেও তারা একইরকম গুরুত্ব দিয়ে দেখবে। খুব কম ক্ষেত্রেই আমাদের অনুমান ঠিক হয়ে থাকলেও প্রকৃতপক্ষে তা ঘটেনি।’ বিবিসির প্রতিবেদনের পর উইন্ডরাশ স্ক্যান্ডাল নামে পরিচিত এই জালিয়াতির অভিযোগে কমনওয়েলথভুক্ত হাজার হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা ভুলভাবে বাতিল করা হয়। এদের মধ্যে ছিল বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও নেপালের হাজার হাজার শিক্ষার্থী। ন্যাশনাল অডিট কার্যালয় (এনএও)-এর তদন্তকে স্বাগত জানায় ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র দফতর। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ জানান, নতুন করে ইস্যুটি খতিয়ে দেখবেন তারা। কিছু দিনের মধ্যে তার ফল জানানোর কথা রয়েছে। মাইগ্রেন্ট ভয়েস এর দাবি অন্যায়ভাবে যাদের প্রতারণায় অভিযুক্ত করা হয়েছে তাদের পুনরায় পরীক্ষা নেয়া হোক ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হোক। ২০১৯ সালের মার্চে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, টিওইআইসি পরীক্ষা নেয়া ১১ হাজার মানুষের বিরুদ্ধে ব্যাপক জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ার পর তারা ব্রিটেন ছেড়ে চলে গেছে।
×